হিজাব-গোলাপে বিশ্বের দৃষ্টি কাড়লেন এই নারী পুলিশ

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নের হিজাব পরা ছবিটি পুরো বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এছাড়া গত ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে জঙ্গি হামলার পর দেশে অস্ত্র আইন কঠোরের সিদ্ধান্ত নেয়াসহ কোনো দ্বিধা ছাড়াই ঘটনাটিকে জঙ্গি হামলা বলে অভিহিত করায় এখন বিশ্ব নেতাদের আদর্শে পরিণত হয়েছেন তিনি। তবে এবার নিউজিল্যান্ডের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন পুরো বিশ্বের। বৃহস্পতিবার ক্রাইস্টাচার্চ মেমোরিয়াল পার্ক কবরস্থানের বাইরে শক্ত চেহারায় রাইফেল হাতে পাহারায় থাকতে দেখা যায় ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে। তার নাম মাইকেল ইভান। ছবিতে দেখা যায়, মাথায় হিজাব, বুকে গোলাপ আর হাতে একটি আধা-স্বয়ংক্রিয় বুশমাস্টার রাইফেল। এই তিনের মিশ্রণে তার চেহারায় গম্ভীরতা, সম্মান ও সুরক্ষার চিত্র ফুটে উঠেছে।
মসজিদে জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবদনে অনেকেই ক্রাইস্টাচার্চ মেমোরিয়াল পার্ক কবরস্থানে আসেন। এ সময় কবরস্থানের গেটে পাহারারত পুলিশ কর্মকর্তা ইভানের ছবিটি তোলেন আলোকচিত্রী অ্যাল্ডেন উইলিয়ামস। উইলিয়ামস বলেন, ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তার চোখে-মুখে গম্ভীরতা, সম্মান ও সুরক্ষা- এই তিনটির মিশ্রণ ফুটে উঠেছে। তিনি আরও বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে পুলিশদের ছবি তুলছি। কিন্তু হিজাব, রাইফেল আর গোলাপের এতো দারুণ মিশ্রণ আগে কখনো দেখিনি। এমনকি তিনি যদি এই তিনটির ভেতর যে কোনো একটিও পরে থাকতেন তার পরও ব্যাপারটা অন্য রকম হতে পারতো বলে উল্লেখ করেন এই আলোকচিত্রী।
উইলিয়ামস বলেন, অধিকাংশ গণমাধ্যম কবরস্থানে মানুষের ভিড়ের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে ছবি তোলেন। কিন্তু তিনি এর বাইরেও ভিন্ন কিছু দেখতে পেয়েছিলেন বলেই এই ছবিটি তোলেন। ছবিটি তোলার পর স্টাফ ব্লগে প্রকাশ করা হলে তা অতি দ্রুত শেয়ার হতে থাকে। নিজের ইন্সটাগ্রামেও এটি পোস্ট করেন উইলিয়ামস। তিনি জানান, কয়েক ঘন্টার মধ্যে অন্য ছবির চাইতে বেশি লাইক পেতে থাকে এই ছবিটি। একজন ছবিটি দেখে মন্তব্যে বলেছেন, এই ছবি নিউজিল্যান্ডের সহনশীলতা, সমবেদনা ও মানবতাকে দৃঢ়তার সঙ্গে তুলে ধরেছে। এটি খুব সুন্দর ও শক্তিশালী।
নিউজিল্যান্ডের ওহানগানুই শহরে বেড়ে উঠেছেন মাইকেল ইভান। ছোটবেলা থেকেই পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন তার। ২০১৬ সালে দেশটির সংবাদমাধ্যম ওহানগানুই ক্রুনিক্যালে তিনি বলেন, আমি বাস্তবতার মধ্যে বড় হয়েছি। আমি শুধু মানুষকে সাহায্য করতে চাই। এটা খুবই মজার যে, আমি বাইরে যাাচ্ছি এবং মানুষকে সাহায্য করে টাকাও পাচ্ছি। হামলার ঘটনা উল্লেখ করে ইভান বলেন, ঘটনার সময় মানুষ প্রথমে হিংস্র হয়ে ওঠে। পরে তাদেরকে শান্ত করা হয়। তিনি বলেন, তারা জানত আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না পর্যন্ত আমার কোথাও যাব না।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button