ব্রেক্সিট চুক্তি মেনে নেয়ার শর্তে বিলম্বে রাজি ইইউ

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পূর্বনির্ধারিত তারিখ পিছিয়ে দিয়ে কিছুটা বিলম্ব মেনে নেওয়া তখনই সম্ভব হবে যখন যুক্তরাজ্যের এমপিরা প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে ভোট দেবেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, থেরেসা মে ব্রেক্সিট কার্যকর ৩০ জুনের আগ পর্যন্ত স্থগিত রাখার বিষয়ে চিঠি লিখেছিলেন ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ককে। এর জবাবে ডোনাল্ড টাস্ক গত বুধবার জানিয়েছেন বিলম্ব মেনে নেওয়ার এই শর্তের কথা।

২০১৬ সালের ব্রেক্সিট গণভোটের রায় অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ রাত ১১টার পর থেকে আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য থাকার কথা নয় যুক্তরাজ্যের। ব্রেক্সিট পরবর্তীকালে ইইউয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের শর্ত নির্দিষ্ট করে একটি খসড়া চুক্তি প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে তা সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যের সমর্থন পায়নি। মূল সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়টি। মে আবার ইইউ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সংসদ সদস্যদের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে এমন একটি চুক্তি উপস্থাপন করেছেন গত ১২ মার্চ। সেটিও পরাজিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহে আবারও চুক্তিটি হাউস অব কমন্সে ভোটাভুটির জন্য তোলার কথা রয়েছে।

আগামী ২৯ মার্চে ব্রেক্সিট কার্যকর না করে ৩০ জুনের আগ পর্যন্ত অপেক্ষার বিষয়ে ডোনাল্ড টাস্কের ভাষ্য, ‘এটি সম্ভাবনাময়।’ কিন্তু ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের দিনক্ষণ ২৩ মের পরে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ‘রাজনৈতিক ও আইনি’ বিষয়। ২৩ মে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আর চুক্তির বিষয়ে ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, বর্তমানে চুক্তিটি যেভাবে তৈরি তাতে কোনও পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে না। তবে গত সপ্তাহে স্ট্রসবার্গে মেকে ইইউয়ের পক্ষ থেকে যেসব আইনি নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল সেগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। এটি ব্রিটিশ এমপিদের সমর্থন পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।

এদিকে গত বুধবার বিকেলে যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে এমপিদের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিরোধী লেবার পার্টির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর থেরেসা মের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তারা মনে করেন, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে যে বিলম্বের কথা আলোচনা হচ্ছে তা এতটাই দীর্ঘ যে এই সময়ের মধ্যে এমপিরা ‘এই কানাগলি থেকে বেরিয়ে পথ খুঁজে’ নিতে বাধ্য হবে। এদিকে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন বিলম্বিত করতে ইইউকে লেখা চিঠির বিষয়ে বিরোধী দলগুলোর সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন মে। এমন এক সভার আগে এসএনপির হাউস অব কমন্সের নেতাআয়ান ব্ল্যাকফোর্ড, লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা ভিন্স ক্যাবল, প্লেইড সিমরুস দলের হাউস অব কমন্সের নেতালিজ সাভিল রবার্টস এবং গ্রিন পার্টির এমপি ক্যারোলিন লুকাস একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তারা, দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেওয়ার এবং যতদিন না সমঝোতা হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত নিয়মিত সংসদ অধিবেশনে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। -বিবিসি

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button