এনএইচএস’র সেবা পেতে অভিবাসীদের ৩৭ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হচ্ছে

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যান্সার হৃদরোগ কিংবা কিডনী বিকল হয়ে যাওয়ার মতো অসুস্থতা সত্বেও মাইগ্র্যান্ট অর্থাৎ অভিবাসীরা যথাসময়ে এনএইচএস-এর চিকিৎসা সেবা পেতে ব্যর্থ হচ্ছে। দেখা গেছে, গড়ে ৩৭ সপ্তাহ তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে চিকিৎসা পাবার জন্য।
প্রতি ৩জনের মধ্যে ১জনের অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে। অনেকে এর চেয়ে বেশী অপেক্ষা করতে হচ্ছে। একটি ঘটনায় দেখা গেছে, মারাত্মক হৃদরোগে আক্রান্ত জনৈক মহিলা ৪ বছরেও চিকিৎসা লাভে সক্ষম হননি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শরণার্থী, এসাইলাম প্রার্থী ও অন্যান্য লোকজন, যাদেরকে ইংল্যান্ডের এনএইচএস সেবা দিতে অস্বীকার করছে। প্রায়ই নীতিমালা ভেঙ্গে তারা তা করছে। কারণ এনএইচএস তাদেরকে যুক্তরাজ্যের স্বাভাবিক নিয়মের বাসিন্দা বলে মনে করে না। অভিবাসনের ব্যাপারে ওয়েস্ট মিনিস্টার সরকারের বৈরী পরিবেশের কারণে তারা এমন মনোভাব পোষণ করে।

দাতব্য সংস্থা ‘ডক্টরস অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ অনুসারে, সরকারের জরুরী কিংবা অবিলম্বে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা বিধান অনুযায়ী অত্যন্ত অসুস্থ অভিবাসীদের ক্ষেত্রে গড় বিলম্বের চেয়ে ঠিক এক সপ্তাহ কম বিলম্ব হওয়ার কথা। কিন্তু তাদের গুরুতর অবস্থা সত্বেও, তাদেরকে গড়ে ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। রোগ নির্ণয়ের পর চিকিৎসা সেবা পেতে তাদের গড়ে ৩৬ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। একটি জরুরী কেসের ক্ষেত্রে আড়াই বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাট এবং ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, দ্য ফ্যাকাল্টি অব পাবলিক হেলথ এবং রয়েল কলেজ অব ইমার্জেন্সী মেডিসিনসহ প্রধান স্বাস্থ্য সংস্থাসমূহ লোকজনকে প্রয়োজনীয় জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা প্রদান প্রত্যাখ্যান করায় সরকারকে অভিযুক্ত করে সোচ্চার হয়েছেন। তারা বলেন, এটা আশংকাজনক ও বিব্রতকর যে, এই রিপোর্টে ফ্রী এনএইচএস সেবা পাবার অধিকারী লোকজনসহ এসাইলাম প্রার্থীরা জরুরী স্বাস্থ্যসেবা পেতে বিলম্ব ও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অডিটে এই মর্মে আলোকপাত করা হয়েছে যে, গাম্বিয়া থেকে যুক্তরাজ্যে আগত জনৈক এন্টি-এফজিএম ক্যাম্পেইনার সালুম ছিলেন একজন অসহায় গৃহহীন মানুষ। অর্থ পরিশোধ না করায় তার মস্তিষ্কের টিউমার ও ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য কেমোথেরাপী দেয়নি রয়াল ডার্বি হসপিটাল। অজ্ঞান হয়ে পড়ার পূর্বে এর ব্যয় বাবত তাকে ৮৩৯৭ পাউন্ড চার্জ করা হয়। সালুম নিজদেশে রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়ে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে আসেন। তিনি ২০১৯ সালের এপ্রিলে মারা যান। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ইউনিভার্সিটি হসপিটালস্ অব ডার্বি এবং বার্টন এনএইএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এর জনৈক মুখপাত্র বলেন, তারা গোপনীয়তা রক্ষার্থে কোন রোগীর সেবা সম্পর্কে মন্তব্য করতে অপারগ।
ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ এন্ড সোশ্যাল কেয়ার-এর জনৈক মুখপাত্র বলেন, জরুরী চিকিৎসা কখনো স্থগিত হওয়া উচিত নয়। বিদেশ থেকে আগত লোকজনসহ সকল রোগীর চিকিৎসা ফ্রী থাকা উচিত। তিনি আরো বলেন, যুক্তরাজ্যে অনেক অভিবাসী ফ্রী এনএইচএস সেবা পাবার অধিকারী, কারণ তারা সাধারনভাবে এখানকার বাসিন্দা কিংবা চার্জ থেকে মুক্ত।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button