লন্ডনে ফতোয়া ঐক্য ও যুব নির্দেশনা নিয়ে মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ মহাসচিবের আলোচনা
এই সপ্তাহে লন্ডনের ইসলামিক সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ এর মহাসচিব ড. মোহাম্মদ বিন আবদুল কারিম আল-ইসা যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় ইসলামি নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
আলোচনার মূল বিষয় ছিল চরমপন্থীদের উসকানির মুখেও মুসলিম সম্প্রদায়কে ধৈর্য, সহনশীলতা ও প্রজ্ঞার সঙ্গে পথনির্দেশনা দেওয়া। বক্তারা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:)-এর দয়ার ও ধৈর্যের আদর্শ অনুসরণ করে শান্তভাবে প্রতিক্রিয়া জানানোকে অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেন।
ড. আল-ইসা ফতোয়া প্রদানের ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ ধর্মীয় কর্তৃত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি জানান, ইসলামী ফিকহ কাউন্সিল — যা মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ এর অধীন একটি সুপ্রতিষ্ঠিত শরিয়াহ বোর্ড — শীঘ্রই লন্ডনের এই সেন্টারে একটি বিশেষ ফোরাম আয়োজন করবে, যেখানে মুসলিম সংখ্যালঘুদের জীবনব্যবস্থা সম্পর্কিত ফিকহ (ইসলামী আইনবিদ্যা) নিয়ে আলোচনা হবে।
এই ফোরামে একটি রেফারেন্স কাঠামো তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা প্রয়োজনে হালনাগাদ করা হবে। যুক্তরাজ্যে ইসলামিক শিক্ষামূলক কার্যক্রম ও দাওয়াতি উদ্যোগগুলো ‘মক্কার সনদ’-এর আলোকে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ তা পর্যালোচনা করা হবে, এবং এই সনদের বিষয়বস্তু ইসলামী শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও দেওয়া হবে।
ড. আল-ইসা বিশেষভাবে মুসলিম যুবকদের উগ্র মতাদর্শ থেকে রক্ষার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, পরিবারে সঠিক ভূমিকা, ভারসাম্যপূর্ণ ধর্মীয় শিক্ষা, যোগ্য শিক্ষকের দিকনির্দেশনা এবং খুতবা ও বক্তৃতার মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর কার্যকর ব্যবহারের মাধ্যমে এই ঝুঁকি মোকাবিলা করা সম্ভব।
তিনি যুক্তরাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের সচেতনতা ও অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন এবং বলেন, একটি বহুমাত্রিক সমাজে ইসলামের মূল্যবোধ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তারা ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বৈঠকে প্রশ্নোত্তর ও মতামত বিনিময়ের সময় উপস্থিত অতিথিরা মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ এর বৈশ্বিক উদ্যোগের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন। তারা বর্তমানে ইসলামফোবিয়ার প্রেক্ষাপটে আল-ইসার সফরকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন এবং সমস্যা মোকাবিলায় তার সহনশীল ও দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় ধর্মীয় কর্তৃত্ব ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে সংগঠনের সাফল্য তুলে ধরেন।
তাদের মতে, এটি বহুপ্রতীক্ষিত একটি উদ্যোগ, যা সামাজিক সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ক্ষেত্রে ইসলামী শিক্ষার মূল মূল্যবোধের প্রতিফলন — এবং মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ এর মিশনের প্রতি তাদের আস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।