ধর্ষণ দৃষ্টান্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে ভারত

Lesliআপনার প্রামাণ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়াস ডটার’ ভারতে নিষিদ্ধ হয়েছে। অভিযোগ, আপনি একজন অভিযুক্ত ধর্ষকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। ভারতের দুর্নাম প্রচার করছেন। এ ব্যাপারে আপনার প্রতিক্রিয়া কী ?
ভারতকন্যা নিষিদ্ধ করার ব্যাপারটা আমার বোধগম্য নয়। আমি তো তা-ই প্রকাশ করেছি, যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রায়ই বলেন। তিনি লিঙ্গসাম্য, নারীশিক্ষার কথা বলেন। ভারতের নৈতিক কাঁটা পুনর্নির্ণয়ের কথা বলেন। আমি সেগুলো অর্জনের কথাই বলেছি। তার উপায় খুঁজেছি। আমি বিশ্বকে জানাতে চেয়েছি, ‘ধর্ষণ দৃষ্টান্তে ভারত নেতৃত্ব দিচ্ছে। এখন আপনারাও ভারতের নেতৃত্ব অনুসরণ করুন। ধর্ষণের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের অবস্থানও একটি নতুন দৃষ্টান্ত।’ এটাই আমার প্রামাণ্যচিত্রের মূলকথা।
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আপনি সরাসরি মোদির কাছে আর্জি জানিয়েছেন। তার কাছে কোনো আশ্বাস পেলেন ?
আমরা এখনও এমন কোনো আশ্বাস পাইনি। সরকার বিশ্বকে বলতে চায়, এটা ভারতের দিকে আঙুল তোলা। গণতন্ত্র ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই প্রামাণ্যচিত্রের ফলে ভারত যদি তার মানসিকতার পরিবর্তন করে, তবেই মাথা উঁচু করে বলতে পারে আমরা নারী অধিকার ও লিঙ্গসাম্যের জন্য তারা কাজ করছে, যা একটা বৈশ্বিক ইস্যু। আর তারা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে এটাই প্রমাণ হবে, ভারত লিঙ্গবৈষম্য রোধে আন্তরিক নয়।
লিঙ্গবৈষম্য যেখানে বৈশ্বিক ইস্যু, সেখানে ভারতকে কেন হাইলাইট করছেন ?
এটা শুধু একটা ভয়ংকর ধরনের মামুলি ধর্ষণ নয়, যার জন্য আমি ছুটে এসেছি। আমার মনে হয়েছে, আরে! ভারতের এসব মানুষ তো আমার অধিকার রক্ষার কথা বলছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ, আমি নিজেই ধর্ষণের শিকার। এটা আজ আশ্চর্য নয় যে, বিশ্বব্যাপী এক-পঞ্চমাংশ নারী ধর্ষিত হচ্ছে। আমি সেই ২০ শতাংশের একজন।
প্রামাণ্যচিত্র তৈরিতে আইন লংঘনের অভিযোগ উঠেছে
দেখুন, আমি কোনো আনাড়ি পরিচালক নই। ২০ বছর ধরে অধ্যবসায়ের সঙ্গে কাজ করছি। নিয়ম মতো সব অনুমতি নিয়েছি ও আইন মেনেছি। আইনজীবীদের পরামর্শ নিয়েছি। দু’জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের সঙ্গেও কথা বলেছি।
সরকার থেকে কোনো হুমকি পেয়েছেন ?
গত মঙ্গলবার দিল্লিতে একজন সিনিয়র সাংবাদিক ছুটে এসে আমাকে বলেছিলেন, আপনার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। আমি তখন আমার পরিচিত ৭ জন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলি। তারা সবাই আমাকে দ্রুত ভারত ছেড়ে ইংল্যান্ডে ফেরার পরামর্শ দেন। নয়তো আমার আর ফেরা নাও হতে পারে।
অভিযোগ আছে, আপনি বাণিজ্যিক স্বার্থে এটি বানিয়েছেন। মুকেশ সিংকে টাকা দিয়েছেন। তার অজ্ঞাতে ভিডিও করেছেন…
এই অভিযোগ আমি কখনোই মানব না। যাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছি, তাদের কাউকে টাকা দিইনি। আমি সম্পূর্ণ নিজে টাকা জোগাড় করে এই কাজ করেছি। শেষ দিকে বিবিসি ৯০ হাজার পাউন্ড দিয়েছে। মোট ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার পাউন্ড।
নির্ভয়ার পিতামাতা আপনার পক্ষে রয়েছেন ?
অবশ্যই। দু’দিন আগেও তারা আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছে, সত্য পথে হাঁটলে অনেক বাধা। আমি এই মেসেজ পড়ে অনেক কেঁদেছি। নির্ভয়ার বাবা বলেছে, আমি লজ্জিত নই। এ লজ্জা ধর্ষকের। বিশ্বব্যাপী আপনি নির্ভয়ার আসল নাম প্রচার করবেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button