মুফতী আমিনী (রহ.) স্মরণে দুআ মাহফিল অনুষ্ঠিত

Aminiইসলামী ঐক্যজোটের সাবেক চেয়ারম্যান, ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি ও খেলাফতে ইসলামীর সাবেক আমীর ও সংসদ সদস্য মুফতী আমিনী রহ. এর স্মরণে দুআ মাহফিলে বক্তারা বলেছেন, এদেশের মুসলিম উম্মাহ আজ শোচনীয় ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ইসলামবিরোধী শক্তির বিষাক্ত দন্ত নখরে বিদ্ধ হয়ে মুসলিম জাতি সত্তা বাহ্যিক অবয়বে ক্ষত বিক্ষত হয়ে দিগি¦দিক ছুটাছুটি করছে। ঠিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশের আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন ছিল মুসলিম উম্মাহর সাহসী কান্ডারী মুফতী আমিনী রহ. এর।  কারণ, তিনি জাতীয় ধারার রাজনীতিতে নিজের স্বরব উপস্থিতির মাধ্যমে বর্তমান সময়ের ওলামায়ে কেরামের জন্য এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথে কীভাবে আন্দোলন করতে হয়, দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময়কাল রাজপথে স্বরব ভূমিকা পালন করে ওলামায়ে কেরামকে দেখিয়ে গিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি, এই দেশে তিনি ইসলামী আন্দোলনের যে চারা বপন করে দিয়ে গেছেন, শ্রীঘ্রই তাতে ফল ধরবে, বাংলার জমীনে ইসলামী খেলাফত কায়েম হবে ইনশাআল্লাহ।
বুধবার বিকাল ৩টায় লালবাগস্থ রাজধানীর জামেয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া আল্লামা মুফতী ফজলুল হক আমিনী রহ. এর দারাজাত বুলন্দির উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত দুআ মাহফিল বক্তারা এসব কথা বলেন। ইসলামী ঐক্যজোট মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর। বিশেষ অতিথি ছিলেন, ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান ও খেলাফতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা আবু তাহের জেহাদী, বিশিষ্ট ওয়ায়েজ মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সা’দী, মুফতী মুহাম্মদ তৈয়্যব হোসাইন, মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াছেল, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, খেলাফত মজলিশ নেতা মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা যুবায়ের আহমদ, মাওলানা জসিম উদ্দীন, মাওলানা আব্দুল হাই ফারুকী, মাওলানা ফারুক আহমদ, মাওলানা রিয়াজাতুল্লাহ, মাওলানা গাজী ইয়াকুব, মাওলানা আলতাফ হোসাইন, মাওলানা তাসলীম আহমদ,মাওলানা আব্দুল আজিজ, ছাত্রনেতা আনছারুল হক ইমরান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, তাগুতের বিরুদ্ধে তার উচ্চারণ ছিলো তরবারীর চেয়েও ধারালো। তিনি সাদাকে সাদা, কালোকে কালো ও অত্যাচারী শাসকের সামনে হক্ব কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারতেন। জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে জালিমকে মোকবেলা করতে দেশ, জাতিকে উদ্বুদ্ধ করতেন।  সত্যিকার অর্থেই তিনি ছিলেন একজন আল্লাহওয়ালা বিস্ময়কর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।  কোন কাজ ইসলামী আন্দোলন বা দ্বীনের পরিপন্থী হলে আপোষ শব্দটি তাঁর অভিধানে ছিল অনুপস্থিত।
গত বছরের আলোচিত ১২-১২-১২ আমরা তাঁকে হারিয়েছি। দীর্ঘ একটি বছর নাস্তিকতাবাদী বাতিলশক্তিকে মোকাবেলা করতে গিয়ে বারাংবার তাকেই স্মরণ করেছি। তবে আমরা মনে করি মুফতী আমিনী রহ. এর মৃত্যু ছিল একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হত্যাকান্ড। বর্তমান জালিম শেখ হাসিনা সরকার ইসলাম ও মুসলমানদের পক্ষে আন্দোলন করায় তাঁকে দীর্ঘ ২১ মাস গৃহবন্দী রেখে তিলে তিলে যন্ত্রনা দিয়ে মৃত্যু মুখে ঠেলে দিয়েছিল। আমরা পরিস্কার বলছি, আজ হোক কাল হোক মুফতী আমিনীর উপর সীমাহীন নির্যাতন চালিয়ে হত্যার দায়ে রাঘব বোয়ালদের বিচার বাংলার জমীনেই হবে।
বক্তারা বলেন, মুফতী আমিনীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, চেতনা ও উপলদ্ধিকে সামনে রেখে আমাদেরও শপথ নিতে হবে বাংলাদেশে যারা ইসলামকে ধ্বংশ করে মুসলমানদের ঈমান, আক্বিদা ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে বিদায় করে দিতে চায়। বিপ্লবী হুংকারে গর্জে ওঠে সেসব ইসলাম ও দেশদ্রোহীদের কবর রচনা করতে হবে। সভা শেষে মুফতী আমিনী রহ. এর উপর ‘মুফতী ফজলুল হক আমিনী রহ.; জীবন ও সংগ্রাম’ নামে একটি স্মারকের মোড়ক উস্মোচন করেন বক্তারা।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button