রাজকন্যার জন্য ৪৫ হাজার ডলারের ঝুমঝুমি

Royal Baby Gift১৮ ক্যারেটের সাদা সোনায় বানানো ঝুমঝুমি৷ নীলকান্ত মণি, রুবি আর হিরের দ্যুতি ঠিকরে বেরোচ্ছে৷ একটু মন দিয়ে দেখলে ইউরোপের পতাকার আদল ধরা পড়ে৷ মহার্ঘ্য এই ঝুমঝুমির মালকিনের বয়স মাত্র এক সপ্তাহ৷ ঝুমঝুমির ছোটখাটো গড়ন ছোট্ট মালকিনের হাতে মাপসই হলেও অনবদ্য এই খেলনা এখন নিলামকারীদের পাখির চোখ৷ কারণ ঝুমঝুমির মালকিনের নাম শার্লট এলিজাবেথ ডায়ানা, রাজকীয় ভাষায় বলতে গেলে ‘প্রিন্সেস শার্লট অফ কেমব্রিজ’৷ রাজকুমার উইলিয়াম ও ডাচেস অফ কেমব্রিজের কনিষ্ঠা সন্তানের জন্য রাজকীয় এই উপহার তৈরি করেছে ‘ন্যাচারাল স্যাফায়ার কোম্পানি’৷
জুয়েলারি ও রত্ন ব্যবসার ক্ষেত্রে মার্কিন এই সংস্থার সুনাম বহুদিনের৷ ২০১০ সালে বাগদানের সময় কেটের হাতে মা ডায়ানার নীলকান্ত মণি বসানো আংটি পরিয়ে দিয়েছিলেন উইলিয়াম৷ সে ছবি প্রকাশ্যে আসার পর এই সংস্থায় নীলকান্ত মণি বসানো আংটির বিক্রি হু হু করে বাড়তে থাকে৷ ‘ন্যাচারাল স্যাফায়ার’ নিজেরাই জানাচ্ছে, সে বার তাদের ব্যবসা ৩০০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল৷ সৌজন্যে রাজপরিবার! তাই এক রকম কৃতজ্ঞতা প্রকাশের চিহ্ন হিসেবেই খুদে শার্লটের জন্য এই অনবদ্য উপহার বানিয়েছে তারা৷ ঝুমঝুমির দাম ৪৫ হাজার ডলার !
১৮ ক্যারেটের সাদা সোনায় বানানো ঝুমঝুমির মধ্যে নীলকান্ত মণি, রুবি ও হিরে এমন ভাবে বসানো হয়েছে যাতে ইউরোপের পতাকার আদল ফুটে ওঠে৷ প্রস্তুতকারক সংস্থার দাবি, ১৮০০ শতাব্দীতে এ ধরনের বহুমূল্য ধাতুতে বানানো খেলনাই রাজপরিবারের শিশুদের উপহার দেয়া হতো৷ ছোট্ট রাজকন্যেকে সেই ঐতিহ্যের আভাস দিতেই এই উপহার৷ তবে নিলামকারী সংস্থাগুলির কাছে এই ঝুমঝুমির গুরুত্ব অনেক বেশি৷ এমনিতেই ব্রিটেনের রাজপরিবার নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই৷ সেক্ষেত্রে খুদে রাজকন্যের ঝুমঝুমি নিলামে উঠলে তার ক্রেতার অভাব হবে না৷ আর পাল্লা দিয়ে উঠবে দাম৷ আগ্রহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাম হয়তো ৪৫ হাজার ডলারও ছাড়িয়ে যেতে পারে৷
‘ন্যাচারাল স্যাফায়ার’ অবশ্য সে সব নিয়ে ভাবতে রাজি নয়৷ ‘প্রিন্সেস শার্লেট অফ কেমব্রিজ’ কী কী গয়না পরবেন, বিশেষ কী গয়না বানানো হবে তার জন্য- মার্কিন সংস্থাটি এখন সে সব নিয়েই ভাবতে ব্যস্ত৷ আর শার্লট যদি রানির পদ পান, তবে রাজপরিবারের ঐতিহ্যবাহী মুকুটে পিঙ্ক স্যাফায়ার যোগ করে সেটিকে আধুনিক রূপ দেয়ার কথাও ভেবে ফেলেছে সংস্থাটি৷ পিঙ্ক স্যাফায়ার শুধুমাত্র ক্ষমতার প্রতীক নয়, তা বুদ্ধিমত্তা ও দয়াশীলতার প্রতীকও৷ আর সে কথা মাথায় রেখেই মুকুটকে এই নয়া রূপে সাজানোর ভাবনা৷
যে খুদে কন্যেকে ঘিরে এত আয়োজন, সে অবশ্য প্রথম আত্মপ্রকাশেই নিজস্ব ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ বানিয়ে ফেলেছে৷ শার্লটকে কোলে নিয়ে কেট ও উইলিয়ম যখন হাসপাতালের বাইরে আসেন, তখন সব ক্যামেরার ফোকাসে তখন ১০ ঘণ্টার নবজাতক৷ সেই ছবিতেই ধরা পড়েছে, কেট-কন্যাকে ঘিরে থাকা হাতে বোনা উলের বনেটের ছবি৷ স্প্যানিশ বেবি গুডস ডিজাইনার ‘ইরুলিয়া’র তৈরি বনেটে বিশেষত্ব খুব বেশি ছিল না ঠিকই, কিন্তু বনেটটি উল্টো ভাবে পরানো হয়েছিলে শার্লটকে৷ আর সেটাই হয়ে যায় রাজকন্যের স্টাইল স্টেটমেন্ট৷
সূত্রের খবর, প্রিন্স জর্জের ন্যানির মা জর্জের বোনকে এই উপহার দিয়েছেন৷
কিন্তু দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি, কারণ ‘ইরুলিয়া’ ক্রেতার পরিচয় ফাঁস করতে চায়নি৷ তবে রাজকন্যের মাথায় তাদের বানানো বনেট দেখে চমকে উঠেছিলেন ‘ইরুলিয়া’র মালিক আয়াজো ভিল্লার৷ আর তিনিই ফাঁস করেন, শার্লটের মুখের চারধারে বনেটের যে অংশটি রয়েছে, সেটি আসলে ঘাড়ের কাছে থাকার কথা৷ অর্থাৎ তাড়াহুড়োর মধ্যে ‘ফেস হোল’ আর ‘নেক হোল’কে গুলিয়ে ফেলেছেন কেট৷
কিন্তু তাতে কী! রাজকন্যের উল্টো বনেটই এখন ‘ইন ফ্যাশন’৷ অনেক তো আবার বলছেন, রাজপরিবারের নিজস্ব ট্রেন্ড তৈরি করতে কেট ইচ্ছে করেই শার্লটকে উল্টো বনেট পরিয়েছেন৷ কারণ যাই হোক না কেন, আপাতত একই নকশার বনেটের অর্ডার নিতে নিতে ক্লান্ত ‘ইরুলা’৷ বোঝাই যাচ্ছে, জন্মের সঙ্গে সঙ্গে ‘ফ্যাশনিস্তা’ বাকিংহামের রাজকন্যে৷

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button