বিশ্বে ইসলামী ব্যাংকিং দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে

IDBইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) প্রেসিডেন্ট ড. আহমদ মোহাম্মদ আলী বলেছেন, শরিয়াহভিত্তিক বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত ও মানব কল্যাণকর হওয়ায় সারা বিশ্বে ইসলামী ব্যাংকিং দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বের ৯০টি দেশে ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে। আর আইডিবির সদস্য দেশ রয়েছে ৫৬টি। ইসলামী ব্যাংকের এ অগ্রগতির পেছনে তুলনামূলক বেশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
রোববার রাজধানীর স্থানীয় এক হোটেলে ইসলামিক ব্যাংকস্ কনসালটেটিভ ফোরাম (আইবিসিএফ) আয়োজিত ‘শরিয়াহ ব্যাংকিং : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারের প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে আইডিবি প্রেসিডেন্ট এ কথা বলেন।
সেমিনারের দ্বিতীয় পর্বের প্রধান অতিথি হিসেবে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে দুই হাজার কোটি টাকা নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক যে শর্তে দেবে সেভাবেই বিনিয়োগ নেয়া হবে। বিনিয়োগের সব দরজাই ইসলামী ব্যাংকের জন্য খোলা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সেমিনারের দুই পর্বেই সভাপতিত্ব করেন আইবিসিএফ ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুজ জাহের।
আইডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে ইসলামী ব্যাংকগুলো ব্যাপক অবদান রাখছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র অর্থায়নে ইসলামী ব্যাংক মডেল হয়ে উঠেছে। বৈশ্বিক মন্দাকালীন সময়েও অন্য সব ব্যাংকের চেয়ে ইসলামী ব্যাংকগুলোর অবস্থা ভালো ছিল বলে তিনি জানান।
সেমিনারের প্রথম পর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী মো: আব্দুল মান্নান এমপি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসলামিক ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞ এম আযিযুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মেজর (অব:) ড. রেজাউল হক। অনুষ্ঠানটি সমন্বয় করেন সেমিনার প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও এক্সিম ব্যাংক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে ইসলামী ব্যাংকিং দ্রুত সম্প্রসারিত হলেও এখন ইসলামী ব্যাংক পরিচালনার জন্য কোনো আলাদা আইন নেই। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে আলোচনা করে ইসলামী ব্যাংকের জন্য আইন প্রণয়ন করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর বলেন, শুধু মুসলিম বিশ্বেই নয়, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং পৃথিবীব্যাপী অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক অর্থায়নের অন্যতম উৎস হিসেবে ভূমিকা রাখছে। বৈশি^ক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিংয়ের গুরুত্ব আরো বেড়েছে। বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং সামগ্রিক ব্যাংক খাতের এক-পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ইসলামী ব্যাংক শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য নয়, সব ধর্মের মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। এ কারণে অতি দ্র“ততার সাথে এর কার্যক্রম সম্প্রসারিত হচ্ছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে ইসলামী ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞ এম আযিযুল হক বলেছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসলামী ব্যাংকিং দ্রুত সম্পসারণশীল একটি খাত রূপে আবির্ভূত হয়েছে। এটি প্রচলিত ধারার অর্থব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে খুবই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের আবির্ভাব দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা। দেশের প্রথম ইসলামী ব্যাংকের সাফল্য শরিয়াহ ব্যাংকিংয়ের গ্রহণযোগ্যতা ও অগ্রগতি সন্দেহকে দূরীভূত করেছে এবং বাজার চাহিদা পূরণে আরো ইসলামী ব্যাংক এগিয়ে এসেছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button