সর্বোচ্চ ইপিএস নিয়ে পুঁজিবাজারে ওয়ালটন

বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ইপিএস (শেয়ার প্রতি মুনাফা) নিয়ে তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। শুধু তাই নয়; ইপিএস বিবেচনায় বর্তমানে শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলোর তালিকায়ও রয়েছে ওয়ালটন। ট্রিপল এ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক এম এ হাফিজ জানান, ওয়ালটনের মতো সর্বোচ্চ ইপিএস নিয়ে আগে কোনো কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি।
তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ অর্থবছরের ইপিএসের বিবেচনায় ওয়ালটনের অবস্থান শীর্ষ-৮ এ। এমনকি বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টস ও গ্রামীণফোনের চেয়েও ওয়ালটনের ইপিএস বেশি। আবার তালিকাভুক্ত দেশীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে ওয়ালটনের ইপিএস দ্বিতীয় অবস্থানে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ইপিএস বিবেচনায় তালিকাভুক্তির শুরুতে আইপিও বিনিয়োগকারীরা ওয়ালটনের শেয়ার তুলনামূলক কম দামে কিনতে পারবেন। গত অর্থবছরের হিসাব অনুসারে শেয়ারবাজারে শীর্ষে থাকা রেকিট বেনকিজারের ইপিএস ১৩১.০৬ টাকা। এরপরে ম্যারিকো বাংলাদেশের ৮৪.০১ টাকা, গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের ৮১.৮৩, লিন্ডে বিডির ৮০.৯৩ টাকা, বাটা সুর ৭২.৭৯ টাকা, বিট্রিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ৫১.৩৭ টাকা ও রেনেটার ৪৬.৬৩ টাকা। এরপরেই রয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পথে থাকা ওয়ালটন, এ কোম্পানির ইপিএস ৪৫.৮৭ টাকা। বাজারে ওয়ালটনের সমান ও বেশি ইপিএস থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বনি¤œ ৬৯৩.২০ টাকা শেয়ার দরে রয়েছে বাটা সু। অথচ ওয়ালটনের শেয়ার সাধারন বিনিয়োগকারীরা পাবেন মাত্র ২৫২ টাকায়। সেই বিবেচনায় সাধারন বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন।
পুঁজিবাজার ও আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞরা জানান, যেকোনো কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের ক্ষেত্রে ‘ইপিএস’ এর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হয়। কোনো কোম্পানির ব্যবসায়িক পারফরমেন্স কতটা ভালো তা ইপিএস দেখে বোঝা যায়। যে কোম্পানির শেয়ার প্রতি মুনাফা ও নিট সম্পদ মূল্য বা এনএভি বেশি, সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে ক্যাপিটাল ও ডিভিডেন্ড গেইন করার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।
ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের কোম্পানি সচিব পার্থ প্রতিম দাশ বলেন, যেসব কোম্পানির ইপিএস বেশি থাকে, সেসবে বিনিয়োগে আস্থা ও নিরাপত্তা বোধ করেন বিনিয়োগকারীরা। তারা প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো মুনাফা ও লভ্যাংশ পেয়ে থাকেন। সে দিক বিবেচনায় ওয়ালটন একটি আদর্শ কোম্পানি।
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনায় ওয়ালটনের ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা বেশ ভালো। কোম্পানিটির তালিকাভুক্তি পুঁজিবাজারের জন্য খুবই ইতিবাচক।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম শাহাদাৎ উল্লাহ ফিরোজ বলেন, বর্তমানে ওয়ালটনের ইপিএস আকর্ষণীয় অবস্থানে রয়েছে। কোম্পানিটির ইপিএস দেখে বোঝা যায় যে, তাদের ব্যবসায়িক পারফরমেন্স কতটা ভালো।
প্রসপেক্টাসে উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাষ্ট্রিজের পরিশোধিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা। এছাড়া কোম্পানিটির ৩ হাজার ৮৫৮ কোটি ৭৫ লাখ ৪ হাজার ১৬২ টাকার সংরক্ষিত আয় (রিটেইন আর্নিংস) রয়েছে। ওয়ালটনের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিট টার্নওভার বা পণ্য বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ১৭৭ কোটি ৩২ লাখ ৩৭ হাজার টাকার। এই বিক্রি থেকে সব ব্যয় শেষে নিট মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৩৭৬ কোটি ১১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button