মরু প্রকৃতির পথে উত্তরবঙ্গ

Riverসামছুল আরেফীন ও এসএম আলাউদ্দিন : শুধুমাত্র পাবনা জেলাতেই শুকিয়ে গেছে ২০টি নদী। এর মধ্যে ৬টি নদী একেবারে বিলীন হয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে। বিলীন হওয়া নদীতে বিভিন্ন মৌসুমী ফসল উৎপাদন হচ্ছে। অনেকে জবর দখল করে বাড়ি ঘরও নির্মাণ করেছেন। শুধু নদী নয়, শুকিয়ে গেছে খাল বিল, পুকুরও জলাশয়। চলছে পানির জন্য হাহাকার। তীব্র খরায় চরাঞ্চলের হাজার হাজার বিঘা জমির চিনাবাদাম ও তিল পুড়ে যাচ্ছে এবং আম, জাম, লিচুসহ বিভিন্ন গাছের ফল শুকিয়ে অসময়েই ঝরে পড়ছে। পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় পাবনা জেলায় সরকারি পর্যায়ের ১৭ হাজার এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ লাখ ২৫ হাজার নলকূপ থেকে পানি উঠছে না। ফলে পাবনা শহরসহ জেলার সর্বত্র বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য মতে, শুধু পাবনা জেলাতেই ২০ নদীতে পানি নেই। এর মধ্যে বেশ কিছু নদী এখন বিলীন হয়ে গেছে। এসব বিলীন হওয়া নদীতে বিভিন্ন মৌসুমী ফসল উৎপাদন হচ্ছে। অনেকে জবর দখল করে বাড়ি নির্মাণ করছেন বলে জানা গেছে। পানিশূন্য নদীগুলো হলো পদ্মা, যমুনা, কাগেশ্বরী, সুতিয়ালী, বান্নাই, চন্দ্রবতি, বড়াল, হুরা সাগর, রতœাই, ইছামতি, আত্রাই, গুমানী, জলকা, গুহালী, শালিক, চিকনাই। আর হারিয়ে যাওয়া নদীগুলো হলো, কমলা, শানসাডাঙ্গী, ভাঙ্গুড়া ইছামতি, করতোয়া, রতœবাড়ী, টেপাবাড়ী।
ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে পদ্মা নদীতে পানিশূন্যতার কারণে এ বিপর্যয় হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে এবারও বোরো মৌসুমে প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত না হওয়ায় বোরোর আবাদ হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে কৃষকেরা পদ্মার বুকে জেগে ওঠা চরের জমিতে বাদাম, ভুট্টা ও আখ আবাদ করছেন। অন্যদিকে পদ্মা পারের মৎস্যজীবীদের জীবন এখন বিপর্যস্ত। পানিহীন পদ্মায় মাছ সংকটে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে।
পাবনার প্রবীন লোকেরা জানিয়েছেন, এক সময় প্রমত্তা পদ্মায় বর্ষাকলে ছোট লঞ্চ চলতে পারত না। একটু বাতাসেই একের পর এক বিশাল ঢেউ দু’পাড়ে আছড়ে পড়ত। তখন বড় বড় লঞ্চ চলতো। এখন শুধুই ধূধূ বালুচর। নদীর চরে গড়ে উঠেছে অগণিত বসতি। নদীর উপর দিয়ে চলাচল করে নৌকার পরিবর্তে বাস-ট্রাক, গরু-মহিষের গাড়ী। যেসব যায়গায় পলিমাটি জমেছে সেখানে কৃষকরা চাষাবাদ করছে। প্রচ- খরায় এসব ফসলও পুড়ে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।
পানি চুক্তির পর থেকেই এ সমস্যা প্রকট আকার ধরন করছে বলে পানি বিশেষজ্ঞ ও নদী পারের মানুষ মনে করেন। পরিবেশগত হুমকির মুখে রয়েছে পদ্মার পাড়ে ৬ জেলার ২ কোটি মানুষ। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) কর্মকর্তারা সম্প্রতি হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে পদ্মার পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করেছেন। