তিন কিশোরীকে ফিরে আসার আহ্বান

Shamimaনিখোঁজ তিন স্কুলছাত্রীকে নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ব্রিটেন। তারা আইএসে যোগ দিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিন কিশোরীর জন্য অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন। তারা কিশোরীদের দেশে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। শামীমার পরিবার মেয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সিরিয়া ‘একটি বিপজ্জনক স্থান, ভয়ঙ্করভাবে তোমার অভাব অনুভব করছি আমরা।’ তোমরা ফিরে এসো। আকসার পরিবার এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে, তাদের ব্রিটেন ছেড়ে যাওয়া ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
খাদিজার পরিবারও এমন ঘটনায় খুব মর্মাহত। নিখোঁজ তিন স্কুলছাত্রীর মধ্যে দু’জনই বাংলাভাষী। শামীমা বেগম (১৫) ও খাদিজা সুলতানা (১৬) ব্রিটিশ উচ্চারণে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা ভাষায়ও কথা বলেন। তৃতীয় জন আমিরা (১৫)। বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় তাদের বসবাস। ধারণা করা হচ্ছে, ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে পরিবারকে না জানিয়ে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে ওই তিন কিশোরী।
তিন কিশোরীকে উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি তরুণ মুসলিমদের চরমপন্থি হওয়ার হাত থেকে মুক্ত রাখতে ব্রিটেনের নাগরিক, বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী ও সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানান।
ক্যামেরন বলেন, ‘কেবল পুলিশ ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা মুসলিম চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে লড়াই করে সফল হতে পারব না।’
ক্যামেরন আরও বলেন, ‘মৃত্যুর নামান্তর এই আতঙ্কজনক ভাবাদর্শ যেন কাউকে প্রভাবিত করতে না পারে সে জন্য আমাদের সবাইকেই সচেষ্ট হতে হবে।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় মুসলিম সমাজের নেতারা এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বেথনাল গ্রীনের এমপি রুশনারা আলিও।
তারা জানান, পশ্চিমা দেশগুলোর মুসলিম নাগরিকরা সিরিয়া ও ইরাকের আইএস গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। আইএসে যোগ দেওয়া কিংবা যোদ্ধাদের স্ত্রী হওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে মুসলিম নারীরাও। ২০১৪ সাল থেকে ৩ হাজারেরও বেশি ইউরোপীয় নাগরিক আইএসে যোগ দেওয়ার উদ্দেশে ইরাক ও সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে, ইউরোপের সন্ত্রাসবাদবিরোধী কার্যক্রমের সমন্বয়ক এ তথ্য জানান।
২০১৩ সালে সিরিয়া ভ্রমণকারী আকসা মাহমুদ নামের এক নারী ওই তিন কিশোরীর মধ্যে অন্ততপক্ষে এক কিশোরীর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিলেন। আকসার পরিবার জানিয়েছে, ওই কিশোরীদের সংগ্রহে তাদের মেয়ে সহায়তা করেছে ভেবে তারা খুবই আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ। এক বিবৃতিতে এ পরিবারটি জানায়, যুক্তরাজ্য সরকার আইএসবিরোধী প্রচারণায় সরব হলেও তারা আইএসে যোগ দেওয়ার উদ্দেশে শিশু-কিশোরদের দেশ ত্যাগ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি। এক্ষেত্রে সরকার ব্যর্থ।
লন্ডনের পুলিশ আশা করছে, মেয়েগুলো তাদের নিয়ে অভিভাবক ও নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্বেগের বিষয়টি বুঝতে পারবে এবং পরিবারের কাছে ফিরে আসার মতো সাহসিকতা দেখাবে।
ভারী তুষারপাতের কারণে তুরস্কে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। সে কারণে মেয়েগুলো এখনো সিরিয়ায় পৌঁছাতে পারেনি বলে ধারণা করছে লন্ডনের পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সর্বশেষ ওই মেয়েগুলোকে দেখা গিয়েছিল। তারা কয়েকদিনের জন্য বাইরে যাচ্ছে বলে পরিবারকে জানিয়ে গেছে।
কিন্তু ইস্তাম্বুলের উদ্দেশ্যে তুরস্কের একটি বিমানে চড়ার জন্য গেটউইক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেস্টনি পাড়ি দেওয়ার সময় ওই তরুণীদের ছবি সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button