হাসপাতালেই বাসর, চলে গেলেন স্বামী

দুই বছর সম্পর্কের পর বিয়ে করেছিলেন প্রেমিক-প্রেমিকা। কিন্তু বাসর ঘরেই স্ত্রীকে একা ফেলে চিরবিদায় নেন স্বামী। ঘটনার আকস্মিকতা বুঝতে দেরি হয়নি স্ত্রীর। বধূবেসেই বসেছিলেন মৃত স্বামীর পাশে।

ঘটনাটি ঘটেছে ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলে, লওরেন্সে। সেখানকার বাসিন্দা স্কট প্লামরি (৪১) তার বাগদত্তা মিশেল হোয়াইটকে (৩২) নিয়ে আনন্দে জীবন কাটাচ্ছিলেন। কয়েকদিন আগে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যে খাদ্যনালীর অসুখে পড়েন স্কট। মিশেল তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর এনডোস্কপি পরীক্ষায় ধরা পড়ে, মরণব্যাধি ক্যাসনারের শেষ পর্যায়ে রয়েছেন স্কট।

মিশেল ভেবেছিলেন অন্তত একমাস বাঁচবেন তার বাগদত্তা। কিন্তু রোগটা যকৃতে ছড়িয়ে পড়ায় তার বেঁচে থাকার সময়টাও নির্ধারণ করে দিতে পারছিলেন না চিকিৎসকরা। এর মধ্যেই স্কটকে বিয়ে করেন মিশেল।

মিশেল বলেন, ‘‌আমি চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসা করি কতদিন স্কট বাঁচবে?‌ আমি আশা করছিলাম একমাস বা তার একটু বেশি হয়ত ও বাঁচবে, আমি অন্তত তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারব। কিন্তু চিকিৎসকরা আমায় হতাশ করে দিয়ে জানান একসপ্তাহও নয়, এমনকী হয়ত একদিনও নয়।’‌

চিকিৎসকরা মিশেলকে জানান যে এখন কোনো ওষুধ, কিংবা কেমো কাজে দেবে না। তাই ভালোবাসার মানুষটিকে শেষ কয়েকটা দিন চোখের সামনে রাখতেই ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে বিয়ে করেন তিনি। রেজিস্টার অফিসে গিয়ে রেজিস্টারকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন মিশেল।

মিশেল বলেন, ‌আমি ২০ ঘণ্টার মধ্যে বিয়ের সব প্রস্তুতি সেরে ফেলি। সকলেই খুব উদার মনোভাব দেখিয়েছেন। আমার এক বন্ধু ফুল ও কেক নিয়ে আসেন। আমার এক প্রতিবেশী আমায় চুল বেঁধে দেয়। বিয়ের প্রথা অনুযায়ী শপথ নেওয়ার সময় যাজক স্কটকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘তুমি কি এই নারীকে নিজের স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করবে?‌’‌ তখন স্কট খুব জোরেই বলেন, ‘‌নিশ্চয়ই আমি করব।’‌ তবে এই খুশির মুহূর্ত ছিল মাত্র কিছুক্ষণের জন্যই।

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে সবাই ফিরে যান। কিন্তু হাসপাতালে থেকে যান স্কট ও মিশেল। মিশেল বলেন, ‘‌স্কট চাইছিল আমি তার সঙ্গে রাতটা কাটাই। হুইল চেয়ার বিছানার পাশে রেখে স্কট শুয়ে পড়েছিল। আমিও ওর পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। দুজনে মধ্যরাত পর্যন্ত মধুর সময় কাটাই। রাত দেড়টার দিকে স্কট মারা যান।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button