আমেরিকা বনাম ইসলামের যুদ্ধ আখ্যায়িত করলে তা হবে বড় ভুল

Obamaক্যালিফোর্নিয়ায় হামলার পর জঙ্গি হামলার হুমকি ‘বিপজ্জনক এক নতুন মাত্রায়’ পৌঁছেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্ক করেছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা; অঙ্গীকার করেছেন আইএস ও সব জঙ্গিদলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার।
সান বার্নার্ডিনো শহরের একটি প্রতিবন্ধী সেবাকেন্দ্রে গুলিতে ১৪ জন নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে গত রোববার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ওবামা এই প্রত্যয় জানান বলে বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। তার ভাষণকে বিরল হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই নিয়ে তৃতীয় বার ওভাল অফিস থেকে ভাষণ দিলেন তিনি।
ওবামা বলেন, সান বার্নার্ডিনোয় যা ঘটেছে তা সন্ত্রাস, আর সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য ছিল নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা। কিন্তু ত্রাসের চেয়ে স্বাধীনতা অনেক বেশি শক্তিশালী। হামলাটি সংগঠিত করার পেছনে কোনো বিদেশী শক্তি বা গোষ্ঠীর হাত রয়েছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
প্রেসিডেন্ট তার দেশের মানুষকে সতর্ক করে দেন, এসব হামলার ঘটনায় আমেরিকার সমাজে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন তৈরি হলে প্রকারান্তরে তা উগ্রবাদীদের উদ্দেশ্যই পূরণ করবে। তিনি বলেন, এই যুদ্ধকে ‘আমেরিকা বনাম ইসলামের’ যুদ্ধ আখ্যায়িত করে আমেরিকানরা যদি নিজেদের মুখোমুখি হয় তাহলে তা হবে বড় ভুল।
‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জয়ী হতে হলে আমাদের অবশ্যই মুসলিম কমিউনিটিকে সবচেয়ে শক্তিশালী বন্ধু হিসেবে পাশে রাখতে হবে, সন্দেহ আর ঘৃণায় তাদের দূরে ঠেলে দিলে চলবে না।’ মুসলমান আমেরিকানরা যে মার্কিন সমাজেরেই অংশ, সে কথাও জাতিকে মনে করিয়ে দেন ওবামা।  তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের হুমকি বাস্তব। কিন্তু তা আমরা দমন করবো।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে যত ধরনের ক্ষমতা আছে, প্রয়োজনে তার সবই আইএস এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে কাজে লাগানো হবে। ‘এই সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করতে আমাদের সৈন্যরা প্রয়োজনে বিশ্বের যে কোনো দেশে যাবে।’ তিনি বলেন, ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীকে ধ্বংস করে দেয়া হবে। সেই সঙ্গে দেশের মাটিতে জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও ভিসা ব্যবস্থা নিয়েও কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট।
স্যান বার্নার্ডিনোর হামলার পর পুলিশের অভিযানে সন্দেহভাজন হামলাকারী দম্পতি নিহত হন। এদের মধ্যে সৈয়দ রিজওয়ান ফারুক (২৮) ছিলেন স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের পরিদর্শক। তার স্ত্রীর পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত তাশফিন মালিক (২৭) ভিসা অব্যাহতির সুযোগ নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন। তারা দু’জনেই আইএস এর অনুসারী ছিলেন বলে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এই জঙ্গি দলটি দাবি করেছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button