ব্রিটেনের বরেণ্য সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক আর নেই

ব্রিটেনের খ্যাতনামা লেখক, সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক আর নেই। আজ সোমবার (২ নভেম্বর) ৭৪ বছর বয়সে বরেণ্য এই সাংবাদিক রবার্ট ফিস্কের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রবার্ট ফিস্কের কর্মস্থল যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতা হিসেবে তিনি কর্মরত ছিলেন।
আইরিশ টাইমস জানিয়েছে, শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাকে আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের সেইন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার স্ট্রোক করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রবার্ট ফিস্কের বয়স যখন ১২ তখনই তিনি সাংবাদিকতা এবং লেখালেখিকে পেশা হিসেবে নেওয়ার ব্যাপারে মনস্থির করেন।
কর্মজীবনের শুরুতে সানডে এক্সপ্রেসের ডায়েরি কলাম লিখতেন ফিস্ক। পরবর্তীতে তিনি যোগ দেন দ্য টাইমসে। ১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত টাইমসের বেলফাস্ট প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি ওই পত্রিকার মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতা হিসেবে কাজ শুরু করেন।
আরও পরে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন অভিযানের তথ্য সংগ্রহ এবং নিরপেক্ষতার সঙ্গে তা প্রকাশের জন্য এই ব্রিটিশ সাংবাদিক বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছিলেন।
পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল এবং পশ্চিমা পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রকাশ্য সমালোচনা করায় তাকে নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। বলকান, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায় ব্রিটেনভিত্তিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের হয়ে পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন তিনি।
২০০৫ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছিল, ব্রিটেনের বৈদেশিক প্রতিবেদকদের মধ্যে রবার্ট ফিস্কই সম্ভবত ‘সবচেয়ে বিখ্যাত’।
১৯৪৬ সালে দক্ষিণপূর্ব ইংল্যান্ডের কেন্ট কাউন্টির মেইডস্টোন শহরে জন্মগ্রহণ করেন ফিস্ক। পরে তিনি আয়ারল্যান্ডের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে ডাবলিনের কাছে ডলকিতে বসবাস শুরু করেন।
ফিস্কের মৃত্যুতে ‘গভীর শোক’ প্রকাশ করেছেন আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মাইকেল ডি হিগেন্স।
সানডে এক্সপ্রেসের সাংবাদিক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ফিস্ক। এরপর টাইমস সংবাদপত্রে যোগ দেন। এই পত্রিকার হয়ে উত্তর আয়ারল্যান্ডের অস্থিরতা সংক্রান্ত খবর সংগ্রহের জন্য ১৯৭২ সালে তিনি বেলফাস্টে চলে যান।
পরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থান করে সেখানকার গৃহযুদ্ধের খবর সংগ্রহের কাজ করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে সংঘটিত ইরানের ইসলামি বিপ্লব, আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের যুদ্ধ এবং ইরাক-ইরান যুদ্ধ নিয়েও সাংবাদিকতা করেছেন।
টাইমসের মালিক রুপার্ট মারডকের সঙ্গে বিতর্কের জেরে ১৯৮৯ সালে এখান থেকে পদত্যাগ করেন। ওই বছরই ইন্ডিপেন্ডেন্টে যোগ দেন, শেষ পর্যন্ত এখানেই ছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button