ব্রিটিশ সরকারের তীব্র সমালোচনায় করবিন

ব্রিটিশ সরকার একদিকে ইরানের পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন জানানোর দাবি করছে এবং অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরান-বিদ্বেষী অভিযোগগুলোর পুনরাবৃত্তি করছে। ব্রিটিশ সরকারের এই দ্বৈত আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন।

বৃহস্পতিবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের ইরান সফরের একই সময়ে ওমান সাগরে দু’টি বিদেশি তেল ট্যাংকারে রহস্যজনক হামলা হয়। ওই হামলার জন্য কোনো প্রমাণ উপস্থাপন ছাড়াই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে দায়ী করেন। আর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট পরদিন শুক্রবার ট্রাম্পকে অনুসরণ করে এবং নিজস্ব কোনো বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়াই ওমান সাগরের হামলার দায় ইরানের ওপর চাপিয়ে দেন। তিনি আমেরিকার লেজুড়বৃত্তি করে বলেন, ওয়াশিংটনের মূল্যায়ন বিশ্বাস না করার কোনো কারণ নেই। কারণ তারা আমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

হান্টের এই অবস্থান গ্রহণের তীব্র সমালোচনা করে জেরেমি করবিন এক টুইটার বার্তায় লিখেছেন, মার্কিন সরকার ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে যে সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে তা উসকে দেয়া লন্ডনের উচিত নয়। তিনি আরো লিখেছেন, দলিল-প্রমাণ ছাড়া ব্রিটিশ সরকারের এ ধরনের বাগাড়ম্বর যুদ্ধের আশঙ্কাই কেবল বাড়িয়ে দেবে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এ প্রশ্ন তুলেছেন যে, লন্ডনে বসে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা কীভাবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হলেন যে, ওমান সাগরের ঘটনায় ইরান জড়িত? শুধুমাত্র আন্দাজ-অনুমান কি একটি দেশকে এভাবে দায়ী করার জন্য যথেষ্ট? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছেন বলেই কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়া ওয়াশিংটনের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করতে হবে এমন কোনো কথা আছে কি?

আমেরিকা ও ব্রিটেন এমন সময় ইরানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করল যখন রাশিয়া ও জার্মানির পাশাপাশি নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা বলেছেন, ওমান সাগরের তেল ট্যাংকারে ইরানের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ নেই।

এদিকে ইরানও কঠোর ভাষায় এ হামলায় নিজের জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ এ হামলাকে ‘অত্যন্ত রহস্যজনক’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, ইরান কূটনৈতিক উপায়ে উত্তেজনা প্রশমনের যে চেষ্টা করছে তা বানচাল করে দেয়ার জন্য ওয়াশিংটন এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করছে।

ব্রিটিশ লেবার পার্টির নেতা করবিনের বক্তব্যের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনার উৎস হিসেবে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button