হোম অফিস ডকুমেন্টবিহীন লোকজন থেকে শুধু ফায়দা হাসিল করছে

সাতবীর সিং: গত সপ্তাহে ন্যাশনাল অডিট অফিস এই মর্মে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যে, ইমিগ্রেন্ট স্ট্যাটাস অর্জন ছাড়াই যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী লোকের সংখ্যা সম্পর্কে সরকারের গৃহীত বিগত পরিসংখ্যান থেকে ইতোমধ্যে কমপক্ষে ১৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এই অফিসের এমন কোন হিসাব নেই ঠিক কতগুলো পরিবার বৈরী পরিবেশে হুমকির মধ্যে আছে কিংবা কতোজন পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের তাদের জ্ঞাত একমাত্র বাড়ি থেকে বাইরে নিক্ষেপ করা হবে না বলে তাদের পুনরায় নিশ্চিত করতে অক্ষম।

এবং যদিও আমরা পরিসংখ্যানটি জানি না, (গবেষকদের হিসাব অনুযায়ী তা ৪ লাখ এবং ১০ লাখের মধ্যে, যারা যুক্তরাজ্যে বসবাস করলেও এখনো তারা সঠিক কাগজপত্র পায়নি) তবুও আমরা জানি এটা কী লুকোবে। আমরা জানি যে, যথাযথ কাগজপত্র ছাড়া যে সব লোক এখনো বাস করে তাদের অধিকাংশের সম্ভবত: বলার মতো কিছু বিষয় আছে।
আদম (৩৮)-এর লোক যারা ১২ বছর যাবৎ সেবাদানকারী হিসেবে কাজ করেছে কিন্তু ৫ বছরের কম সময় হয়েছে ডকুমেন্টকৃত হওয়ার। হোম অফিসের আকাশচুম্বী ফী সঞ্চয়ের পর, আদমের ভিসা নবায়নের আবেদন একটি টেকনিক্যাল কারণে প্রত্যাখ্যাত হয়। তিনি মালয়েশিয়ায় যান তার পিতাকে সমাহিত করতে এবং এভাবে তিনি তার রেসিডেন্সীর আবশ্যকীয়তা লংঘন করেন।
দুঃখজনকভাবে, এটা একটি অস্বাভাবিক ঘটনা নয়, লোকজনকে ডকুমেন্ট পেতে উৎসাহিত করতে এবং এই প্রক্রিয়াকে কার্যকর ও লভ্য করার পরিবর্তে, হোম অফিস প্রায়শ: লোকজনকে মই থেকে লাথি দিয়ে ফেলে দেয়ার কাজটি ত্বরান্বিত করছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে, এ যেনো এক ধরনের ব্লাড স্পোর্টস যাতে কেউই জয়ী হয় না।
আমরা এ ব্যাপারে সম্মত হতে পারি যে, জীবণ জটিল ও গোলযোগপূর্ণ এবং কেউ যেখান থেকেই আসুক, খাপে খাপে সব কিছু মিলবে না। এবং যদি সে কোথাও একটি জীবণ গড়ে তুলে, তার জন্য এটা প্রত্যাশা করা অস্বাভাবিক যে, সে শুধু এটা ঐ মুহূর্তে ত্যাগ করবে যখন সে একটি প্রো-ফরমা অর্থ্যাৎ মোকাবেলা পত্র পাবে, যাতে লেখা, তোমাকে চলে যেতে হবে।
আদমের পুনরায় আবেদন করার কিংবা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেন্জ করার জন্য আইনজীবির অর্থ পরিশোধের সামর্থ্য ছিলো না। মালয়েশিয়ায় তার কোন পরিবারও ছিলো না এবং এখানে যুক্তরাজ্যে একটি শিশু অবস্থায় এসেছিলো, সে হয়ে পড়েছিলো একজন ওভারস্টেয়ার অর্থাৎ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থানকারী।
যদি সরকারী কর্মকর্তা নিয়মভঙ্গের জন্য ধরা খান, আমি শুনতে পাই এটা এখন একটি গ্রহনযোগ্য আত্মরক্ষার বয়ান যে, তিনি ‘তাই করেছেন, যা তার পিতা করতেন’। আমি মনে করি, যদি আমাদের কেই আদমের অবস্থায় পড়তেন, তবে আমরাও তা-ই করতাম।
আমরা জানি যে, রেগুলার স্ট্যাটাসে ফিরে যাওয়ার পথ অনাবশ্যকীয়ভাবে দীর্ঘ এবং এটা থেকে লোকজনকে দূরে রাখার জন্য পরিকল্পিত। যদি কেউ কাগজপত্রহীন কিংবা ওভারস্টেয়ার হয়, তবে তাকে তার স্ট্যাটাস নিয়মিতকরণের সক্ষমতা লাভের শুরুর পূর্বে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এটা এমন একটি প্রক্রিয়া, যাতে অন্তত: আরো একটি দশক লেগে যাবে।
বর্তমান অভিবাসন নীতিমালা (উভয় প্রধান দলের সরকারগুলোর তৈরী) অনুযায়ী একজনকে তখন পুনরায় আবেদন করতে হবে, হাজার পাউন্ড ফী পরিশোধ করতে হবে এবং তাকে ১০ বছর ব্যাপী প্রতি আড়াই বছর পর হোম অফিসের বিভ্রাটপ্রবণ সিদ্ধান্ত প্রণয়নকারীর নিকট নিজেকে দাখিল করতে হবে যতক্ষণ না তিনি অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকার অনুমতি পাচ্ছেন।
গোটা পদ্ধতিটি হোম অফিসে অর্থ নিয়ে আসা এবং ডকুমেন্টবিহীন লোককে ধরে রাখা ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্য সাধন করছে না। কে বলবে যে, সে অধিক নিরাপদ বোধ করছে, অধিক যত্ন পাচ্ছে কিংবা দেশ নিয়ে অধিক গৌরব বোধ করছে, আমরা যাদের সাথে এমন আচরণ করছি প্রতিদিন?
লেখক: প্রধান নির্বাহী, জে সি ডব্লিউ আই

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button