সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হলো প্যারিস সম্মেলন

Parisগুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হলো ইসলামিক স্টেট নিয়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন। প্যারিসের এ সম্মেলনে ইরাকি বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ বাড়ানোসহ আইএসবিরোধী লড়াই জোরদারের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ইরাকের রামাদি আর সিরিয়ার পালমিরা শহর আইএসের দখলে চলে যাওয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের নীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আইএসবিরোধী লড়াইয়ে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে না আন্তর্জাতিক জোট, প্যারিস সম্মেলনে এমনটাই অভিযোগ করেছেন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। ইরাকের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামানোর বদলে জেহাদি সংগঠনটির অর্থের জোগান বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করেন তিনি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এই সম্মেলনের ডাক দিলেও সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ায় তার বদলে অংশ নেন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী টনি ব্লিঙ্কেন। আইএসবিরোধী অভিযান দ্বিগুণ জোরদারের ঘোষণা দেন তিনি। তবে লড়াইটা যে সহজ নয় এবং সহসা তা শেষও হচ্ছে না সে কথা মনে করিয়ে দিতে ভোলেনি জোটের অন্য সদস্য দেশগুলো।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরা ফ্যাবিয়াস জানান, লড়াইয়ে কিছু অগ্রগতি হয়েছে, কিছু বাধা-বিপত্তিও রয়েছে। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে যে এটা একটা দীর্ঘমেয়াদি লড়াই। সম্মেলনে যে বড় কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি তা স্বীকার করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও। আইএসের অগ্রাভিযানের বিরুদ্ধে ইরাক ও সিরিয়ায় প্রায় দশ মাস ধরে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোট। আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, সিরিয়া ও ইরাকের স্থানীয় বাহিনীকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়েও সাহায্য করা হচ্ছে। তারপরও ঠেকানো যাচ্ছে না আইএসকে। বিশেষ করে, সম্প্রতি ইরাকের রামাদি আর সিরিয়ার পালমিরা দখলের মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তা বুঝিয়ে দিয়েছে জেহাদি সংগঠনটি।
অপর এক খবরে বলা হয়, আইএসের উত্থান দমনে তিন মাসের সময় নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তিন বছর সময়সীমার মধ্যে ইতোমধ্যে ৯ মাস অতিবাহিত হয়েছে এবং এই ৯ মাস সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন হামলায় দশ সহস্রাধিক আইএস সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। বলা হয়, ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)র বিরুদ্ধে নয় মাস আগে শুরু হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোট বাহিনীর বিমান হামলায় এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি আইএস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। গত বুধবার প্যারিসে ওই জোটের এক বৈঠকের পর এ দাবি করেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে দাবি করে ফ্রান্সের ইন্টার রেডিওকে তিনি বলেন, কিন্তু গোষ্ঠীটি দ্রুত ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছে এবং লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ধরে রেখেছে। অভিযান শুরুর পর থেকে আমরা আইএসের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে দেখেছি। তাদের ১০ হাজারেরও বেশি লোক মরেছে বলে দাবি করা হয়। তিনি বলেন, অভিযানের শুরুতে আমরা বলেছিলাম, ওদের নির্মূল করতে সময় লাগবে। আমরা তিন বছরের পরিকল্পনা করেছি। এর মধ্যে নয় মাস পার হয়েছে। এদিকে আইএস দমনে বাগদাদকে মিত্ররা তেমন সহায়তা করেনি, ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর এমন অভিযোগের পর গত মঙ্গলবার ইরাকে আইএসের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে আরব দেশগুলোর বাহিনী।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button