‘ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে অনেক যুদ্ধ করতে হবে’

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড -এর চীফ ইকোনোমিস্ট এন্ডি হলডেইন এই মর্মে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন যে, ব্যাংকটি ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। যখন একটি মহামারির পুনরুজ্জীবেন সাহসী পদক্ষেপ দাবি করে তখন ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এবং ট্রেজারির পরিসংখ্যানগুলো একটি পীড়াদায়ক সতর্কতার প্রবণতা প্রদর্শন করছে।
ঋষি সুনাক চলতি সপ্তাহে পার্লামেন্টে বক্তব্য প্রদান কালে বীরোচিতভাবে বলবেন কীভাবে ব্রিটেনের অর্থনীতি কোভিড-১৯ এর প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে পারে। পর্দার অন্তরালে কর্মকর্তারা এজন্য উদ্বিগ্ন যে, যুক্তরাজ্য দুর্বল এবং তাকে আগামী বছরগুলোতে ব্যায়ের ব্যাপারে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড থেকে গত এক পক্ষকালের মধ্যে দু’টি বিবৃতি পাওয়া গেছে। ২২শে জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এন্ড্রু বেইলী এই মর্মে সতর্ক করে দেন যে, মার্চ মাসে ব্রিটেন প্রায় ডুবতে বসেছিলো আর্থিক দিক দিয়ে। এছাড়া ব্রিটেনের ঋণের বিশাল অংক সম্পর্কেও সতর্ক করেন। ব্যাংকের চীফ ইকোনোমিস্ট এন্ডি হলডেইন তার বক্তব্যে ১২ বার মুদ্রাস্ফীতির কথা উল্লেখ করেন, যদিও ব্রিটেন গত ১০ বছর ব্যাপী খুব সামান্যই মুদ্রাস্ফীতির মোকাবেলা করেছে।
উন্নত বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় আগামী ১০ বছরেও এর চেয়ে বেশী মুদ্রাস্ফীতি দেখার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। যুদ্ধ হচ্ছে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, ব্যবসায় ব্যর্থতা এবং মুদ্রার পরিমাণ হ্রাসের বিরুদ্ধে।এটা মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে নয়, যা হলডেইনের চিরাচরিত ডাউন-টু-আর্থ অর্থাৎ ভূতলগামী অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশের একটি ফিগমেন্ট বা কল্পনা।
এটা যেনো এমনি ব্যাপার যে, তাদের চিন্তাভাবনা গত এক দশকে খুব সামান্যই পরিবর্তন হয়েছে এবং যুক্তরাজ্য ২০০৮ সালে যে ভুলটি করেছিলো আবার পুনরাবৃত্তি করে বসতে পারে। বিশেষভাবে ২০১০ সালে যখন ব্যয়-বিরোধী জর্জ ওসবর্ন ট্রেজারির শাসনভার নিয়েছিলেন এবং কৃচ্ছ্রতা সমর্থক মারভিন কিংয়ের আধিপত্যে ছিলো ব্যাংকটি।
ওসবর্নের কৃচ্ছ্রতা কর্মসূচী সমর্থনে তার কাছে কখনো প্রমাণের একটি খন্ডাংশ ছিলোনা আর্থিক গৌরবের একটি পন্থা হিসেবে এবং তিনি কখনো একটি প্রতিজ্ঞা হিসেবে ঋণের উচ্ছেদ কিংবা সম্পাদিত একটি টেকসই পুনরুজ্জীবন ছাড়াই তার মেয়াদ পূর্ণ করেননি।
এখন কৃচ্ছ্রতার কোন বিষয় উল্লেখিত হচ্ছে না। এমনকি ২০০৮ সালেও সেটা হয়নি। ২০১০ সালে সেটা ছিলো একটি ভিন্ন বিষয়। সেটা ছিলো যখন মারভিন কিং কার্যকরভাবে কোয়ালিশন সরকারের কৃচ্ছ্রতা কর্মসূচীকে সমর্থন করেন এবং তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও প্যারিস ভিত্তিক ধনী দেশগুলোর থিংকট্যাংক ওইসিডির কথা উল্লেখ করতে পারতেন আগ্রহী সমর্থক হিসেবে।
তারা বলেন, বালক ও বালিকারা, ঋণসমূহ এখন অনেক বেশী। এগুলো পরিশোধের সময় এখন শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মুক্তবাজারের থিংক ট্যাংকসহ আইএমএফ, ওইসিডি এবং অন্য সকল সংবেদনশীল অর্থনীতিবিদের নিকট থেকে এই বার্তা এসেছে যে, মহামারি থেকে আমাদের উত্তরণে সরকারী ব্যয় আবশ্যক এবং এর মানে হচ্ছে উচ্চতর ঋণ। বিশ্ব মুদ্রীস্ফীতি কখনো তাদের লিপস্ বা ঠোঁট অতিক্রম করে না।
এটা সে ধরনের চিন্তাভাবনাহীনতা ও অপরিকল্পিত ব্যয়ের প্রতি বরিস জনসনের অনুমোদন নয়। এসব দিনে আইএমএফ ও ওইসিডি অতিরিক্ত বিনিয়োগ অনুমোদন করছে এবং হ্যাঁ, উচ্চতর ঋণও একটি টেকসই ভবিষ্যত সৃষ্টির জন্য যা অবাঞ্চিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াতে পারে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button