ইইউ’র কাছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিকল্প প্রস্তাব

চলমান ব্রেক্সিট সংকট নিরসনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে নতুন করে আলোচনা করতে আগ্রহী ব্রিটেনের সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। যার অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ব্রিটিশ মন্ত্রণালয় থেকে ইইউ বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হলেও এখনো এর কোনো জবাব আসেনি বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী জনসন এরই মধ্যে জার্মানি ও ফরাসি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেরেসা মের স্থলাভিষিক্ত হয়ার পর থেকে বরিস ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বিচ্ছেদ চুক্তির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। তার প্রধান আপত্তি মূলত আয়ারল্যান্ড সীমান্তের তথাকথিত ‘ব্যাকস্টপ’ ব্যবস্থা নিয়ে। যে কারণে এতদিন তিনি ইইউ’র সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি দরকষাকষির পথে না হেঁটে একটি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট করার হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

ফলে ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি আদৌ কোনো বোঝাপড়া চান কিনা, মূলত তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল সর্বত্র। তবে এবার বরিস সরাসরি তার দাবি জানিয়ে ইইউ’র উদ্দেশ্যে চিঠি লিখে বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন।

সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানায়, ইইউ দেশগুলোর সরকার প্রধানদের পরিষদের সভাপতি ডোনাল্ড টুস্কের বরাবর লেখা চিঠিতে বরিস জনসন ব্রেক্সিট চুক্তির মধ্যে ‘ব্যাকস্টপ’ ইস্যু নিয়ে তার সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমার পূর্বসূরি টেরিজা মে এই চুক্তি পুরোপুরি মেনে নিলেও আমি ‘ব্যাকস্টপ’ সংক্রান্ত বোঝাপড়া বাতিল করতে চাই।’

যদিও চিঠিতে এর বিকল্প হিসেবে তিনি বেশকিছু পালটা প্রস্তাবও রেখেছেন। তাছাড়া এই বিচ্ছেদ চুক্তির মধ্যে ইস্যুটি বাতিলের মাধ্যমে ইইউ’র সঙ্গে ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক স্থির করতে নতুন সমঝোতার আওতায় আয়ারল্যান্ড সীমান্ত নিয়ে চূড়ান্ত বোঝাপড়ার ডাক দিয়েছেন তিনি।

এ দিকে নিজের এই অবস্থান তুলে ধরতে আগামী বুধবার (২১ আগস্ট) বার্লিনে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে বরিস জনসনের বৈঠক করার কথা রয়েছে। এর পরদিন বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) প্যারিসে তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোর সঙ্গে মিলিত হবেন। যার মাধ্যমে আগামী ৩১শে অক্টোবর ব্রেক্সিটের পূর্ব নির্ধারিত সময়সীমার আগে আলোচনার মাধ্যমে নতুন বিচ্ছেদ চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ইইউ নেতাদের উপর চাপ প্রয়োগ করতে চান তিনি।

চিঠিতে জনসন বলেছেন, ‘একটি পরিপূর্ণ চুক্তির মাধ্যমে ইইউ ত্যাগ করতে আমি অঙ্গীকারবদ্ধ। যে কারণে আমার সরকার সেই লক্ষ্যেই যাবতীয় উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে।’

অপর দিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এই কূটনৈতিক উদ্যোগের প্রসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। যদিও ইইউ এতদিন বলে আসছিল, ব্রিটেনের সঙ্গে বিচ্ছেদ চুক্তির ক্ষেত্রে এখন আর কোনো রদবদল সম্ভব নয়। তবে দেশটির সঙ্গে ইইউ’র ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা নিয়ে আগামীতে আরও আলোচনার অবকাশ আছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এর আগেই উভয় পক্ষকেই বিচ্ছেদ চুক্তি অনুমোদন করতে হবে। কেননা ব্রিটেন সীমান্ত সংলগ্ন উত্তর আয়ারল্যান্ডের স্থলভাগের সংকট এড়াতে ও ইইউ’র অভ্যন্তরীণ বাজার অটুট রাখতে ‘ব্যাকস্টপ’ ব্যবস্থা মেনে নেওয়া ছাড়া ব্রিটেনের কোনো পথ নেই।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button