ব্রিটেনে মুসলিমরাই সর্বাধিক দানশীল

ব্রিটেনে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও বিশ্বাসের মানুষের চেয়ে মুসলিমরা অনেক বেশি দানশীল। গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিএম এর নতুন একটি জরিপে এমন তথ্য মিলেছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, ব্রিটিশ মুসলিমদের ১০ জনের মধ্যে সাত জনেরও বেশি বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অর্থ সহায়তা দেন।
শনিবার ব্রিটিশ সাময়িকী টাইমসে জরিপ প্রতিবেদনটির বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
ওই জরিপ অনুযায়ী, গত বছর বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে মুসলিম দাতারা গড়ে ৩৭১ পাউন্ড দিয়েছেন। যেখানে ইহুদি দাতারা দিয়েছেন গড়ে ২৭০ পাউন্ড। আরো দেখা গেছে, ১০ জনে প্রায় একজন ইহুদি এক হাজার পাউন্ডেরও বেশি দান করেছেন। যেখানে মুসলিমদের দান ৩০০ থেকে ৫০০ পাউন্ডের মধ্যে।
বিপরীতপক্ষে, বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে নাস্তিকরা দিয়েছেন গড়ে ১১৬ পাউন্ড, রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা দিয়েছেন ১৭৮ পাউন্ডের কিছু বেশি, খ্রিস্টানদের অন্য মতাবলম্বীরা ১৭৮ পাউন্ডের কিছু কম এবং প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টানরা দিয়েছেন গড়ে ২০২ পাউন্ড।
জাস্টগিভিং নামে একটি ওয়েবসাইটের সঙ্গে যৌথভাবে ৪ হাজার মানুষের ওপর পরিচালিত আইসিএমের ওই জরিপের তথ্য মতে, নাস্তিকদের মধ্যে ১০ জনে প্রায় চার জন কখনোই দান করেন না। যেখানে মুসলিম, ক্যাথলিক ও অন্য খ্রিস্টানদের মধ্যে ১০ জনে তিন জন, প্রোটেস্ট্যান্টদের ১০ জনে প্রায় তিন জন এবং ইহুদিদের ১০ জনে ৪ জন কোনো দান-খয়রাত করেন না।
জাস্টগিভিং জানিয়েছে, ব্রিটেনের মুসলিমরা অনলাইনে প্রচুর দান করছেন। আর এ প্রবণতা উত্তরোত্তর বাড়ছে।
উল্লেখ্য, ইসলামের মূল পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে জাকাত অন্যতম। নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের বিপরীতে জাকাত দেয়া প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অবশ্য কর্তব্য। এ অনুভূতি থেকে তাদের দানের প্রবণতা বেশি বলে মনে করছে গবেষকরা।
জাস্টগিভিং আরো জানিয়েছে, ব্রিটিশ মুসলিমদের এ বিপুল পরিমাণ দানের অর্থ মূলত পাচ্ছে মুসলিম এইড ও ইসলামিক রিলিফ নামে দুটি দাতব্য সংস্থা। তবে এসব অর্থ ক্যান্সার রিসার্চ, ম্যাকমিলান এবং ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের মতো সংস্থাতেও যাচ্ছে।
জাস্ট গিভিংয়ের প্রধান নির্বাহী জারিন খারাস এ ব্যাপারে টাইমসকে জানান, তাদের সংগৃহীত উপাত্ত অনুযায়ী, ব্রিটেনে মুসলিম কমিউনিটির বিপুল সংখ্যক মানুষ অনলাইনে দান করছে। বিশেষ করে জাকাত দেয়ার পরিমাণ বাড়াতে তারাই এখন দানের দিক থেকে এগিয়ে।
মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক মুরাদ এ ব্যাপারে বলেন, ‘এ তথ্য ব্রিটেনে ইসলামের সত্যিকার অনুভূতি এবং বাস্তবতা তুলে ধরেছে।’
এসব দান শুধু আপন সম্প্রদায়কে সহায়তা নয় বরং পুরা মানবজাতি এবং জাতীয় পর্যায়ে একটা বদান্যতার প্রমাণ বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button