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ ও ভারতীয় যৌথ পানি বিশেষজ্ঞ দল ভারতের ফারাক্কা ও বাংলাদেশের হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে গঙ্গার পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করেন এবং  সে অনুযায়ী পানি বন্টন হয়ে থাকে। তবে পানি চুক্তির পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো বছরই বাংলাদেশ তার ন্যায্য হিস্যা পায়নি। ফারাক্কার প্রভাবে পদ্মা নদী বেষ্টিত ৬টি জেলায় মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিচে দীর্ঘদিন ধরে দোকান বসিয়েছেন ইসলাম আলী (৭০)। তিনি বলেন, এবছর হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পদ্মানদী একটু সরে এসেছে। প্রতি বছরের মতো এবার পদ্মায় পানি নাই। ফারাক্কা বাঁধের পর থেকেই এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।  নৌকা চালক ছলিমউদ্দিন (৬০) জানান, পানি কখনো বেশি আসেনি পদ্মায়। তবে এবার হার্ডিঞ্জ পয়েন্টে নদী একটু সরে এসেছে। দেখে মনে হচ্ছে, এবার পদ্মায় একটু বেশি পানি। কিন্ত বাস্তবে এবারও পদ্মায় পানি নাই। শুধুমাত্র সামান্য নৌকা চালানোর মতো পানি আছে। তাও সব জায়গায় নেই।
সরেজমিন শিলাইদহ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মা নদীর মাঝখানে এবার বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার করছে দু’পারের মানুষ। নৌকা চালানোর মতো পানি নাই এই পয়েন্টে। পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর পয়েন্টে মানুষ পায়ে হেটে চলাচল করছে। পা ভিজানোর মতো পানি পদ্মার মাঝখানে নেই। অথচ এলাকার প্রবীন লোকেরা জানিয়েছেন, ফারাক্কা বাঁধের আগে এখানে সারাবছর খেয়া নৌকার মাধ্যমে পারাপার চলতো। প্রবীন সাংবাদিক মাহতাব উদ্দিন জানান, পদ্মার ওপার তাদের এখনো অনেক জমি রয়েছে। এসব জমি আগে দেখতে যেতেন পাল তোলা নৌকা নিয়ে। কিন্ত এখন সেই নদী আর নেই। পায়ে হেটে পারাপার হন বিশাল আকারের পদ্মা। যা ভাবতেই অবাক লাগে।
সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে অস্বাভাবিকভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। পাবনা বরেন্দ্র এবং কৃষি বিভাগসহ কৃষকদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে কয়েক লাখ গভীর সেচযন্ত্রের মাধ্যমে প্রতিদিন কোটি কোটি লিটার পানি সেচকাজে উত্তোলন করা হচ্ছে। কোনো কোনো সেচযন্ত্র থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৬৫ হাজার লিটার পানি উত্তোলন করা হয়। এভাবে একটানা ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন হলেও বৃষ্টি না হওয়ায় এবং পদ্মায় পানি না থাকায় এ পানির ঘাটতি পূরণ হচ্ছে না। ফলে প্রচন্ড খরায় পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাচ্ছে। জেলার জনস্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, সাধারণ হস্তচালিত নলকূপ দিয়ে ২৬ ফুট নিচের পানি উত্তোলন করা সম্ভব হয়, কিন্তু বর্তমানে এ স্তর ৩৫  থেকে ৪০ ফুট নিচে নেমে গেছে। যা গত বছরে ফরিদপুরের বনওয়ারীনগরের সোনাহার জামে মসজিদের টিউবয়েলের পানির স্তর সর্বনি¤œ পাওয়া যায়। এবছর এ মাসের মধ্যেই পানির স্তর পরিমাপ করা হবে। তবে এবার ৪০ ফুটেরও নিচে পানির স্তর নেমে যেতে পারে। ২০১৩ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল জেলার ৯টি উপজেলায় পাম্প বেজ হতে সর্বনি¤œ পানির স্থিতী সমতলের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছার গাছপাড়া নুরুল ইসলামের টিউবয়েলে