হোম কোয়ারেন্টিনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো এবারের হজের আনুষ্ঠানিকতা

প্রতি বছর সউদী আরবের মিনায় মুসল্লিদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও এবার ৭ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনের মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতার প্রথম ধাপ শুরু হলো। বিশ্বব্যাপী মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর শুধু সউদী আরবে বসবাসকারী বিভিন্ন দেশের অধিবাসী ও দেশটির নাগরিকদের সমন্বয়ে ১০ হাজার মানুষ এবার হজ পালন করবেন। আজ রোববার থেকে এবারের হজযাত্রীরা সাত দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা শুরু করেছেন।

সাত দিনের কোয়ারেন্টিন শেষে ৩ জিলহজ মক্কায় এসে আরো চার দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকবেন তাঁরা। এরপর ৮ জিলহজ বাদ ফজর রওনা হবেন মিনায়। মিনাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হবে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনা, মুজদালিফা, আরাফাতের ময়দান ও মক্কায় হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে।
এবার মহামারি করোনার কারণে হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা স্বার্থে বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রত্যেক হজযাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন।
আজ রোববার ভোর থেকে মক্কার নির্দিষ্ট এলাকাসহ মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব জায়গায় অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ প্রবেশ করলে তাকে ১০ হাজার সউদী রিয়াল জরিমানা করা হবে। এসব এলাকার প্রবেশপথে কড়া নিরাপত্তা ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সড়কে টহল দিচ্ছেন। মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতের প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৯ কিংবা ৩০ জুলাই (৮ জিলহজ) থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, চলবে পাঁচ দিন। হজের কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের বিধিনিষেধ জারি থাকবে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে হজযাত্রীদের মধ্যে যাতে ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য এ ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সউদী আরবের হজ ও উমরাহ মন্ত্রণালয় নিবন্ধিত হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠিয়েছে। এসব সামগ্রীর বাইরে অন্য কিছু বহন করতে পারবেন না হজযাত্রীরা। এসবের মধ্যে রয়েছে চিপ লাগানো একটি স্মার্ট ব্রেসলেট, দুই সেট ইহরামের কাপড়, ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, জামারাতে নিক্ষেপের জন্য জীবাণুমুক্ত কঙ্কর, জুতা, ফোনের চার্জার, জায়নামাজ, জুতার ব্যাগ, হাতব্যাগ এবং হজের বিধিবিধানসহ প্রাসঙ্গিক বইপত্র ও স্বাস্থ্যবিধিসংবলিত হজ নির্দেশিকা।
যাতায়াতের জন্য প্রতি ২০ জন করে একটি দল করা হয়েছে। প্রতিটি বাসে ২০ জন করে হজযাত্রী চলাফেরা করবেন।
এদিকে মিনা, জামারাত, মুজদালিফা ও আরাফাতের ময়দানে যে হাজিরা অবস্থান করবেন, সেসব জায়গা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। মসজিদে হারামের ভেতরে ও বাইরের অংশে নামাজের কাতারে নামাজের সময় শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য স্টিকার লাগানো হয়েছে।
এবার হাজিরা মিনার তাঁবুতে থাকবেন না। মিনার নির্দিষ্ট ভবনগুলোতে তাঁরা অবস্থান করবেন। এ ছাড়া তাওয়াফের সময় পবিত্র কাবা স্পর্শ ও হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকে তাওয়াফ ও সায়ী সম্পন্ন করতে হবে। তাওয়াফের সময় দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। নামাজের জামাতেও দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে হবে। সব অবস্থায় হজযাত্রীদের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
হজযাত্রীরা বাইরে থেকে কোনো প্রকার খাবার বা পানীয় নিয়ে হজের রীতিনীতি পালন করতে পারবেন না। সব হাজির জন্য খাবার ও পানি কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করবে। কোরবানি সম্পন্ন করতে হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। নিজে কোরবানির পশু কেনা কিংবা জবাই করার সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button