যুক্তরাজ্যে বেকারত্ব এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চে

কভিড-১৯ মহামারীতে যুক্তরাজ্যে বেকারত্বের হার বাড়ছেই। এবার গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বেকারত্বের কবলে যুক্তরাজ্য। গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে দেশটিতে বেকারত্ব রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। অফিস ফর দ্য ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস (ওএনএস) জানায়, তিন মাসে ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ কর্মহীন হয়েছেন। ২০০৯ সালের পর তিন মাসে এত মানুষের কর্মহীন হওয়ার নজির নেই।

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক সংকট কতটা গভীর হয়েছে, তা এই চিত্র থেকেই বোঝা যাচ্ছে। কমবয়সী কর্মী, বেশি বয়সী কর্মী আর অপেক্ষাকৃত কম দক্ষরাই বেশি চাকরি হারিয়েছেন বলে জানায় ওএনএস। দীর্ঘ ছুটি কিংবা সাময়িক ও অবৈতনিক ছুটিতে থাকা লাখ লাখ মানুষকে অবশ্য কর্মহীন হওয়ার এই তালিকায় যুক্ত করা হয়নি। তাদের এখনো বেকার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না।
ওএনএস এর উপ-পরিসংখ্যানবিদ জোনাথন অ্যাথো বলেন, ‘২৪ বছরের কম বয়সী, অপেক্ষাকৃত বয়স্ক আর অপেক্ষাকৃত অদক্ষ ও দিনমজুর শ্রেণীই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা খুবই উদ্বেগের, কারণ অন্যদের মতো এসব কর্মীর আবারো নতুন কাজ খুঁজে নেয়া খুবই কঠিন হবে।’
করোনাভাইরাস মহামারী যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে বিরাট ক্ষত তৈরি করে দিয়েছে। যদিও বেকারত্ব নিয়ে যতটা শঙ্কা ছিল ততটা হয়নি, কারণ বহুসংখ্যক ফার্ম তাদের স্টাফদের লম্বা সময়ের জন্য ছুটিতে পাঠিয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনের মাসগুলোতে বেকারত্ব পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এবং ঘটতে পারে অপ্রত্যাশিত কিছু। রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে। শুধু জুন মাসেই ১ লাখ ৪০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে।
২৯ বছর বয়সী থিয়েটার টেকনিশিয়ান শার্লট বেকার করোনাভাইরাস সংকটের কারণে কর্মহীন। গত সেপ্টেম্বর মাসে ক্রাইডনের ফেয়ারফিল্ড হলে নতুন চাকরিতে যোগ দেন তিনি, যদিও গত মার্চে দীর্ঘ ছুটিতে পাঠানো হয়। পরে গত জুন মাসে ছাঁটাইয়ের চিঠিও পান তিনি। ফেয়ারফিল্ড হল বলছে, আগামী এপ্রিলের আগে প্রতিষ্ঠানটি নতুন করে খোলা হচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়েই তাকে ক্যারিয়ার পাল্টাতে হচ্ছে। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘এটা খুবই কঠিন এক সংগ্রামের ব্যাপার এবং আগের চেয়ে সামনেই কঠিন পরিস্থিতি আসছে। ইতিবাচক চিন্তা করাই এখন কঠিন।’
কাঠের কাজের (ছুতোর) একটা কোর্স করার পরিকল্পনা করছিলেন শার্লট, যদিও সিটি ও গিল্ড কোয়ালিফিকেশন এর এই ট্রেনিংয়ের জন্য তার ৫ হাজার পাউন্ড লাগবে।
৩১ বছর বয়সী জন-এলিস-ফ্লেমিং চাকরি হারিয়েছেন লকডাউন শুরুর আগে। তিনি মানবসম্পদ প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। তার সংকট বাড়িয়েছে আরেকটি কারণ। ঠিক একই সময় মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছেন তার স্ত্রী জুলিয়া প্যাটারসন, যিনি স্বামীর একই বিভাগে চাকরি করতেন। কন্যা ডেইজির জন্মের সময় থেকেই বেকার বাবা, আর মাও ছুটিতে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button