বোমা ও গ্রেনেড তৈরির নাটক সাজিয়ে মাদরাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না : হেফাজতে ইসলাম

চট্টগ্রামের জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া লালখান বাজার মাদরাসায় বৈদ্যুতিক আইপিএস ও রান্নার চুলো থেকে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনাকে সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু বশংবদ কর্মচারীর যোগসাজশে ও কিছু মিডিয়ার কারসাজির মাধ্যমে বোমা ও গ্রেনেড তৈরির গল্প বানিয়ে মাদরাসাটি বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম।
গতকাল সংবাদপত্রে প্রেরিত বিবৃতিতে ওলামায়ে কেরাম বলেন, কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মুখে মাদরাসায় ছাত্র কমানোর যে তথাকথিত আন্দোলনের কথা উচ্চারিত হয়েছে গতকালের বোমা নাটক এবং এই অজুহাতে মাদরাসাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়ে ছাত্র-শিকদের প্রতিষ্ঠান ত্যাগে বাধ্য করা সেই পরিকল্পনারই অংশ। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, ঘটনার পর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যেখানে মাদরাসার ছাত্র-শিক, প্রত্যদর্শী, ফায়ার সার্ভিসের লোকজন, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যগণ বিষয়টি সরেজমিন প্রত্য করেছেন। তারা সবাই এটা একটি স্বাভাবিক দুর্ঘটনাজনিত বিস্ফোরণ হিসেবে প্রচার করেছেন। মাগরিব পর্যন্ত মাদরাসার পরিচালক মুফতি ইজহারুল ইসলামসহ সব ছাত্র-শিক মাদরাসায় অবস্থান করছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টার পর রহস্যজনকভাবে ও অসদুদ্দেশে মাদরাসায় হাতে তৈরি গ্রেনেড, গুলি ইত্যাদি জিনিস পাওয়া গেছে বলে প্রচারণা শুরু করা হয়।
বিবৃতিদাতারা বলেন, আমাদের প্রশ্ন ঘটনার আধাঘণ্টার মধ্যে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, যুবলীগ নেতা খুনি দিদারুল আলম মাসুমের নেতৃত্বে মাদরাসার বিরুদ্ধে লেখা সংবলিত ব্যানার নিয়ে মিছিল কিভাবে হতে পারলো? স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের চাপের মুখে পুলিশ মাদরাসায় রাতের আঁধারে কেন তল্লাশি চালালো? প্রশাসন কার ইঙ্গিতে মাদরাসা বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন? ছাত্র-শিকদের জোরপূর্বক বের করে দিলেন? অন্য দিকে নিরীহ ছাত্র-শিক গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দেয়া হলো।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, একটি সাধারণ ঘটনাকে মিডিয়া ক্যুর মাধ্যমে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে মাদরাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। অবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপে তদন্ত, বন্ধ করে দেয়া লালখান বাজার মাদরাসা খুলে দেয়া না হলে কঠোর ও দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে পুরো দেশ অচল করে দেয়া হবে; তখন নাস্তিক-মুরতাদ, ইসলামবিদ্বেষী, মাদরাসা শিাবিরোধীচক্র গ্রাম-গঞ্জ সর্বত্র প্রতিরোধ করা হবে। কওমি মাদরাসায় হাত দেয়া পরিণাম খুবই ভয়াবহ হবে। গ্রেফতারকৃত মাদরাসা ছাত্র-শিক-কর্মচারীদের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার ও মাদরাসা খুলে দিতে হবে।
বিবৃতিদাতারা হলেন: হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির, মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, দারুল উলুম হাটহাজারীর মুহাদ্দিস ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা হাফেজ শামসুল আলম, আমিরে শরিয়ত মাওলানা শাহ্ আহমদুল্লাহ আশরাফ, মাওলানা নুর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা আবদুল মোমেন খলিফায়ে মাদানী, মাওলানা আশরাফ আলী বিজয়পুরী, মাওলানা আবদুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা মুফতি মুজাফফর আহমদ, আল জামিয়া পটিয়া, মাওলানা আবদুল মালেক হালিম, মাওলানা আনওয়ার শাহ্, মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলাম, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, মাওলানা সাজেদুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মাওলানা মুবারকুল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মদ ইদরিস, মাওলানা মুজিবুল হক গাছবাড়ি, মাওলানা লোকমান হাকিম, মাওলানা সালাহুদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা সলিমুল্লাহ প্রমুখ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button