বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখল ইংল্যান্ড

englandটাইব্রেকার ছিল ইংল্যান্ডের জন্য চিরকালের এক দুঃখগাথা। এর আগে তিনবার বিশ্বকাপে টাইব্রেকারের ভাগ্য-পরীক্ষায় নেমে প্রতিবারই হতাশার পোস্টার হতে হয়েছে ইংলিশদের। অবশেষে দুর্ভাগ্যের সেই জাল ছিঁড়ে টাইব্রেকারে শেষ হাসি হাসল ইংল্যান্ড।
মঙ্গলবার মস্কোর স্পার্তাক স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোর অগ্নিগর্ভ ম্যাচে কলম্বিয়াকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে এক যুগ পর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখল ইংল্যান্ড।
হ্যারি কেনের পেনাল্টি গোলে নির্ধারিত সময়েই জয়ের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল ইংলিশরা। কিন্তু ইনজুরি টাইমে ইয়েরি মিনার গোলে নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যায় কলম্বিয়া।
সেখানেও ১-১ সমতা থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ডের বীরত্বে ভাগ্য-পরীক্ষায় এবার শেষ হাসি হাসে থ্রি লায়নরা। টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডের পক্ষে হ্যারি কেন, রাশফোর্ড, ট্রিপিয়ার ও এরিক ডায়ার লক্ষ্যভেদ করেন।
হেন্ডারসনের নেয়া তৃতীয় শট রুখে দিয়ে কলম্বিয়াকে আশার আলো দেখিয়েছিলেন গোলকিপার ডেভিড অসপিনা। কিন্তু দলকে ডুবিয়ে দেন উরিবে ও বাক্কা। কলম্বিয়ার পক্ষে প্রথম তিন শটে ঠিকঠাক লক্ষ্যভেদ করেছিলেন ফ্যালকাও, কুয়াদরাদো ও মুরিয়েল।
উরিবের নেয়া চতুর্থ শট পোস্টে প্রতিহত হয়। এরপর বাক্কার শেষ শট ঠেকিয়ে দিয়ে ইংল্যান্ডকে উৎসবের উপলক্ষ এনে দেন পিকফোর্ড। আগামী ৭ জুন সামারায় কোয়ার্টার ফাইনালে সুইডেনের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। কাল শেষ ষোলোর আরেক ম্যাচে সুইজারল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে ২৪ বছর পর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে সুইডেন। ইংল্যান্ড-কলম্বিয়া ম্যাচটি কাল আক্ষরিখ অর্থে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। বারবার হাতাহাতিতে জড়িয়ে হলুদ কার্ড দেখেছেন দু’দলের সাত খেলোয়াড়।
প্রথমার্ধে ম্যাচের প্রথম সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি ইংল্যান্ড। কিরেন ট্রিপিয়ারের ক্রসে কঠিন কোণ থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি হ্যারি কেন।
আক্রমণে ইংল্যান্ড এগিয়ে থাকলেও প্রথমার্ধে গোল করার তেমন ভালো সুযোগ আসেনি। বরং মাঠে উত্তেজনা ছড়িয়েছে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে রেষারেষি। এমনই এক ঘটনায় জর্ডান হেন্ডারসনকে মাথা দিয়ে হালকা গুঁতো মেরে হলুদ কার্ড দেখেই পার পেয়ে যান কলম্বিয়ার উইলমার বারিওস।
দ্বিতীয়ার্ধেও চলে দু’দলের খেলোয়াড়দের ধাক্কাধাক্কি। ৫৪ মিনিটে কেনের ওপর পেছন থেকে অযথা চড়াও হয়ে ইংল্যান্ডকে পেনাল্টি উপহার দেন কার্লোস সানচেজ, দেখেন হলুদ কার্ড। স্পটকিক থেকে ঠাণ্ডা মাথায় টুর্নামেন্টে নিজের ষষ্ঠ গোলটি করেন আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা কেন।
পাল্টা আক্রমণে ৮১ মিনিটে কলম্বিয়াকে সমতায় ফেরানোর একটি সুযোগ পেয়েছিলেন হুয়ান কুয়াদরাদো। কিন্তু ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি জুভেন্টাস মিডফিল্ডার।
ইংল্যান্ডের জয় যখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল, তখনই ঘুরে দাঁড়ায় কলম্বিয়া। ইনজুরি টাইমে আসে সমতা ফেরানো গোল। মাতেয়াস উরিবের জোরালো শট দারুণ নৈপুণ্যে কর্নারের বিনিময়ে সেভ করেছিলেন ইংলিশ গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড।
ওই কর্নার থেকেই লাফিয়ে ওঠা দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডার ইয়েরি মিনার লক্ষ্যভেদী হেড নবজীবন দেয় কলম্বিয়াকে। গোললাইনে থাকা জেমি ভার্ডি বলে মাথা লাগিয়েও ফেরাতে পারেননি।
বার্সেলোনা তারকা মিনা এবারের আসরে এ নিয়ে তিনটি গোল করলেন। সব কটিই এসেছে হেডে। মিনার এই গোলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু শেষে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হেরে শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নিতে হল কলম্বিয়াকে। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে তৃতীয় হওয়ার পর আর কখনোই শেষ ষোলো পেরোতে পারেনি সুইডেন। মাঝে ২০১০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে তো খেলাই হয়নি তাদের।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button