রানির সয়-সম্পদ

Queenসময়ের সাথে অনেক কিছুই বিলীন। রাজতন্ত্র আজ ইতিহাস। তবুও ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এমন অনেক ক্ষমতা ভোগ করেন, যা শুধু তার জন্যই।
রানির রাজহাঁস: ব্রিটেনের রানির রাজহাঁস আছে। তা রাজবাড়িতে হাতিঘোড়া থাকতে পারলে, রাজহাঁসই বা না-থাকার কী রয়েছে, তাই না? কিন্তু, আপনি শুনলে বিস্মিত হবেন, টেমসের বুকে যে অগুনতি রাজহাঁস চড়ে বেড়ায়, তার মালকিন কিন্তু একজনই, রানি এলিজাবেথ দ্বিতীয়। অগুনতি হলেও, অগোনা নয়। বছরে নিয়ম করে গোনা হয়, মানে শুমারি। সেসময় পায়ে রিং পরিয়ে, আবার ছেড়ে দেয়া হয় টেমসে। এক একটা রিংয়ে আলাদা আলাদা নম্বর। শুধু গোনা নয়, রাজহাঁসদের শরীর স্বাস্থ্যেরও দেখভাল করতে হয়।
রানির ডলফিন: শুধু রাজহাঁস নয়, রানির আবার ডলফিনও রয়েছে। গোটা ইউনাইটেড কিংডমে, যেখানে যত ডলফিন, সবই রানির। তাই ডলফিন সেখানে fishes royal। শুধু ডলফিনই নয়, তিমি ও স্টুরজিয়নও রানির মাছ। ১০ ফুটের একটি স্টুরজিয়ন মাছ ধরে ওয়েলশের এক মৎস্যজীবীকে শাস্তিও পেতে হয়েছে। আইনিভাবেই রানির পোষ্য মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
রানির লাইসেন্স নেই: রানির নামে লাইসেন্স ইস্যু হলেও গোটা ব্রিটেনে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, গাড়ি চালানোর জন্য যার কোনো লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই। শুধু ড্রাইভিং লাইসেন্স নয়, রানির গাড়িতে নাম্বার প্লেটও লাগে না। তবে, রানি কিন্তু স্টিয়ারিং হাতে গাড়ি চালাতে পারঙ্গম। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় নিজেই ফার্স্ট এড ট্রাক চালিয়েছেন।
পাসপোর্টের বালাই নেই: রাজপরিবারের অন্যদের পাসপোর্ট লাগলেও, রানির কিন্তু পাসপোর্ট লাগে না।
বছরে দুইবার জন্মদিন: বছরে দুইবার রানির জন্মদিন পালন করা হয়। আসল জন্মদিন ২১ এপ্রিল হলে সরকারিভাবে জুনের এক শনিবারে তার জন্মদিন উদযাপন করা হয়। বিশেষ স্টাইলে এই জন্মদিন পালিত হয়। তার আসল জন্মদিনে ‘গান স্যালুট’ দেয়া হয়। আর সরকারি জন্মদিনে থাকে বাকিংহাম প্যালেসে প্যারেড।
আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ: আলাদীনের ছিল আশ্চর্য প্রদীপ। আর রানির হাতে ব্যক্তিগত ক্যাশ মেশিন। ইচ্ছেখুশি চাইলেই সেখান থেকে টাকা বের করে নিতে পারেন। ব্রিটেনে তার রাজপ্রাসাদের নিচেই রয়েছে সেই টাকার মেশিন।
সভাকবি: সে অর্থে অতীতের রাজকীয় ব্যাপার-স্যাপার না থাকলেও ‘সভাকবি’র রেওয়াজ কিন্তু রয়েই গেছে। সম্মানিক পদ। বছরে সেই কবিকে ২০০ পাউন্ড করে সম্মানি দেয়া হয়। ২০১৯ পর্যন্ত রানির কবি ক্যারল অ্যান ডুফি।
আইনে রানির স্বাক্ষর: ব্রিটেন কোনো আইন পাস করতে হলে আজও কিন্তু তাতে রানির সই জরুরি। পার্লামেন্টের দুই কক্ষে প্রস্তাবিত আইন পাস হওয়ার পর সেটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আসে রানির কাছে।
রানির বাণী: বছরে একবার তিনি বলবেন, ‘প্রজা’রা শুনবে। হাউজ অফ লর্ডে বছরে ওই একটা দিন তাকে ভাষণ দিতে হয়।
লর্ড নিয়োগ: সেই ক্ষমতাও রানির রয়েছে। রানির নিয়োগ করা সেই লর্ড পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে বসবেন। শুধু তাই নয়, সরকার গঠনের ক্ষমতাও রয়েছে রানির।
করের আওতার বাইরে: আরো অনেক বিশেষ সুবিধাভোগের মতো কর দেয়া থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তার কর দেয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু ১৯৯২ সাল থেকে তিনি স্বেচ্ছায় কর দেন।
রানির knight-রা: অতীতের ঐতিহ্যে, আজও রয়েছে রানির জন্য knight। এবং রানি নিজেই তাদের নিয়োগ করেন।
রানির দেয়া রুপোর কয়েন: বিশেষ অনুষ্ঠানে ক্যাথিড্রালে গিয়ে বর্ষীয়ানদের বিশেষ রুপোর কয়েন দেন ব্রিটেনের রানি। এবার তিনি ৮৯ বছরে পড়বেন। তাই ৮৯ জন বর্ষীয়ানকে ওই কয়েন দেয়া হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button