ব্রিটেনের বহু পরিবার মৌলিক সেবা বঞ্চিত

UK Coldবিশ্বের উন্নত ও বিত্তশালী দেশগুলোর মধ্যে সবার আগে যেসব দেশের নাম উঠে আসে তার একটি যুক্তরাজ্য। কিন্তু সেখানেই লাখ লাখ পরিবারের নেই কোন খাবার পানীয় বা বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। সম্প্রতি আলাদা দুটি প্রতিষ্ঠানের জরিপে এমন তথ্য উঠে আসে যাদের একটি সিটিজেন অ্যাডভাইজ।
প্রতিষ্ঠানটির জরিপে দেখা যায়, প্রতিদিন দেশটির ১ লাখ ৪০ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকে। কারণ ওইসব বাড়িতে থাকা দারিদ্র্য-পীড়িত মানুষের পক্ষে প্রিপেইড মিটারের বিল পরিশোধ করা সম্ভব হয়না।
ঠাণ্ডা আবহাওয়াতেও হিটার বা গরম পানি ছাড়া থাকতে হয় এই মানুষগুলোকে। এ কারণে ওইসব পরিবারের শিশু ও বয়স্করা ভোগে নানা রকম ঠাণ্ডাজনিত রোগে।
এ ব্যাপারে সিটিজেন অ্যাডভাইজের প্রধান নির্বাহী গিলিয়ান গাই বলেন, এরকম আবহাওয়ায় এতোগুলো মানুষকে ঠাণ্ডার মধ্যে অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে। কারো সঙ্গে যোগাযোগ করার অবস্থা নেই। এ ধরণের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক যা মানুষকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এমনটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
এ অবস্থায় তিনি দারিদ্র্য-পীড়িত পরিবারগুলোর বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিত করতে জ্বালানি সরবরাহের প্রতি জোর দেয়ার কথা জানান।
সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র বা কাউন্সিল প্রপার্টিতে থাকা এক ব্যক্তি সিটিজেন অ্যাডভাইজকে বলেন, বিদ্যুৎ ছাড়া একা অন্ধকারে থাকার মতো হতাশাজনক আর কিছু নেই। কারণ আপনি না কিছু দেখতে পারছেন, না রান্না করতে পারছেন বা ঘরটা গরম রাখতে পারছেন। মনকে শান্ত করার জন্য বিনোদনের কোন সুযোগ নেই।
অন্যদিকে লিভিং ওয়েজ ফাউন্ডেশন নামে আরেকটি জরিপ সংস্থার প্রতিবেদনে জানা যায়, স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর এক তৃতীয়াংশ অর্থের অভাবে না খেয়ে থাকেন। এছাড়া অর্ধেক পরিবারের পক্ষে বিল পরিশোধ সম্ভব হয়না। ব্রিটিশ সরকার শুরু থেকে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো এবং করের বোঝা কমানোর দাবি জানিয়ে আসলেও, আদতে পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন হচ্ছেনা বলে জানায় সংস্থাটি।
জরিপ সংস্থার পরিচালক টেস ল্যানিং বলেন, জরিপে রিটেনের এক শ্রেণীর মানুষের দুর্বিষহ জীবনের চিত্র উঠে এসেছে। সেসঙ্গে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে দেশটির জীবন-যাপনের ব্যয়ের সঙ্গে আয়ের ভারসাম্যহীনতার বিষয়টি। সরকার যে নূন্যতম আয় বেঁধে দিয়েছে, তা কি আদৌ যথেষ্ট?
ব্যয়ের হিসেবে সঙ্গতিপূর্ণ আয়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই প্রতি ঘণ্টায় লন্ডনে ১০ দশমিক ২০ পাউন্ড এবং অন্যান্য শহরে ৮ দশমিক সাত পাঁচ পাউন্ড মজুরির দাবি করা হচ্ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের জন্য সরকার ন্যূনতম আয় ঘণ্টায় ৭ দশমিক আট তিন পাউন্ড ধার্য করে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button