করোনায় মারা গেলেন সিলেটের এমপি মাহমুদ উস সামাদ

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২ টা ৪০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিলো ৬৫ বছর। তিনি স্ত্রী ও ১ ছেলে রেখে গেছেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এক মাস আগে তিনি করোনার টিকাও নিয়েছিলেন। রোববার সিলেট থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে বিমানে অসুস্থ অনুভব করায় সেখান থেকে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সোমবার সকালে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। বিকালে পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিলো। সেখানেই তিনি আজ মারা যান।
মাহমুদ উস সামাদের বড় ভাই আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী ফেসবুকে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। পরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এই সংসদ সদস্য ১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গনে করোনার টিকা নেন। এরপর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সিলেট-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হন তিনি।
এদিকে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস এমপি’র মৃত্যুর সংবাদ তার নির্বাচনী এলাকা ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ ও দক্ষিন সুরমায় পৌছলে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। এলাকায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। শোকাহত নেতাকর্মীরা মরহুমের বাড়ীতে ভীড় করেন। এ সময় অনেকে তাদের প্রিয় নেতাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ নিয়ে সিলেট-৩ আসন গঠিত। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী বিগত তিন জাতীয় নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয়ী হন। তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। গত (২০১৮ সালের) নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫৮৭ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী পান ৮৩ হাজার ২৮৮ ভোট।
এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে মাহমুদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ৯৭ হাজার ৫৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী ৫৪ হাজার ৯৫৫ ভোট পেয়েছিলেন। এ ছাড়া ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন।
টানা তৃতীয়বার জয়ের পর মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি মানুষের কাছে চিরঋণী ও চিরকৃতজ্ঞ। কারণ তাঁরা টানা তিন বার আমার মনোনয়ন আনতেও সাহায্য করেছেন; নির্বাচিত করতেও সাহায্য করেছেন। আমি তাঁদের প্রত্যাশা বিগত দুটি মেয়াদে মোটামুটিভাবে সম্পন্ন করেছি। আর যেসব কাজ বাকি আছে, সেসব কাজ এই পাঁচ বছরে শেষ করে ফেলব। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ এবং সন্তুষ্টির জন্যই আমি এলাকাবাসীর পরামর্শে সব সময় দায়িত্ব পালন করে যাব।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button