দুইদিনে গ্রেপ্তার ২৯০

লন্ডনে পরিবেশবাদীদের বিক্ষোভ

লন্ডনের অক্সফোর্ড সার্কাস ও মার্বেল আর্চের মতো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি গোলচত্বর দখল করে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করছে পরিবেশবাদীরা। সড়ক যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটানোয় এ প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে দুইদিনে ২৯০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে লন্ডন পুলিশ। এক্সটিঙ্কশন রেবেলিয়ন নামে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি সংগঠনের নেতৃত্বে ওই প্রতিবাদকারীরা মঙ্গলবার মধ্য লন্ডনের কিছু কিছু অংশ পুরোপুরি স্থবির করে দিয়েছিল।

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে উচ্চকণ্ঠ এ সংগঠনটি চলতি মাসের শুরুতে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট হাউস অব কমন্সের সামনে আংশিক নগ্ন প্রতিবাদ দেখিয়ে গণমাধ্যমের শিরোনামও হয়েছিল। গ্রিনহাউস গ্যস নিঃসরণের মাত্রা ২০২৫ সালের মধ্যে শূন্যে নামাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে আসছে সংগঠনটি। আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি সামনের সপ্তাহগুলোতেও চলবে বলে ধারণা পুলিশের।

শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সময় জনদুর্ভোগ যেন কম হয় তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ‘ভারসাম্য রক্ষায়’ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ভাবছে তারা। “এখন যে কর্মসূচিগুলো চলছে তা জনসাধারণের যাতায়াত, স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ও লন্ডনের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন কার্যক্রমে চরম বিঘ্ন ঘটাচ্ছে,” মঙ্গলবার এমনটাই বলেছেন পুলিশের চিফ সুপারিনটেন্ডেন্ট কলিন উইনগ্রোভ।

মার্বেল আর্চে কোনো কর্মসূচির ক্ষেত্রে প্রতিবাদকারীদের নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে আটকে রাখা হবে বলে আগেই জানানো হয়েছিল। অন্যান্য স্থানের কর্মসূচিগুলোতেও পুলিশ প্রতিবাদকারীদের ওপর চড়াও হয় বলে রয়টার্স জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কাছে ওয়াটারলু ব্রিজ থেকে ডজনের ওপর আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়। বাকি প্রতিবাদকারীরা এসময় একে অপরের বাহু ধরে রাস্তার ওপর বসে পড়েন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ‘বিদ্রোহ! বিদ্রোহ!’ স্লোগান তোলেন, পুলিশের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ। তোমরা?’

সোমবার টেমস নদীর কাছে রয়েল ডাচ শেল ভবনের ক্ষতি করার অভিযোগে পুলিশ ৫ আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে দুইজন সেদিন মই দিয়ে ভবনটির সামনের অংশে উঠে লাল রঙ দিয়ে ‘শেল জানে’ লিখে দিয়েছিলেন। বাকি তিনজন হাতে হাত বেঁধে আটকে রেখেছিলেন ভবনটির প্রবেশপথ। মঙ্গলবার সকালেও অক্সফোর্ড সার্কাসের মূল বিকিকিনির এলাকায় আন্দোলনকারীদের ইতস্তত ছড়ানো ছিটানো তাঁবু দেখা গেছে।

প্রতিবাদকারীদের অনেকেই একটি কৃত্রিম নৌকার নিচে গাদাগাদি করে অবস্থান করছিলেন। নৌকাটির একপাশে লেখা ছিল ‘সত্য বলো’। বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা অন্য একটি প্ল্যাকার্ডে ছিল ‘জীবনের জন্য বিদ্রোহ’ কথাটি। পুলিশ জনদুর্ভোগের কথা বললেও ওয়েলসের ম্যাচিনলেথ থেকে আসা ৩৯ বছর বয়সী কেটি ফাউলার বলছেন, তাদের এ কর্মসূচিকে সাধারণ মানুষ ইতিবাচকভাবেই নিয়েছে। “মানুষ আমাদের এখানে এসে তুমুল ধন্যবাদ জানাচ্ছে। তাদের মধ্যে এক ধরনের সচেতনতা আছে, কিছু করার তাড়নাও আছে,” বলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button