সর্বনি¤œ পানির স্তুর পাওয়া যায় ৩৫ ফুট, বেড়া উপজেলার নাকালিয়া নুর ইসলাম মাস্টারের টিউবয়েলে ২৭ ফুট, ভাঙ্গুড়ার দুধবাড়িয়ায় ৩২ ফুট, সুজানগরের বাড়ইপাড়ায় ৩২ ফুট, ঈশ্বরদীর মুলাডলিতে ৩৮ ফুট, চাটমোহরের মাঝপাড়ায় ২৪ ফুট, সাথিয়ার কুকরাবাড়ীতে ৩৬ ফুট, নাগডেমরা সেলন্দায় ৩০ ফুট পানির সর্ব নি¤œ স্তর পাওয়া যায়। এবার পরিমাপ করলে কোথাও কোথাও এর চেয়েও বেশি নি¤েœ পানির স্তর পাওয়া যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
এ কারণে উত্তরাঞ্চলে সরকারি ও বেসরকারি বা ব্যক্তিগত পর্যায়ে কমপক্ষে ২৫ লাখ হস্তচালিত নলকূপ অচল হয়ে গেছে। পাবনা জেলায় সরকারি পর্যায়ের ১৭ হাজার এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ লাখ ২৫ হাজার নলকূপ থেকে পানি উঠছে না। পাবনা ও সিরাজগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জামানুর রহমান জানান, গত ৫ মাস ধরে খরা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আরও নিচে নেমে যাচ্ছে। তিনি জানান, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা হিসেবে অনেক জায়গায় তারাপাম্প বসানো হয়েছে। তারাপাম্প ৬০ ফুট নিচের ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করতে পারে। এদিকে হস্তচালিত নলকূপ দিয়ে পানি না উঠায় পাবনার আর্সেনিকপ্রবণ সদর, সুজানগর, সাঁথিয়া, বেড়া এবং ঈশ্বরদী উপজেলার কয়েকশ’ গ্রামে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সরকারিভাবে আর্সেনিকমুক্ত কিছু প্রকল্পের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য। এদিকে বিভিন্ন জলাশয়, পুকুর এবং নদীনালায় পানি না থাকায় বিভিন্ন প্রাণী রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাদের গোসলের পানির বড়ই সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে নানা ধরনের রোগবালাই আক্রমণ করতে পারে বলে গরু-বাছুর পালনকারীরা আশঙ্কা করছেন।
এদিকে পদ্মায় পানি না থকায় এর বিরূপ প্রভাব গিয়ে পড়েছে ঐতিহাসিক চলনবিলে। চলনবিল এখন অস্তিত্ব সংকটে। সেই সাথে চলনবিল কেন্দ্রিক প্রধান নদী আত্রাই, গুমানী, নন্দকুঁজা, বড়ালসহ ১৬টি নদ-নদী প্রায় মৃত হয়ে গেছে। ফলে নদী এলাকার ৩০ লাখ মানুষ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে। বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে গেল ১৪ মার্চ ‘চলনবিলসহ মৃতপ্রায় নদী নদীগুলোকে রক্ষায়’ নদী পাড়ের হাজারও মানুষ বৃহত্তম মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বড়াল রক্ষা আন্দোলন ও চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটি। তারা প্রমত্তা পদ্মার শাখানদী বড়াল রক্ষা, দখলমুক্তকরণ, বাঁধ অপসারণ, পুনঃখনন ও ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের আওতায় আনার দাবি জানায়।
