বন্ধ হচ্ছে লয়েডস ও হ্যালিফ্যাক্স ব্যাংকের আরো ৪৮ শাখা

আরো অন্তত ৪৮টি শাখা বন্ধ করতে যাচ্ছে লয়েডস ব্যাংকিং গ্রুপ। যদিও ব্যাংকটির এ পদক্ষেপকে জনগণের চেয়ে মুনাফাকে অগ্রাধিকার দেয়ার অন্যতম উদাহরণ হিসেবে সমালোচনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি শ্রমিক ইউনিয়নগুলোরও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে।
এর আগে গত জুলাইয়ে মাল্টিবিলিয়ন পাউন্ড মুনাফা ঘোষণা করে ব্যাংকিং গ্রুপটি। এখন আবার গ্রুপটি লয়েডস ব্যাংকের ৪১ শাখা ও হ্যালিফ্যাক্স ব্যাংকের সাতটি শাখা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইংল্যান্ড ও ওয়ালেসের এসব শাখা বন্ধ করা হবে। বছরের শুরুর দিকে ৫৬টি শাখা বন্ধ করা হয়েছিল। এছাড়া চলতি বছরের নভেম্বর নাগাদ আরো ৪৪টি শাখা বন্ধ করা হবে। সবমিলিয়ে ১৪ মাসের ব্যবধানে বন্ধ হচ্ছে প্রায় ১৫০টি শাখা। আর এর জন্য গ্রাহক সংখ্যা কমে যাওয়াকেই দায়ী করছে ব্যাংকিং গ্রুপটির কর্তৃপক্ষ।
কভিড-১৯ মহামারীর কারণে সৃষ্ট লোকসান কাটিয়ে উঠতে বিশ্বের অনেক বড় ব্যাংকই শাখা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের দাবি, গ্রাহকরা এখন সশরীরে ব্যাংকের কার্যক্রমে অংশ নেয়ার চাইতে অনলাইনে ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সেবা গ্রহণে বেশি আগ্রহী। অনেকেই বলছেন, মহামারীই ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে স্থানান্তর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছে।
লয়েডস ব্যাংকিং গ্রুপের রিটেইল ডিরেক্টর ভিম মারু বলেন, অন্য অনেক ব্যবসার মতো আমরাও লক্ষ করেছি যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুলনামূলক কম মানুষ আমাদের শাখাগুলোতে এসেছেন। আর শাখাগুলোতে গ্রাহকদের সরাসরি উপস্থিতির হার দিনে দিনে কমছে। মূলত ব্যাংকের শাখাগুলোর কাজ হলো গ্রাহকদের নিবিড়ভাবে সেবা দেয়া। কিন্তু গ্রাহকরাই যদি সেখানে না যান, তাহলে পুরো আয়োজনই ব্যর্থ হয়ে যায়।
তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যে অজুহাতেই শাখাগুলো বন্ধ ঘোষণা করুক না কেন, পুরো বিষয়টির সমালোচনা করেছে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। এক বিবৃতিতে ইউনাইট ইউনিয়ন বলছে, উচ্চ মুনাফার এ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এত দিন ধরে যারা শ্রম দিয়ে এসেছেন এবং যাদের জন্য ব্যাংকটি আজ এ পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছে, তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হচ্ছে। ব্যাংকের শাখা বন্ধের এ সিদ্ধান্ত কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শ্যারন গ্রাহাম বলেন, এ খাতের উচিত তাদের সামাজিক দায়িত্বগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা। পাশাপাশি গ্রাহক ও কর্মীদের প্রতি দায়বদ্ধতাগুলোও উপেক্ষা করা যাবে না। এসব শাখা বন্ধের মাধ্যমে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বহু কর্মীকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। পাশাপাশি যে গ্রাহকরা সশরীরে ব্যাংকে গিয়ে সেবা নিতে পছন্দ করেন, তাদেরও অনলাইন বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কাজ করতে বাধ্য করছে। আর এজন্য তারা কেবল নিজেদের মুনাফার বিষয়টিই দেখছে।
গত জুলাইয়ে ব্যাংকিং গ্রুপটির দেয়া ঘোষণায় দেখা যায়, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকের মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ কোটি পাউন্ডে। সে সময় তারা জানিয়েছিল, এখন থেকে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে লভ্যাংশ প্রদান প্রক্রিয়া আবার চালু করা হবে।
লয়েডস ব্যাংকিং গ্রুপের নতুন এসব পদক্ষেপের ফলে অন্তত ১৭৮ জনের চাকরি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেসব এলাকা থেকে ব্যাংকটির শাখা সরিয়ে ফেলা হবে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সাউথ কেনসিংটন ও মুসওয়েল হিলের মতো এলাকা। ফলে এসব অঞ্চলের গ্রাহকদের কাজ চালাতে হবে মোবাইল বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button