প্রবাসে অবহেলা সহ্য করা হবে না : প্রধানমন্ত্রী

PMপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা অপমান ও অবহেলার শিকার হলে তা তিনি সহ্য করবেন না।
তিনি বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৪ উদ্বোধনকালে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার দেশের মানুষ অন্য দেশে গিয়ে অবহেলার শিকার কিংবা অপমানিত হবেন, এটা অনেকে সহ্য করতে পারলেও আমি পারব না।’
কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘পাসের হারে প্রতিবেশী দেশের সমপর্যায়ে পৌঁছাতে হবে। এজন্য বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষকদের প্রতি বৃত্তিমূলক শিক্ষার মানোন্নয়নে আন্তরিকভাবে প্রয়াস চালাতে হবে।’
মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের প্রায় ৮৭ লাখ শ্রমিক কাজ করেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এদের অধিকাংশ কারিগরিভাবে অদক্ষ শ্রমিক। তাই তাদের আয়ও তুলনামূলকভাবে কম।
তিনি বলেন, ‘একজন স্কুল মাস্টার, উনি হয়তো বিদেশে চলে গেছেন। কিন্তু উনাকে সেখানে গিয়ে কি কাজ করতে হচ্ছে? তাকে হয়তো দোকানির কাজ করতে হচ্ছে। অথবা আমাদের ছেলেদের দেখেছি, কোনো কোনো দেশে গিয়ে রাস্তায় ময়লা কুড়োচ্ছে।’
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি শিক্ষার উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিন্তু এখন প্রতিটি ক্ষেত্রে কে কোথায় যাবে, কোন ধরনের শিক্ষা নেবে, কী ধরনের ট্রেনিং দরকার- আমরা এখন সেগুলো দিয়ে দিচ্ছি।’
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘মানবসম্পদের যথাযথ ব্যবহার করে বাংলাদেশকেও সুইজারল্যান্ডের মতো উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির জনক সব সময় বলতেন, বাংলাদেশকে গড়ে তুলবেন প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে। সুইজারল্যান্ডই হচ্ছে পরিপূর্ণ, সব থেকে শান্তিপূর্ণ দেশ, সব থেকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী দেশ। তারাও ধীরে ধীরেই নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলেছে।’
তিনি বলেন, ‘কাজেই আমরা সেভাবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারব। ভৌগোলিক দিক থেকে হয়তো আমাদের ভূখণ্ড এতো বড় না, কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে বিশাল। আমাদের দেশের এই মানুষগুলোকে যদি গড়ে তুলতে পারি তাহলে বাংলাদেশ কেন পিছিয়ে থাকবে? কেন অন্যের কাছে হাত পেতে চলবে? কেন আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারব না?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। আমরা সবসময় বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করি।’
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি আগে আগ্রহ না থাকলেও সরকারের নানা ধরনের চেষ্টায় এই শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।’
গত পাঁচ বছরে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা আট গুণ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
টকশোতে পড়াশুনার মান নিয়ে সমালোচনাকারীদের এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসিয়ে দেওয়ার দরকার মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা দেখুক আমাদের ছেলে-মেয়েদের মান কেমন? আমাদের ছেলে-মেয়েরা অনেক বেশি জ্ঞান রাখে, তারা অনেক বেশি জানে।
বিএনপি দেশকে পিছিয়ে নিতে দক্ষ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ’৯৬ এর সরকারে আওয়ামী লীগ সরকার স্বাক্ষরতার হার ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ শতাংশ করেছি। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসলো। ৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার স্বাক্ষরতার হার ২০ শতাংশ বাড়িয়েছে। আর বিএনপি এসে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ১৫ শতাংশ কমিয়ে দিলো।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- শিক্ষা সচিব মোহাম্মদ সাদিক ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক শাহ্জাহান মিয়া।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button