বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৪তম গরিব দেশ

Bangladeshক্রয়ক্ষমতা সাম্যের (পিপিপি) ভিত্তিতে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বিশ্বের দরিদ্র দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান ৩৪তম। নিউইয়র্কভিত্তিক প্রভাবশালী ম্যাগাজিন সাময়িকী গ্লোবাল ফিন্যান্স গত বৃহস্পতিবার একটি তালিকা প্রকাশ করে। মোট দেশজ উৎপাদনের ভিত্তিতে দারিদ্র্য পরিমাপের পরিবর্তে তারা জিডিপি (পিপিপি) পদ্ধতিতে বিশ্বের ধনী ও দরিদ্র দেশের তালিকা নির্ধারণ করে থাকে।
পিপিপির ভিত্তিতে কোনো অর্থনীতিতে পণ্য ও সেবার প্রকৃত উৎপাদনের তুলনামূলক চিত্র পাওয়া যায় বলে অনেক অর্থনীতিবিদ জিডিপি (পিপিপি) হিসাবকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনমান সম্পর্কে অপেক্ষাকৃত সঠিক ধারণা দেয়।
এ পদ্ধতিতে সংস্থাটি তাদের তালিকা প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় ও বৈশ্বিক অর্থনীতি বিষয়েও সম্যক ধারণা অর্জন সম্ভব হয় বলে তারা যুক্তি দিয়েছেন।
তালিকাটিতে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের আগে আফগানিস্তান দশম ও নেপাল ১৯তম অবস্থানে রয়েছে। ভারতের অবস্থান ৫৫ এবং পাকিস্তানের ৪৭।
তালিকার প্রথম নয়টি দরিদ্র দেশই আফ্রিকা মহাদেশের। মোট ১৪৮টি দেশ নিয়ে তালিকা প্রকাশ করেছে ম্যাগাজিনটি।
জিডিপির ভিত্তিতে দারিদ্র্য পরিমাপে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনামূলক আলোচনায় অনেক ঘাটতি থাকে বলে জিডিপি (পিপিপি) ভিত্তিতে দারিদ্র্য নির্ণয় করে আসছে গ্লোবাল ফিন্যান্স ম্যাগাজিন।
তালিকা থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপির (পিপিপি) পরিমাণ ২ হাজার ১৭৪ ডলার। আফগানিস্তান ও নেপালে এর পরিমাণ যথাক্রমে ১ হাজার ৭২ ও ১ হাজার ৩৪২ ডলার।
পাকিস্তান ও ভারতের মাথাপিছু জিডিপির (পিপিপি) পরিমাণ যথাক্রমে ২ হাজার ৯৬৯ ও ৪ হাজার ৬০ ডলার। আর ৭৪তম স্থানে থাকা শ্রীলংকার মাথাপিছু জিডিপির (পিপিপি) পরিমাণ ৬ হাজার ৫৫০ ডলার।
এশিয়ার প্রভাবশালী রাষ্ট্র এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চীনের অবস্থান ৯৫তম। দেশটির মাথাপিছু জিডিপি (পিপিপি) ১০ হাজার ১১ ডলার।
দরিদ্র দেশের তালিকায় ৩৯৪ ডলার মাথাপিছু জিডিপি (পিপিপি) নিয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে কঙ্গো। দ্বিতীয় জিম্বাবুয়ে (৫৮৯ ডলার) এবং তৃতীয় বুরুন্ডি (৬৪৮ ডলার)।
বিশ্বের দরিদ্র দেশের তালিকায় সবার নিচে চেক রিপাবলিক, যাদের ২০১৩ সালের জিডিপি (পিপিপি) ২৭ হাজার ৬৬৯ ডলার।
২০১১ ও ২০১২ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি (পিপিপি) ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ৯০৯ এবং ২ হাজার ৩৯ ডলার।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়নভিত্তিক সংগঠনভুক্ত (ওইসিডি) দেশগুলোর জিডিপি (পিপিপি) আলাদাভাবে পরিমাপ করা হয়।
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এ তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে ম্যাগাজিনটি উল্লেখ করে।
চলতি বছরের জুনে বিশ্বের ধনী দেশগুলোরও একটি তালিকা ম্যাগাজিনটি প্রকাশ করে। তাতে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৫১।
সবচেয়ে ধনী দেশ হিসেবে এক নম্বর অবস্থানে ছিল কাতার, যাদের মাথাপিছু জিডিপি (পিপিপি) ১ লাখ ৫ হাজার ৯১ ডলার।
ম্যাগাজিনটির প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, কোনো অর্থনীতির স্থানীয় মুদ্রাকে একটি সাধারণ মুদ্রায় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবস্থানের তুলনামূলক আলোচনা করা হয়।
তারা আরো উল্লেখ করে, পিপিপির আওতায় রফতানিকৃত অথবা রফতানিবিহীন পণ্যের বিনিময় মূল্যও বিবেচনায় নিয়ে থাকে। বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিমাপ ও স্থানীয় জীবনমানের তুলনামূলক আলোচনার সুবিধার্থে এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। ২০০৫ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোরও অর্থনীতির পরিমাপ এ পদ্ধতিতে শুরু হয়।
তাদের হিসাবে, গালফ অঞ্চলে বিশ্বের ধনী দেশের সংখ্যা বাড়ছে। আর দরিদ্র দেশের সংখ্যা বাড়ছে দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকা অঞ্চলে। বিশেষত আফ্রিকা হতদরিদ্র দশায় আছে বলে জানায় গ্লোবাল ফিন্যান্স ম্যাগাজিন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button