যুক্তরাজ্যে সতর্কতা জারি

তীব্র তাপে পুড়ছে ইউরোপ, স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি

তীব্র তাপপ্রবাহে নাকাল ইউরোপ। রীতিমতো ফোস্কাপড়া গরম পড়ছে বলতে হবে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, যুক্তরাজ্যে, ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালের কিছু কিছু অঞ্চল থেকে মানুষদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ইউরোপের কিছু কিছু অঞ্চলে দাবানল দেখা দিয়েছে। ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শুরু হওয়া দুটি দাবানল অনেকটা ছড়িয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার থেকে এ দুই অঞ্চলের আগুন নেভাতে দেশটির হাজারের বেশি দমকলকর্মী কাজ করছেন। এমনকি বিমানযোগে পানি ছিটিয়েও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। তীব্র তাপপ্রবাহ ও বাতাসের কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে।
গত কয়েক দিন ধরেই বিশেষত যুক্তরাজ্যে, ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালের কিছু অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। পর্তুগালের স্থানীয় সময় শুক্রবার তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও এখনো দেশটির কিছু এলাকায় তা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। দেশটির পাঁচটি জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। আর ছড়িয়ে পড়া ১৩টি দাবানল মোকাবিলায় নিযুক্ত রয়েছেন হাজারের বেশি দমকলকর্মী। আর স্পেনের দমকলকর্মীরা ১৭টি দাবানল মোকাবিলা করছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
এ পরিস্থিতিতে দেশগুলোর সরকার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। রয়টার্স জানায়, ইউরোপ বিশেষত এই তাপপ্রবাহ নিয়ে ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়েছে। তারা বলছে, কোভিড-১৯ এর কারণে তাদের স্বাস্থ্য খাত এমনিতেই বড় ধকলের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে এই তাপপ্রবাহ তাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
দুশ্চিন্তা বেশি যুক্তরাজ্যের। কারণ আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে, সামনের দিনগুলোয় যুক্তরাজ্যে তাপপ্রবাহ আরও বাড়তে পারে। যুক্তরাজ্যজুড়ে তীব্র দাবদাহের কারণে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর সতর্কতা জারি করেছে। আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, আগামী সপ্তাহের বেশিরভাগ সময় দাবদাহ থাকবে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে গরম থাকবে সবচেয়ে বেশি।
এদিকে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) জানিয়েছে, তাপপ্রবাহের কারণে বায়ুমণ্ডলের দূষক পদার্থগুলো আর সরে যেতে পারবে না। এতে বিশেষত ছোট ও বড় শহরগুলোর বাতাসের মান নেমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএমওর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা লরেঞ্জো ল্যাব্রাডোর বলেন, ‘স্থির বায়ুমণ্ডল দূষক বস্তুকে আটকে ফেলার ফাঁদের মতো কাজ করে। এতে বায়ুমানে বড় অবনমন হয়, স্বাস্থ্যের ওপর যার নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। বিশেষত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাবে।’
এরই মধ্যে বেশ কিছু অসুস্থতাজনিত মৃত্যু হয়েছে। রয়টার্সের তথ্যমতে, পর্তুগালে গত ৭ থেকে ১৩ জুলাই সময়ের মধ্যে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ‘ভীষণ উদ্বেগজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button