যুক্তরাজ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীরা ফি পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন

বিদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছেন। ‘ইউনিভার্সিটিজ ইউ’কে অনুসারে ২০১৯-২০ বর্ষে যুক্তরাজ্যে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৫ জন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ছিলো। ২১ বছর বয়সী জনৈক ভারতীয় শিক্ষার্থী মানি বলেছেন, সে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশংসা করে এবং তার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে চায়, যিনি লন্ডনে পড়াশোনা করেন। তবে এখন তার সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
সে আরো বলে, যখন আমার কাছে অর্থ ছিলো, তখন সবকিছুই ছিলো চমৎকার। কিন্তু যখন আমার সাহায্যের প্রয়োজন দেখা দেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় আর সাহায্য করছে না, তখন আমার পছন্দ নিয়ে আমি প্রশ্নের সম্মুখীন।
প্রশ্ন জাগছে, আমার পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্যে আসা কি ঠিক ছিলো? ২০২০ সালের মার্চে যখন মহামারি শুরু হয় তখন মানি একটি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছরের কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষে। তার পছন্দ ছিলো যুক্তরাজ্যে অবস্থান করা। কিন্তু যেহেতু তার কোর্স বিলম্বিত হয়েছিলো, তাই সাময়িকভাবে দেশে পরিবারের কাছে চলে আসার পন্থাই বেছে নেয় সে। এতে তার ব্যয়বৃদ্ধি ঘটে।
ভারতে থাকাবস্থায় মানির ৩ বছর কোর্সের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় এবং একটি নতুন ভিসার অনুমোদনের জন্য ব্যাংকে তার ৪০ হাজার পাউন্ড থাকার প্রয়োজন দেখা দেয়। কিন্তু এই অর্থের জন্য তাকে হিমশিম খেতে হয়।
মানি তার বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ করে তাকে সাহায্য করতে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, তারা আর্থিক ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবে না বরং এই অর্থ যোগাড় না হওয়া পর্যন্ত তারা তাকে বিলম্বে কোর্স করার সুযোগ দেয়।
মানি বলেন, আমি আসলেই মর্মাহত হই। আমি আরেকটি বছর বিলম্ব করতে এবং চাকুরী পেতে বিলম্ব হোক তা চাইনি। এ অবস্থায় আমার পরিবারের পক্ষে আমাদের বাড়ি বন্ধক দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।
কেনিয়া থেকে আসা গিয়ান জানায়, সে সম্প্রতি ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে তার আন্ডার গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করেছে। এখন সে এমএ ডিগ্রী নিতে ফিরে যেতে চাইছে। কিন্তু ফিরে যাওয়া সহজ নয়।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিদ্যমান সমস্যা সম্পর্কে সচেতন তাদের সহায়তা করতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পিসিআর টেস্ট ও কোয়ারেন্টাইন ফী কাভারের সুযোগ দিচ্ছে।
এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কারণে যুক্তরাজ্যের প্রতিটি এলাকা আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হচ্ছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিকট থেকে গড়ে পাচ্ছে ৩৯০ পাউন্ড। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সুবাদে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছে ২.৮ বিলিয়ন পাউন্ড।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button