জানা গেছে, চলনবিল অঞ্চলে ১৭৫৭ হেক্টর আয়তনের ৩৯টি বিল, ৪২৮৬ হেক্টর আয়তনবিশিষ্ট ১৬টি নদী এবং ১২০ বর্গ কি.মি. আয়তন বিশিষ্ট ২২টি খাল রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান নদী ৯টি, ২০টি খালসহ ছোট ছোট বিভিন্ন বিল ও খাল রয়েছে। অতীতে ২৩ হাজারের মতো বড় বড় পানির আধার ছিল। যা বেশীর ভাগই বেদখলকৃত ও হাত ছাড়া হয়ে গেছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. মোঃ রেদাওয়ানুর রহমানের প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, প্রায় ২৫ বছর আগেও চলনবিলের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত নদ-নদী, খাল-বিলগুলোতে বছরজুড়েই ৬ থেকে ১২ ফুট পানি প্রবাহিত থাকত। ফলে নদীগুলোতে বছরজুড়েই নৌ চলাচল করত। কিন্তু বছরের পর বছর পদ্মায় পলি জমে এসব নদী ভরাট হয়ে গেছে। নদী আর নৌকাকে ঘিরে নাটোরের গুরুদাসপুর, চাঁচকৈড়, নাজিরপুর, সিংড়া, বড়াইগ্রামের আহম্মেদপুুর, সিরাজগঞ্জের ধামাইচ, নাদোসৈয়দপুর, পাবনার চাটমোহর ছাইকোলা, অষ্টমনিষা, মির্জাপুর ও ভাঙ্গুড়ায় গড়ে উঠেছিল বড় ধরনের নৌবন্দর।
ইম্পেরিয়েল গেজেট অব ইন্ডিয়া থেকে জানা যায়, চলনবিল অঞ্চলে ১ হাজার ৭৫৭ হেক্টর আয়তনের ৩৯টি বিল, ৪ হাজার ২৮৬ হেক্টর আয়তন বিশিষ্ট ১৬টি নদী এবং ১২০ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট ২২টি খাল ছিল। এর মধ্যে প্রধান নদী ৯টি, ২০টি খালসহ ছোট ছোট বিভিন্ন বিল রয়েছে। অতীতে ২৩ হাজারের মতো বড় পানির আধার ছিল। যা বেশির ভাগই ভূমিদস্যু ও বিল দানবদের দ্বারা বেদখল ও হাতছাড়া হয়ে গেছে। নদীগুলোর মধ্যে আত্রাই, নন্দকুঁজা, গুমানী, গুড়, করতোয়া, বড়াল, তুলসি, চেঁচিয়া, ভাদাই, চিকনাই, বানগঙ্গা, কাটানদী অন্যতম। ১৮টি খালের মধ্যে নবীরহাজির জোলা, হক সাহেবের খাল, নিমাইচড়াখাল, বেশানীর খাল, গুমানী খাল, উলিপুর খাল, সাঙ্গুয়া খাল, দোবিলা খাল, তিষাখালীর খাল, বেহুলারখাড়ি, বাকইখাড়া, গোহালখাড়া, গাড়াবাড়ি দারুল খাল, কুমারভাঙ্গা খাল, জানিগাছার জোলা, সাত্তার সাহেবের খাল, কিনু সরকারের ধর, পানাউল্ডা খাল উল্লেখযোগ্য।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সেচের মাধ্যমে এ অঞ্চলের ফসল উৎপাদনের স্বার্থে সরকার ১৯৫৪ সালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৬২ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৩টি প্রধান পাম্প এবং ১২টি সাবসিডিয়ারি পাম্প রয়েছে। পাম্পগুলো চালু রাখতে ইনটেক চ্যানেলের মুখে ন্যূনতম ১৬ ফুট পানির স্তর প্রয়োজন। মোট ৪ লাখ ৮৮ হাজার একর জমি এই সেচ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়।
পদ্মায় পানি শূণ্যতার কারণে বোরো মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটছে। শুষ্ক মৌসুমে পদ্মার পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এ এলাকার কৃষকেরা বিপাকে পড়েছে। শ্যালোচালিত পাম্পে আর পানি উঠতে চাচ্ছে না। অধিকাংশ পাম্প এখন সাবমার্সেবল বসিয়ে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। জিকে প্রকল্পের আওতাধীন কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুড়া, ঝিনাইদহ, নড়াইল, সাতক্ষীরা ও ফরিদপুর অঞ্চলের অধিকাংশ হস্তচালিত গভীর-অগভীর নলকূপ থেকে পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। দুই দশক আগে উত্তরাঞ্চলের তাপমাত্রা ওঠানামা করতো ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। এখন প্রায়ই তা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। হেরফের হচ্ছে বার্ষিক বৃষ্টিপাতেও। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এভাবে পুরো উত্তরাঞ্চল ধীরে ধীরে মরুকরণের দিকে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button