পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

মিনায় মুসল্লিদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। ৮ জিলহজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও বুধবার রাতেই হাজিরা মিনার তাঁবুতে পৌঁছে যান। হজযাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় সৌদি মুয়ালিমরা আগের রাত থেকেই হজযাত্রীদের তাঁবুর শহর মিনায় নেওয়া শুরু করেন। হজযাত্রীরা বুধবার এশার পর থেকে মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় রওয়ানা হন।
মিনায় যাত্রার মধ্য দিয়ে হজ পালনের সূচনা হয়, যা শেষ হবে ১২ জিলহজ শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে। অন্যান্য দেশের হাজিদের সঙ্গে এবার বাংলাদেশের ৫৬ হাজার হাজিও রওয়ানা হন মিনার পথে। এ সময় গুঞ্জরিত হয় তালবিয়া-‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নালহামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মূলক, লা শারিকা লাক।’
বৈশ্বিক মহামারির কারণে দুই বছর পর এবার বৃহৎ পরিসরে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। করোনার বিধিনিষেধের কড়াকড়ি না থাকায় বেশিরভাগ হাজি মাস্কবিহীন অবস্থায় হজ কার্যক্রমে যোগ দিয়েছেন। মিনায় পৌঁছে হজযাত্রীরা ফজর থেকে শুরু করে এশা অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন নিজ নিজ তাঁবুতে। তবে খায়েফ ও কুয়েতি মসজিদের কাছাকাছি তাঁবু থাকলে মসজিদে গিয়েও নামাজ আদায় করতে পারেন হজযাত্রীরা।
৯ জিলহজ (শুক্রবার) সূর্যোদয়ের পর হজযাত্রীদের আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে যাত্রা করার কথা থাকলেও আজ রাতেই নিয়ে যাবেন মুয়ালিমের দায়িত্বশীলরা। সেখানে আগে পৌঁছে গেলে ফজর এবং জোহর-আসর আদায় করবেন আরাফাতের ময়দানে।
এখানে মসজিদে নামিরা থেকে হজের খুতবা দেবেন খতিব। চলতি বছর আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা দেবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম আল-ঈসা। একইসঙ্গে মসজিদে নামিরাতে নামাজও পড়াবেন তিনি। তবে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের তাঁবু বেশ খানিকটা দূরে থাকায় তাদের পক্ষে মসজিদে নামিরায় যাওয়া সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে নিজ নিজ তাঁবুতেই তারা নামাজ আদায় করে নেন। মূলত ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিনকেই হজের দিন বলা হয়। এ দিনের নাম ইয়াইমুল আরাফা।
ইসলামের বিধান মোতাবেক, ১০ জিলহজ মিনায় প্রত্যাবর্তনের পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, আল্লাহর উদ্দেশে পশু কুরবানি, মাথা মুণ্ডন করা এবং তাওয়াফে জিয়ারত। এরপর ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান করে প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করবেন হাজিরা। সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ি তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।
২০২০ ও ২১ সালের চেয়ে এবারের হজের সমাবেশ অনেক বড়, তবে করোনা পূর্ববর্তী স্বাভাবিক হজের চেয়ে ছোট। সম্পূর্ণ টিকাপ্রাপ্ত ১০ লাখ মুসলিম হজ পালনে মক্কায় সমবেত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮ লাখ ৫০ হাজার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। বাকিরা সৌদি আরবের নাগরিক।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button