৪২ ধাপ এগিয়ে ছয় নম্বরে উঠে এসেছে

বিশ্বসেরা উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের তালিকার প্রথম সারিতে হুয়াওয়ে

চলতি বছরের সেরা ৫০টি উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ৪২ ধাপ এগিয়ে ছয় নম্বরে উঠে এসেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) অবকাঠামো সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ (বিসিজি) সম্প্রতি এই তালিকা তৈরি করে। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ প্রকাশিত নতুন এ প্রতিবেদনে অ্যাপল, অ্যালফাবেট, অ্যামাজন, মাইক্রোসফট ও হুয়াওয়ে তালিকার প্রথম ছয়টি স্থানে রয়েছে এবং এর পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে আলিবাবা, আইবিএম, সনি ও ফেসবুক।

নতুন এ র‍্যাংকিং তৈরিতে উদ্ভাবন সংশ্লিষ্ট আড়াই হাজারের বেশি নির্বাহীর মধ্যে জরিপ পরিচালনা করা হয় এবং চারটি মানদণ্ডের নিরিখে প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল্যায়ন করা হয়। মানদণ্ডগুলো হলো: সারা বিশ্বের গ্রাহক ও ভোক্তাদের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির গ্রহণযোগ্যতা, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট খাতে উদ্ভাবন, খাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সংশ্লিষ্ট খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান । এ বছর এক্ষেত্রে নতুন করে আরো একটি মাপকাঠি যুক্ত করেছে বিসিজি; আর তা হলো প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈচিত্র্যময়তা এবং নতুন ধারণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা এবং পাশাপাশি ব্যবসায়িক খাতের প্রতিকূলতা দূরীকরণে নিজেদের সক্ষমতা এবং নিজদের সেবার বাহিরে গিয়ে অন্য পণ্য বা সেবা খাতে ভূমিকা রাখা।
বিশ্বের বৃহত্তম টেলিযোগাযোগ সরঞ্জামাদি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে হুয়াওয়ে প্রতিনিয়ত এর বার্ষিক রাজস্বের ১০ শতাংশেরও বেশি গবেষণা ও উন্নয়নে (আরঅ্যান্ডডি) ব্যয় করে। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটির আরঅ্যান্ডডি বাবদ সর্বমোট খরচ হয়েছে ১৩১,৬৫৯ মিলিয়ন চীনা ইউয়ান, যা প্রতিষ্ঠানটির সর্বমোট রাজস্বের ১৫.৩ শতাংশ।
ফাইভজি প্রযুক্তি নিয়ে হুয়াওয়ে গত দশকে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে, যা প্রতিষ্ঠানটিকে পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তির বিকাশে নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে পরিণত করেছে। ফাইভজির বাণিজ্যিক ব্যবহার ও ফাইভজি অ্যাপ্লিকেশনগুলোর নতুন নতুন উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করতে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী মোবাইল অপারেটরগুলোর সাথে যৌথভাবে ফাইভজি উদ্ভাবন কেন্দ্র তৈরি করেছে।
বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈশ্বিক এ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নিজের উদ্ভাবন ১.০ মডেলকে উদ্ভাবন ২.০ এ সংস্করণ করছে, যা প্রচলিত কার্যক্রম পরিচালনা ও নতুন প্রযুক্তির বিকাশের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য নিয়ে আসবে এবং প্রতিষ্ঠানটিকেও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে নেবে।
কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারি রুখতে হুয়াওয়ে তাদের উদ্ভাবনমুখী প্রচেষ্টাকে আরো বেগবান করেছে এবং এর অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি কোভিড-১৯ পার্টনার প্রোগ্রাম চালু করেছে যার মূলে রয়েছে এআই, রিমোট অফিস, স্মার্ট হেলথকেয়ার ও অনলাইন শিক্ষা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রতিষ্ঠানটির এআই-অ্যাসিসটেড রোগনির্ণয়ের বিষয়ের মাধ্যমে সিটি (কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি) এর পরিমাণগত ফলাফল কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পাওয়া যায়, যা সম্মুখসারির চিকিৎসা কর্মীদের কোভিড-১৯ শনাক্তে সহায়তা করে।
বিসিজি প্রতিবেদনের রচয়িতা বলেন, ‘যখন আমরা বিসিজি’র সেরা উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত প্রতিবেদনের চতুর্দশ সংস্করণ তৈরির জন্য গবেষণা শুরু করি তখনও কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়নি। আমাদের গবেষণাকালে এবং ক্লায়েন্টদের সাথে আলোচনায় তখনই স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, এ বছরের মূল বিবেচনার ক্ষেত্রে অগ্রগতি ত্বরান্বিতকরণ ও ধারাবাহিকভাবে উদ্ভাবন নিয়ে আসা বর্তমান সময়ের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। কেননা, পণ্য বা সেবা সরবরাহ, চাহিদা, ভোক্তাদের ব্যবহার এবং সর্বোপরি ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন ক্ষেত্রগুলোর সাথে মানিয়ে নিতে উপরোক্ত বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button