জরিপে ক্যামেরনের জনসমর্থন বাড়ছে

Cameronযুক্তরাজ্যে আগামী মাসের নির্বাচনপূর্ব জরিপে বাড়তে দেখা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের জনসমর্থন। গত চার বছরের মধ্যে এবারই প্রথম তার জনপ্রিয়তায় ইতিবাচক ধারা পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত রোববার প্রকাশিত জরিপের ফলে এ আভাসই পাওয়া গেছে। এ সপ্তাহে গুরুত্বপূর্ণ একটি টিভি বিতর্কের পর ইউগভ/সানডে টাইমস পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেয়া ৪৭ শতাংশ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্যামেরনই ভালো করছেন বলে মত দিয়েছে। অন্যদিকে, এর বিপক্ষে মত দিয়েছেন ৪৬ শতাংশ মানুষ। ২০১১ সালের পর এটিই ক্যামেরনের পক্ষে প্রথম ইতিবাচক সমর্থন। তবে ক্যামেরনের ব্যক্তিগত জনসমর্থনের কারণে তার কনজারভেটিভ পার্টির সমর্থনও যে বেড়েছে তা নয়। ফলে ৭ মে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে কোন দল জয়ী হবে সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নাও পেতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। বিরোধীদলীয় লেবার নেতা এড মিলিব্যান্ডের জনসমর্থনও বেড়েছে বলে দেখা গেছে ইউগভ জরিপে। তার পক্ষে মত দিয়েছে ৩৩ শতাংশ মানুষ। গত মাসে এ হার ছিল ৩০ শতাংশ। নির্বাচনী প্রচারে ব্যাটল বাস প্রচারণা : ওদিকে, কনজারভেটিভ দলের নীল রঙের বাস। এই রং রক্ষণশীলতা, পুরুষত্ব এবং রাজতন্ত্রের প্রতি আনুগত্যের পরিচয় বহন করে। যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলো যতটা না প্রতীক দিয়ে পরিচিত, তার চেয়ে বেশি পরিচিত রং দিয়ে। এবার নিজস্ব সেই রং দিয়ে দলগুলো নির্বাচনী প্রচারে নামিয়েছে বিশেষ বাস। বাসের গায়ে লেপটে দেয়া রং আর দলীয় স্লোগানই বলে দিচ্ছে সবকিছু। এসব বাসে চড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা চষে বেড়াচ্ছেন। ৭ মে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া হয়। চলছে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার। একইদিনে কনজারভেটিভ, লেবার এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাট দল বিশেষ বাস উদ্বোধনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করে। এগুলোকে বলা হচ্ছে ব্যাটল বাস। কনজারভেটিভের দলীয় রং নীল। রাজনীতিতে নীল রং রক্ষণশীলতা, পুরুষত্ব এবং রাজতন্ত্রের প্রতি আনুগত্যশীলতার পরিচায়ক। এই দলের বিশাল আকৃতির বাসটিও নীল রঙে ঢাকা। যার মধ্যে ঝাপসা করে ভাসছে যুক্তরাজ্যের পতাকা। বাসের গায়ে লেখা কনজারভেটিভ দলের শ্লোগান পরিবর্তনের জন্য ভোট দিন। লেবার দলের রং লাল। এই রং সামাজিক গণতন্ত্র কিংবা গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রকে নির্দেশ করে। যারা গণতান্ত্রিক মতাদর্শের পাশাপাশি সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক উপাদানে বিশ্বাস করে। লেবার দলের ছাই রঙে ঢাকা বাসটিতে দলীয় প্রতীক গোলাপ ফুলটি আঁকা হয়েছে লাল রঙে। লাল গোলাপের পাপড়িতে যুক্তরাজ্যের পতাকাও দৃশ্যমান। বাসের গায়ে দলীয় স্লোগান ভালো পরিকল্পনা, ভালো ভবিষ্যৎ লেখা। নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে লেবার দল পিংক রঙের মাইক্রোবাসও নামিয়েছে। অন্যদিকে তৃতীয় বৃহত্তম দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের রং হলুদ। এই রং রাজনীতিতে উদারনৈতিক মতাদর্শের পরিচায়ক। এরা ব্যক্তিস্বাধীনতা ও সমতায় বিশ্বাসী। লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের বাসটিই সম্ভবত সবচেয়ে বড়। শুধু বাইরে নয়, বাসটির ভেতরেও হলুদ রঙে রাঙানো। তারা স্লোগান লিখেছে শক্তিশালী অর্থনীতি, ন্যায় সঙ্গত সমাজ, সবার জন্য সুযোগ। হলুদ রঙের এই বাসটি লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের। এ রং রাজনীতিতে উদারনৈতিক মতাদর্শের পরিচায়ক। প্রতিটি বাসের পেছনের দিকে দলীয় নেতাদের জন্য রয়েছে বোর্ড রুম স্টাইলের বিশেষ কক্ষ। সামনের দিকে গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য বসার আসন। আছে হালকা খাবার আয়োজনে ছোট্ট কিচেন। রাস্তায় চলার সময় এই বাসগুলোই বলে দিচ্ছে দলের সব খবরা-খবর। প্রচারের পাশাপাশি এই বাসগুলো আবার জন্ম দিচ্ছে বিড়ম্বনাও। যেমন, উদ্বোধনের দিনেই লেবার পার্টির বাসটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দলের কার্যালয়ের সামনে আসতে পারেনি। একইদিন অক্সফোর্ডশায়ারে প্রচারে গিয়ে চিকন রাস্তায় ঢুকে ইউ টার্ন নিতে বেগ পেতে হয় লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের বাসটিকে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button