কাজ না থাকায় চরম অর্থকষ্টে ব্রিটেনের অভাবী শিক্ষার্থীরা

বৈশ্বিক করোনা মহামারিতে লকডাউনের কারণে কাজ হারিয়ে চরম বিপদে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের অনেক শিক্ষার্থী। পড়াশোনার খরচ এবং ঘরভাড়া পরিশোধ করার জন্য নিজেদের কাপড়চোপড় ও শখের জিনিসপত্র বিক্রি করে দিচ্ছেন তারা। দেশটির ওয়েলসের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ছাত্রদের এরকম কার্যকর অবস্থার বর্ণনা দিয়েছে।

১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থী রোয়ান ম্যাডক জানিয়েছেন, তিনি এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় অক্ষম হয়ে পড়েছেন। কার্ডিফে তার নতুন ভাড়া করা বাড়ির সামনের বাগানে দাঁড়িয়ে তিনি জানান, তার মনে হয়, তিনি আর এখানে থাকতে পারবেন না। কারণ বাড়ির ভাড়া দিতে পারছেন না তিনি। কার্ডিফে এবং তার নিজের এলাকা সুইন্ডনে প্রায় ৬০টি প্রতিষ্ঠানে কাজের আবেদন জানিয়েও কোনো সাড়া পাননি তিনি। সহায়তা কিংবা স্টুডেন্ট লোনের চেষ্টাও করেছেন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। কিন্তু কারো কাছ থেকে কোন জবাব পাননি বলেও জানান রোয়ান।
তিনি বলেন, আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি। আমি আর এটা নিতে পারছি না। বাবা-মা নিজেরা কষ্টে আছে, আমি তাদের কাছে পড়াশোনার খরচ চাইতে পারছি না।
অভাবী ছাত্রদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা কার্যক্রম জানিয়েছে, গত এপ্রিল থেকে তারা এসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সহায়তার আবেদন পাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, করোনা মহামারিতে তাদের অভিভাবকরা কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে, ফলে তাদের পড়াশোনার খরচ বহন করা তাদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য ও ক্রিয়েটিভ রাইটিং কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রোয়ান বলেন, আমি এটা কখনো ভাবিনি যে, আমাকে আমার নিজের কাপড়-চোপড় ও শখের জিনিসপত্র বিক্রি করে দিতে হবে। এটা আমাদের জন্য অনেক কঠিন সময়।
সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, সহায়তা তহবিলে আবেদনের গড় বেড়েছে ১৯০ ভাগ। কার্ডিফ মেট্রোপলিটন জানিয়েছে, তাদের কাছে আবেদনের হার বেড়েছে ১২৫ ভাগ।
এনইউএস-এর প্রেসিডেন্ট বেকি রিকিটস বলেন, এখন অনেক শিক্ষার্থী বুঝতে পারছে না তারা কী করবে। তারা বাড়িভাড়া, ক্যান্টিনের খরচ, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া আসার খরচও কুলিয়ে উঠতে পারছে না।
সাম্প্রতিক একটি এনএসএস সমীক্ষায় দেখা গেছে, ওয়েলসের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী, যারা পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করতেন, তারা তাদের কাজ হরিয়েছেন। -বিবিসি

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button