অপ্রতিরোধ্য অস্ত্রের নাম টেলসিটার

Telপদাতিক সেনা, গোলা-বারুদের ভরসায় এখন আর যুদ্ধে জেতা যায় না। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে দরকার এমন অস্ত্রশস্ত্র যা দুশমনের ঘাঁটিতে ঢুকে হামলা চালিয়ে তাদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিতে পারবে। সেই লক্ষেই আমেরিকা এবার এমন এক ড্রোন বানাচ্ছে যা এক কথায় অজেয়। স্থলভাগ কিংবা সাগরে টেলসিটারকে মাত দিতে পারবে না কেউ। এ এক এমন প্রিডেটর যা ওড়ার জন্য দরকার নেই কোনো রানওয়ে। ঠিক তেমনই, মাটিতে নামার জন্যও কোনো ল্যান্ডিং-এর দরকার নেই। লেজে ভর করে যেকোনো জায়গায় নেমে পড়তে পারবে টেলসিটার। টেল বা লেজের উপর ভর দিয়ে ল্যান্ড করতে পারে বলেই এই অত্যাধুনিক ড্রোনের নাম টেলসিটার। দুদিকে দুটি ডানা নয়, একটিই উইং থাকবে অত্যাধুনিক এই মারণাস্ত্রের।
মার্কিন সেনার জন্য এই ড্রোন তৈরির চেষ্টা চলছে সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে, সালটা ১৯৫০। কিন্তু এই প্রথম জনসমক্ষে এল টেলসিটার-এর আধুনিক ডিজাইন। ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রোডাক্টস এজেন্সি বা ডারপা-র জন্য মারনাস্ত্রটি তৈরি করছে বিখ্যাত নর্থরপ গ্রুম্যান সংস্থা। ওই সংস্থাটি আনম্যানড ভেহিকেল বা চালকবিহীন সমরযান তৈরিতে বিশ্বের প্রথম পাঁচটি সংস্থার মধ্যে একটি। ডারপা আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের মধ্যেই টেলসিটার-এর একটি প্রোটোটাইপ মার্কিন সেনাকে জমা দেয়ার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে নর্থরপ-এর সঙ্গে।
কেন টেলসিটার নিয়ে এত রাখঢাক? টেলসিটার একটি সিক্সথ জেনারেশন ফাইটার ওয়েপন। ড্রোন ক্যাটাগরিভুক্ত হলেও টেলসিটার-এর কয়েকটি বৈশিষ্ট অন্যান্য ড্রোনের থেকে তাকে আলাদা করেছে। প্রথমত টেলসিটার লেজার রশ্মি ছুঁড়ে শত্রুকে তছনছ করে দিতে পারবে। ওজনেও হালকা, মাত্র ২৭২ কিলোগ্রাম। যেকোনো সাধারণ যুদ্ধজাহাজ থেকে শত্রুকে তাক করে ছুঁড়ে দিলেই হয়। পাইলটবিহীন বলে যেকোনো উচ্চতায় যতক্ষণ খুশি উড়তে পারে, তাও সুপারসনিক স্পিডে। রেডারে টেলসিটার-এর কোনো অস্তিত্ব টের পাবে না শত্রুরা। লাগাতার কয়েক ঘণ্টা লেজার বিমস ছুঁড়ে টেলসিটার গরম হয়ে গেলে, তা ঠান্ডা করার জন্য রয়েছে বিশেষ কুলিং সিস্টেম। নর্থরপ-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস হার্নান্ডেজ ব্রেকিং ডিফেন্সকে জানিয়েছেন, নয়া ড্রোনটি দূরপাল্লার ফাইটার জেটের মতো কাজ করবে। তাকে পরিচালনা করতে মার্কিন মুলুকের যেকোনো জায়গায় একটি ঘাঁটিই যথেষ্ট। সেখান থেকে গোটা দুনিয়ার যেখানেই ড্রোনটি থাকুক সহজেই চালানো বা উড়ানো যাবে। মোদ্দা কথা, এখন শুধু অপেক্ষা পেন্টাগনের সম্মতির। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মতি মিললেই ২০৩০ সালের মধ্যেই রণক্ষেত্রে দেখা মিলবে টেলসিটার-এর।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button