ইতালির সীমান্ত চৌকিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অনশন ধর্মঘট

Italyবেশ কিছু অভিবাসনপ্রত্যাশী ফ্রান্সে প্রবেশাধিকার না পাওয়ায় ইতালির ভেন্টিমিগলিয়া সীমান্ত চৌকিতে অনশন ধর্মঘট শুরু করেছে। ধর্মঘটে সেখানকার পরিবহন ব্যবস্থাও হুমকির মধ্যে পড়েছে। এদিকে সামনের সম্মেলনে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টায় সৃষ্ট অভিবাসন সংকট এড়িয়ে যেতে চাইছেন আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতারা।
২৫তম সম্মেলনে আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতারা নিজেদের দেশগুলোতে যুদ্ধ ও সহিংসতার কারণে সৃষ্ট অভিবাসন সংকট সমাধানের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছেন। গতকাল আফ্রিকা ইউনিয়নের সম্মেলনের প্রথম দিন ছিল। গতকালই একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উদ্বাস্তুদের ইস্যুটি নিয়ে নেতাদের মধ্যে আলোচনার কথা ছিল। ছয় মাস পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নিজেদের বৈঠকের আগে অভিবাসন সংকটের ইস্যুতে কৌশল নির্ধারণই বৈঠকের লক্ষ্য। আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতারা নিজেদের দেশগুলোতে অব্যাহতভাবে যুদ্ধবিগ্রহ এবং সহিংসতা লেগে থাকলেও তারা একে অপরকে এসব ইস্যুতে তেমন একটা ঘাঁটায় না। এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। এ বছর ভূমধ্যসাগরে এক হাজার ৮০০ শরণার্থী ডুবে মারা গেছে। গত সপ্তাহে ছয় হাজার সাবসাহারা অভিবাসী উদ্ধার করা হয়েছে।
ইতালির ভেন্টিমিগলিয়ায় অনশনরত ২০ বছর বয়সী মোস্তফা আলি জানান, ‘তারা অনশন করবেন। তীব্র গরমের মধ্যে গতকাল পুরো দিনটা পার করেছেন। গত রাতটাও বৃষ্টিপাত আর ঠাণ্ডা হওয়ার মধ্যে পার করেছেন।’
সুদান থেকে আসা মোহাম্মদ তার ভাইকে নিয়ে ইতালির সিসিলিতে পৌছান। সেখান থেকে গাড়ি এবং ট্রেনে করে ফ্রান্সে পাড়ি দেওয়ার আশায় ইতালির ভেন্টিমিগলিয়ায় এসে পেঁৗছেছেন। কিন্তু সেখানকার ট্রেন স্টেশনে নামার পরপরই তাদের গ্রেফতার করা হয়। মোহাম্মদ নিজেদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করতে গিয়ে বলেন, সুদানের ‘দারফুরে ব্যাপক যুদ্ধ আর সহিংসতা চলছে, তারা মানুষকে গণহারে হত্যা করছে, আমরা শান্তি চাই।’
লিবিয়া উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে আসা অনেক নারী-পুরুষ এবং শিশু গাছ কিংবা ঝোপঝাড়ের তলায় এখানে-ওখানে কার্ডবোর্ডের টুকরার ওপর শুয়ে-বসে অপেক্ষা করছেন। তাদের ফ্রান্স সীমান্তে ঢুকতে না দেওয়া হলে তারা সড়ক অবরোধ করে পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন।
ফ্রান্সের সীমান্ত পুলিশ জানিয়েছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফ্রান্স সীমান্তের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এসব অভিবাসনপ্রত্যাশী অনেকেই যুদ্ধবিধ্বস্ত ও দারিদ্র্যজর্জর সোমালিয়া, আইভিরিকোস্ট ও সুদান থেকে এসেছেন। তারা জার্মানি, ব্রিটেন কিংবা সুইডেনে যেতে আগ্রহী। ‘আমরা ফিরে যাব না, আমাদের দরকার পার হওয়া’ এ স্লোগান লেখা বিশাল একটি ব্যানার বহন করছিল অনশনে বসা একদল অভিবাসনপ্রত্যাশী। ‘আমাদের স্বাধীনতা দরকার’ বলে বিশাল আরেকটি ব্যানার বহন করছিল দ্বিতীয় একটি দল।
এ সপ্তাহে ফ্রান্সের পুলিশ দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় সমুদ্র থেকে ১৪৩৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে।
ভেন্টিমিগলিয়া ট্রেন স্ট্রেশনে এখনও অন্তত ৫০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে এখানে অন্তত ২০০ জন অভিবাসী এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন ভেন্টিমিগলিয়ার মেয়র। ধারণা করা হচ্ছে ট্রেনে করে তারা ফ্রান্সে ঢুকে পড়েছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button