সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওলমার্টের অভিযোগ
প্রতিদিন গাজা ও পশ্চিম তীরে যুদ্ধাপরাধ করছে ইসরায়েল
ইসরায়েল প্রতিদিন গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট। তিনি ইসরায়েলের বর্তমান সরকারকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যহীন যুদ্ধ’ চালানোর জন্য দায়ী করেছেন, যা নিরীহ ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জীবনহানির পাশাপাশি ইসরায়েলি সেনাদের মৃত্যুও ডেকে আনছে।
ইসরায়েলের পাবলিক সম্প্রচার সংস্থা কানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওলমার্ট বলেন, “যারা গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়, তারা গণহত্যার ডাক দেয়।” তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধাপরাধ শুধু গাজায় নয়, পশ্চিম তীরেও প্রতিদিন সংঘটিত হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসব অপরাধের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, বরং চোখ বন্ধ করে আছে।”
ওলমার্ট ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “এই যুদ্ধ কোনো বন্দিকে মুক্ত করবে না, বরং আরও ইসরায়েলি সেনার মৃত্যু ঘটাবে।”
তিনি আরও জানান, ইসরায়েলের কারাগারে বর্তমানে ১০,১০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছেন, যারা নির্যাতন, অনাহার ও চিকিৎসা অবহেলার শিকার হচ্ছেন।
ওলমার্টের এই মন্তব্য ইসরায়েলের রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সা’আর ও বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর গোলান ওলমার্টের সমালোচনা করেছেন এবং তার বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে অভিহিত করেছেন।
এদিকে, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে মৃতের সংখ্যা ৫৩,০০০ ছাড়িয়েছে, যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ও নিন্দা বাড়ছে।
ওলমার্টের বক্তব্য ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বিরল হলেও, এটি দেশটির সামরিক নীতির বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।