সাবেক ফুটবলার গ্যারি লিনেকার

‘রিফিউজি ছাড়া ব্রিটেন ব্রিটেনই থাকবে না’ (ভিডিও)

সাবেক ফুটবলার গ্যারি লিনেকার সম্প্রতি ব্রিটেনে ‘ন্যাশনাল ফিশ এন্ড চিপস ডে’ উপলক্ষে আয়োজিত এক টিভি অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘শরণার্থী ছাড়া ব্রিটেন ব্রিটেনই থাকবে না’। ঐদিন তিনজন ব্রিটিশ তারকাসহ ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি একটি নতুন ফিল্মের উদ্বোধন করেন, যাতে মাছ ও চিপসের জন্য শরণার্থীরা কেনো ধন্যবাদার্হ, তা ব্যাখা করা হয়। ম্যাচ অব দ্য ডে-এর উপস্থাপক সাবেক ফুটবলার গ্যারি লিনেকার, কমেডিয়ান জো ব্রান্ড এবং অভিনেত্রী, গায়িকা ও শরণার্থী ইয়াসমিন কাদি ফ্লাইড ফিশ ও চীপসের উদ্ভবের ইতিহাস তুলে ধরেন।

লিনেকার বলেন, একটি প্রকৃত ব্রিটিশ ডিশ। পেছনে ব্রিটিশ পতাকা শোভিত হয়ে একটি ক্যাফেতে বসা। মাছ ও চিপস, যা একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান, ডোজনের আনন্দ-এসব ছাড়া ব্রিটেন ব্রিটেনই নয়। এক পর্যায়ে অনুষ্ঠানে অ্যানিমেটেড ফিশ ও চিপস (মাছ ও চিপসের কার্টুন চিত্র) টিভি উপস্থাপককে বলে যে, তাদেরকে যুক্তরাজ্যে এনেছে শরণার্থীরা, যারা এ দু’টির সমন্বয় সাধনও করেছে।
লিনেকার বলেন, শরণার্থী ছাড়া ব্রিটেন ব্রিটেনই থাকবে না। ভিডিও চিত্র অর্থাৎ ফিল্মটি ক্যাফের দরোজায় ‘শরণার্থীদের স্বাগতম’ চিহ্ন প্রদর্শনের মধ্যে দিয়ে সমাপ্ত হয়। এই এক্স-লাইসেস্টার, এভার্টন, বার্সেলোনা ও টোটেনহ্যাম স্ট্রাইকার বলেন, একজন শরণার্থীকে থাকার জায়গা দিতে তিনি মোটেই উদ্বিগ্ন নন এবং এসব ব্যাপারে তার কোন ধারনা নেই যে, কে কার সাথে বাস করবে কিংবা কোথা থেকে সে এসেছে।
তিনি আরো বলেন, বিগত বছরগুলোতে শরণার্থীদের সাথে আমার এতো সম্পর্ক যে, ফুটবল স্কীমসমূহের মাধ্যমে অনেক তরুন শরণার্থীর সাথে সাক্ষাত ঘটেছে এবং তারা আসলেই ছেলেমেয়েদের ভালোবাসে ও কোন সহায়তা পেলে তারা এর প্রশংসা করে।
৫৯ বছর বয়সী মি: লিনেকার জনৈক শরণার্থীকে স্থান দেয়ার লক্ষ্যে তার আবেদনপত্রের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষার প্রেক্ষাপটে ভিডিওটি এসেছে।
তিনি বলেন, আমি এ ধরনের কিছু করার কথা ভাবছি। আমার সন্তানেরা সবাই বড়ো হয়ে গেছে, তাই আমার যথেষ্ট সুযোগ আছে। যদি আমি অস্থায়ী ভিত্তিতে সহায়তা করতে পারি, আমি আরো বেশী আনন্দিত হবো।
লিনেকার ‘রিফিউজি এট হোম’ নামক দাতব্য সংস্থার সাথে জড়িত। তার আবেদনটি অনুমোদনের পূর্বে তিনি সংগঠন থেকে একটি সাক্ষাতকার ও হোম ভিজিট করবেন।
আইআরসি ফ্রাইড ফিশ খাদ্যটি মূলত: ষোড়শ শতকে নির্যাতন থেকে বাঁচতে পর্তুগাল ও স্পেন থেকে পালিয়ে আসা ইহুদী শরণার্থীরা ব্রিটেনে চালু করেন। আপরদিকে ফ্রান্সে প্রথম চিপস ভাজা হয় সতেরো শতকে এবং একই সময়ে ধর্মীয় নির্যাতন থেকে বাঁচতে ফরাসী প্রোটেস্টান্ট কিংবা হিউগনটরা যুক্তরাজ্যে পালিয়ে আসার সময় সাথে করে তাদের ফ্রাইড পটেটো অর্থাৎ ভাজা আলুর স্বাদ নিয়ে আসে। আর অপর এক অভিবাসী জোসেফ মালিন ফিশ ও চিপসের সমন্বয় সাধন করেন। তিনি ১৮ শতকের ষাটের দশকে লন্ডনের ইস্ট এন্ডে দেশের প্রথম ‘ফিশ এন্ড চিপ শপ’ চালু করেন।
‘ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও ডেভিড মিলিব্যান্ড বলেন, যখন আমরা ইতিহাসের বইগুলোর দিকে মনোনিবেশ করি, তখন এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ব্রিটিশ সমাজকে রূপদানে রিফিউজিরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা একটি সম্পদ, হুমকি নয়।
কমেডিয়ান জো ব্রান্ড বলেন, ‘ফিশ ও চিপসের অস্বাভাবিক উদ্ভবের বিষয়টি আজকের দিনের জন্য একটি শিক্ষা। যখন আমরা শরণার্থীদের স্বাগত জানাই, তখন তারা বিকশিত হয়, তারা আমাদের কমিউনিটিগুলোকে অধিক মজবুত ও গতিশীল করে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button