ভিসা ফি থেকে ব্যাপক হারে অর্থ কামিয়ে নিচ্ছে ব্রিটেন

Visaক্রমাগত ভিসা ফি বাড়িয়ে ব্রিটিশ ভিসা আবেদনকারীদের কাছ থেকে ব্যাপক হারে অর্থ কামিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাজ্য। কোনো কোনো ভিসা আবেদন থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ শতাংশ পর্যন্ত লাভ করছে দেশটি। ‘গার্ডিয়ান’-এ প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ছোটখাটো ভুলের অজুহাতে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিয়ে নতুন করে আবেদন করতে বাধ্য করা হয়। এতে পুনরায় আবেদনের জন্য নতুন করে ফি দিতে হয় আবেদনকারীকে। ছোটখাটো ভুলের কারণে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যানের ক্ষেত্রে বেপরোয়া লাভের প্রবণতার প্রভাব থাকতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ভিসা আবেদনপ্রক্রিয়ায় সরকারের খরচ এবং আবেদনকারীদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থের মধ্যে বিশাল তফাত তুলে ধরেছে ‘গার্ডিয়ান’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো ব্রিটিশ নাগরিক যদি বিদেশ থেকে তাঁর পরিবারের অসহায় কোনো সদস্যকে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে নেওয়ার আবেদন করেন, তাহলে ফি দিতে হয় ৩ হাজার ২৫০ পাউন্ড (প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা)। অথচ এই ভিসা আবেদনপ্রক্রিয়ায় সরকারের খরচ হয় মাত্র ৪২৩ পাউন্ড (প্রায় ৪৫ হাজার টাকা)। এ ছাড়া স্থায়ী বাসের আবেদনের জন্য ফি দিতে হয় ২ হাজার ২৯৭ পাউন্ড (প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা)। অথচ এই আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সরকারের খরচ হয় সর্বোচ্চ ২৫২ পাউন্ড (২৫ হাজার টাকা)। শিক্ষার্থী ভিসা, কর্মী ভিসা বা পারিবারিক ভিসাসহ সব আবেদনের ফি বছর বছর বাড়িয়ে চলেছে যুক্তরাজ্য। কোনো কোনো ভিসার আবেদন ফি গত বছর এক লাফে ২২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
প্রতিবেদনে তাইওয়ানের বংশোদ্ভূত এক নবদম্পতির অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরা হয়। অ্যান্ড্রু হ্যান্ডারসনের নববিবাহিতা স্ত্রী ভ্রমণ ভিসায় যুক্তরাজ্যে আসেন। ওই ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে স্ত্রীর জন্য পারিবারিক ভিসার (ডিপেনডেন্ট) আবেদন করেন। ফি দিতে হয় ১ হাজার ৫৮৩ পাউন্ড (প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা)। কিন্তু তাঁদের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দিয়ে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে ভ্রমণ ভিসা থেকে পারিবারিক ভিসায় স্থানান্তরিত (সুইচ) হওয়ার নিয়ম নেই।
অ্যান্ড্রু হ্যান্ডারসন ‘গার্ডিয়ান’কে বলেন, ভিসা আবেদন করতে গিয়ে আবেদনপত্র বা কোথাও তিনি পাননি যে ভ্রমণ ভিসায় যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে পারিবারিক ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে না। কিন্তু তথ্যটি দেওয়া আছে অন্য জায়গায়। তিনি আরও বলেন, অনলাইন আবেদনে তাঁর স্ত্রীর ভ্রমণ ভিসার তথ্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের থামিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। এখন তাঁর স্ত্রীকে তাইওয়ানে গিয়ে নতুন করে আবেদন করতে হচ্ছে। আবেদন ফিও দিতে হবে আবার।
কয়েক মাস আগে কেবল ভিসা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফি চালু করে সমালোচিত হয় যুক্তরাজ্য। বিদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের ভিসা অফিসে ই-মেইল পাঠানোর বিনিময়ে ৫ দশমিক ৪৮ পাউন্ড (প্রায় ৬০০ টাকা) ফি চালু করে ব্রিটিশরা।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাড়তি ফি আদায়ের বিষয়টি সঠিক এবং যাঁরা ভিসা প্রক্রিয়া থেকে উপকৃত হচ্ছেন, তাঁদের কাছ থেকে যথাযথ অবদান নিশ্চিত করাই এর লক্ষ্য। আয়ের সংস্থান এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার মধ্যে সমন্বয় করার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button