কাজী নজরুলের ‘জয় বাঙলা’

শফি চাকলাদার: সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে স্লোগান ‘জয় বাংলা’ বলতে হবে বিধায় বাংলাদেশ হাইকোর্ট থেকে মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এটা আদালতের বিষয়। ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিটি বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতাপূর্ব স্বাধীনতার সময় স্বাধীনতা পরবর্তীতে ব্যবহার করেছেন। শব্দটি জনপ্রিয়তা পায় তারই মাধ্যমে। বাংলাদেশের জনপ্রিয় নেতা এই ধ্বনিটিতে কীভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই আলোচনা হয়ে আসছে। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি কবিতা (গীতি কবিতা) থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন এটাও ব্যক্ত হয়েছিল। বাংলাদেশ হাইকোর্ট এ নিয়ে পরবর্তী শুনানি আগামী ১৪ জানুয়ারি ২০২০ নির্ধারণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু কোন রচনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন আদালতের ঘোষণায় সে বিষয় উল্লেখ করাটা প্রয়োজন মনে করি। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘ভাঙার গান’ গ্রন্থে এই গীতি-কবিতাটি চয়ন করেন। কবিতাটির নাম ‘পূর্ণ অভিনন্দন’। পাদটীকায় লেখা আছে ‘মাদারীপুর শান্তি সেনাবাহিনীর প্রধান অধ্যক্ষ শ্রীযুক্ত পূর্ণ চন্দ্র দাস মহাশয়ের কারামুক্তি উপলক্ষে রচিত।’ ‘ভাঙার গান’ ১৩৩১ সনে প্রকাশিত তৎকালীন বঙ্গীয় সরকার গ্রন্থখানি বাজেয়াপ্ত করেন। তথ্যের জন্য লিখছি। ‘পূর্ণ অভিনন্দন’ (গান) হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। ৬ লাইন করে ৯টি স্তবকে সাজানো-পঞ্চম স্তবকের তৃতীয় লাইনে প্রয়োজনীয় ধ্বনিটির উল্লেখ পাই। আমি পঞ্চম স্তবকটিই উদ্ধৃত করছি-

ওগো অতীতের আজো ধূমায়িত আগ্নেয়গিরি ধূম্রশিখ!
না-আসা দিনের অতিথি তরুণ তব পানে চেয়ে নির্নিমিখ।
জয় বাঙলার পূর্ণ চন্দ্র, জয় জয় আদি অন্তরীণ
জয় যুগে যুগে আসা সেনাপতি, জয় প্রাণ আদি অন্তরীণ
স্বাগত ফরিদপুরের ফরিদ, মাদারিপুরের মর্দবীর,
বাঙলা মায়ের বুকের মানিক, মিলন পদ্মা-ভাগীরথীর।

‘জয় বাঙলা’ ধ্বনিটি স্লোগান হয়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে শতশত বার উচ্চারণে। এবং তিনিই বলেছেন তিনি কাজী নজরুল ইসলাম থেকে এই ধ্বনিটি গ্রহণ করেছেন অনুপ্রাণিত হয়ে। আমাদের সম্মানিত আদালতের পরবর্তী ঘোষণায় এই মর্মে লিপিবদ্ধ হোক- এটার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধে অনুরোধ জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button