করোনায় দূষণ কমছে পৃথিবীর

করোনাভাইরাস মহামারী হিসেবে আবির্ভ‚ত হলেও বিশ্বের উপকারও হচ্ছে। কমেছে দূষণ, হ্রাস পেয়েছে পৃথিবীর কার্বন নিঃসরণ মাত্রা। করোনার প্রাদুর্ভাবের পর দেশে দেশে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। বন্ধ হয়েছে কলকারখানা, স্কুল-কলেজ। বাতিল হয়েছে লাখ লাখ ফ্লাইট।
জীবাশ্ম জ্বালানি শিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। এতে কার্বন নির্গমন কমার মাত্রা দশকের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করছে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো। আর পরিবেশকর্মীরা বলছেন, করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের রাজনৈতিক নেতা ও কর্পোরেট নেতাদের জরুরি পদক্ষেপ এটাই প্রমাণ করে যে জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে উদ্যোগ গ্রহণে তাদের ক্ষমতা ও সামর্থ্য- দুটিই রয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়ে তাদের গাফিলতিই বিশ্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন রুখতেও বিশ্বজুড়ে এমন কঠোর ও জরুরি পদক্ষেপ চান পরিবেশকর্মীরা। সম্প্রতি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে চীনের বায়ুদূষণ কমে গেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, চীনের অত্যাধিক ভাইরাস সংক্রমিত এলাকাগুলোয় নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ কমে গেছে আশ্চর্যজনক হারে। সাধারণত কারখানা ও গাড়ির ধোঁয়া থেকেই বিষাক্ত এ গ্যাস নির্গত হয়। করোনা সংক্রমণের কারণে চীনে সিংহভাগ কলকারখানা বন্ধ, বেশকিছু শহরে গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ায় এর সুপ্রভাব পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশে। মহাকাশ সংস্থা নাসা ২০১৯ সালের প্রথম দুই মাসের এবং চলতি বছরের প্রথম দুই মাসের বায়ুদূষণের একটি স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেছে। সেখানে চীনে বায়ুদূষণের বড় পার্থক্য দেখা গেছে।
নাসার গড্ডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের বায়ুদূষণবিষয়ক গবেষক ফেই লিউ বলেন, ‘এটাই প্রথমবার কোনো বিশেষ ঘটনায় একটি বিশাল অঞ্চলে নাটকীয়ভাবে এত বড় পরিবর্তন দেখলাম। ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার সময়েও বায়দূষণের হার কমে গিয়েছিল। তবে সেবারের ঘটনাটি ছিল কিছুটা ধীর প্রক্রিয়ায়। এবার দূষণ হ্রাসের হার অনেক বেশি এবং দীর্ঘস্থায়ী।’ বিশ্বের শীর্ষ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীনে গত দুই মাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা ২৫ শতাংশ কমে গেছে বলে এক গবেষণায় জানিয়েছে ব্রিটিশভিত্তিক থিংকট্যাংক কার্বন ব্রিফ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০০৮-০৯ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর প্রথমবারের মতো কার্বন নির্গমন হ্রাসের মাত্রা রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। ফলে এটি আবহাওয়া পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কার্যকরী পদক্ষেপগুলোই পরিবেশের জন্য এ উপহার বয়ে নিয়ে আসছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button