ব্রিটিশ ন্যাশনাল অডিট অফিস

অবৈধ অভিবাসন হ্রাসে হোম অফিসের তৈরী নীতিমালা কার্যকর, এমন কোন প্রমাণ নেই

হোম অফিস এমন কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি যাতে তার বৈরী পরিবেশ নীতিমালা অবৈধ অভিবাসন হ্রাসের লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে কিংবা কোন নতুন রিপোর্টেও তা প্রতীয়মান হয়নি। ২০১২ সালে থেরেসা মে অভিবাসীদের জন্য একটি প্রকৃত বৈরী পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈধ বাসিন্দাদের ভুলভাবে টার্গেটকরণ এবং অরক্ষিত লোকজনকে মৌলিক সেবাসমূহ লাভে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য সমালোচনার জন্ম দেয়।
২০১৮ সালে উইন্ডরাশ কেলেংকারীতে প্রকাশ পায় হাজারো কমনওয়েলথ নাগরিক, যারা দশকের পর দশক ব্যাপী ব্রিটেনে সেটেলড্ তাদেরকে এই বৈরী পরিবেশের কারণে অবৈধ নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এদের মধ্যে ১৬০ জনেরও বেশী লোককে ভুলভাবে বহিষ্কারও করা হয় শেষ পর্যন্ত ।

এমন জটিল পরিস্থিতিতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডিপার্টমেন্ট কেলেংকারির আলোকে পুনঃনামকরণকৃত ‘বাধ্যকর পরিবেশ’ মূল্যায়ণের সর্বোত্তম পন্থাসমূহ অবলম্বন করছে,যাতে নীতিটি ‘সঠিক’ বলে নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু ন্যাশনাল অডিট অফিস (এনএও)-এর তদন্তে প্রকাশিত হয় যে, হোম অফিস এটা স্বীকার করেছে যে, এটা এখনো এ বিষয় পরিমাপ করতে অক্ষম যে তারা লোকজনের স্বেচ্ছায় ত্যাগে উৎসাহিত করতে কাংখিত ফল লাভ করেছে কি-না এবং ফলে যখন এই নীতিমালা চালু করা হয়, তখন সেগুলোর কার্যকারিতার সহায়ক কোন সুনির্দিষ্ট প্রামাণিক ভিত্তি নেই।
আইনজীবি ও প্রচারাভিযানকারীরা বলেন, এটা অভিবাসন পদ্ধতীর একটি ‘নিন্দনীয় অভিযুক্তকরণ’যে, উইন্ডরাশ কেলেংকারির আলোকে নীতিটির কোন মূল্যায়ন হয়নি এবং এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বহু সংখ্যক পর্যালোচনা প্রকাশিত হয়েছে ।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে হোম অফিসের নিজস্ব ওয়াচডগ ‘বোডার্স ও ইমিগ্রেশনে’র নিরপেক্ষ চীফ ইন্সপেক্টর কর্তৃক দাখিলকৃত এক প্রতিবেদনে এই মর্মে সতর্ক করেন যে, বৈরী পরিবেশ সরকারের প্রত্যাশা পূরণ করছে কি-না সে ব্যাপারে পর্যাপ্ত নিরেট প্রমাণ নেই, যখন মূল পদক্ষেপসমূহের জন্য কোন টার্গেট নেই এবং এগুলোর মূল্যায়ণের জন্য সামান্যই কাজ করা হয়েছে ।
২০২০ সালের মার্চে প্রকাশিত ‘উইন্ডরাশ লেসন্স লার্নড’পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, নীতিটির মূল্যায়ণে মিনিষ্টারিয়েল প্রতিশ্রুতিসমূহ পূরণ করা হয়নি এবং হোম অফিসের প্রতি বৈরী বা বাধ্যকর পরিবেশ নীতি ও পদক্ষেপসমূহের একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন গ্রহণে সিভিল সার্ভেন্টদের নিয়োগের আহবান জানানো হয়।
এনএও-এর প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, যুক্তরাজ্যে কতোজন লোক ডকুমেন্টহীন এর কোন হিসাব ডিপার্টমেন্টের কাছে নেই, ১৫ বছর যাবৎ অবৈধ লোকজনের সংখ্যাও গণনা করা হয়নি এবং লোকজনের প্রায় যে দুই তৃতীয়াংশকে বহিষ্কারের উদেশ্যে আটক করা হয়, তাদেরকে পরে মুক্তি দেয়া হয় -এই সংখ্যা গত বছর ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এতে আরো দেখা যায়, বহিষ্কারের ফ্লাইটসমূহের জন্য হোম অফিস ১৪ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করে, যা ৫ বছরের মধ্যে ঘটেনি, এতে বহিষ্কৃত এবং তাদের এসকোর্টদের জন্য ২১৩০০টি টিকিটের ব্যবস্থা করতে হয় এর সাথে সমানতালে মুক্তিপ্রাপ্তদের জন্য প্রতিদিন ১১৭টি টিকেট বাতিল করা হয়।
এনএও’র প্রধান গেরেথ ডেভিস বলেন, অবৈধ জনসংখ্যা এবং এর ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে ডিপার্টমেন্টের উচিত তার অভিবাসন বাস্তবায়ন কর্মকান্ডের প্রভাব প্রতিক্রিয়া অনুধাবনে একটি উত্তম অনুধাবনের পন্থা অবলম্বন করা।
হোম অফিসের জনৈক মুখপাত্র বলেন, ওয়েন্ডি উইলিয়ামসের অনুরোধক্রমে, যিনি তড়িঘড়ি উত্তর প্রদানের প্রবণতার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন, আমরা চিন্তা ভাবনার জন্য একটি সময় গ্রহণ করেছি এবং সকল পর্যায়ের স্টাফদের সাথে সম্মিলিতভাবে পরিবর্তনের জায়গাগুলো শনাক্তকরণে জড়িত রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেপ্টেম্বরের শেষে প্রতিবেদনটির একটি জবাব দিতে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button