টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পূর্ণ ক্ষমতা নিল সরকার

Towerটাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পূর্ণ ক্ষমতা নিয়েছে ব্রিটেনের স্থানীয় সরকার বিভাগ। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমান আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার দেশটির স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এরিক পিকলস এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।
এরিক পিকলস বলেন, মেয়র লুতফুর রহমানকে তাঁর পদ থেকে বহিষ্কার করা হলেও তাঁর সহযোগীরা এখনো কাউন্সিলর এবং কেবিনেট সদস্য পদে রয়েছেন। কাউন্সিলরকে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত করার পাশাপাশি মেয়র পদে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে লুতফুর রহমানের সহযোগীদের প্রভাব বিস্তার বন্ধ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলের কোনো ডিজিটাল এবং কাগুজে তথ্য যাতে কেউ সরাতে বা ধ্বংস করতে না পারেন সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
লুতফুর রহমানের পক্ষের ১৮ জন কাউন্সিলর ও কেবিনেট সদস্যদের সবাই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। গত বছরের ২২ মে লুতফুর রহমান দ্বিতীয় মেয়াদে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র পদে নির্বাচিত হন। নির্বাচনে ধর্মের অপব্যবহার, বর্ণবাদের আশ্রয় নেওয়া ও আর্থিক অনুদান দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার দায়ে গত ২৩ এপ্রিল আদালত লুতফুর রহমানকে মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করেন। একই সঙ্গে খালি হওয়া মেয়র পদে তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করেন। পেশায় সলিসিটর লুতফুর রহমানের আইন পেশার নিবন্ধন রাখা উচিত কি না, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে যুক্তরাজ্যের সলিসিটরস রেগুলেটরি অথোরিটিকে (এসআরএ) আদেশ দেন বিচারক। একই সঙ্গে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ লুতফুর রহমানের অপরাধের বিষয়ে নতুন করে তদন্ত শুরুর কথা জানিয়েছে। লুতফুর রহমানের অন্যতম সহযোগী কাউন্সিলর আলিবর চৌধুরীকেও তাঁর পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। খালি হওয়া মেয়র পদ ও কাউন্সিলর পদে আগামী ১১ জুন পুনর্নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এ দিকে লুতফুর রহমান জানান, তিনি আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার বিষয়ে আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন। তাঁর সমর্থনে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পূর্ব লন্ডনের ওয়াটারলিলি হলে একটি সভারও আয়োজন করা হয়েছে।
সিলেটের বালাগঞ্জের সিকান্দরপুরে জন্ম নেওয়া লুতফুর রহমান লেবার দলের রাজনীতিক ছিলেন। ২০১০ সালে পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে বিরোধের জের ধরে তিনি লেবার দল থেকে বহিষ্কৃত হন। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তিনি নির্বাচিত হন। ওই মেয়াদে লুতফুর রহমানের বিরুদ্ধে কাউন্সিলের অনুদান প্রদান, বাড়িঘর বিক্রি ও প্রশাসন পরিচালনায় নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে মন্ত্রী এরিক পিকলস নিরীক্ষক নিয়োগ দেন। সরকারি নিরীক্ষায় নানা অনিয়মের চিত্র উঠে আসায় গত ডিসেম্বর মাসে কাউন্সিলের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য দু জন কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয়। বুধবার নতুন নির্দেশনায় আরও একজন কমিশনার নিয়োগ দিয়ে কাউন্সিলের সব ক্ষমতা তাঁদের হাতে ন্যস্ত করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button