তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন

বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রাণ পুরুষ, তৃণমূল রাজনীতির ধারক-বাহক, এই দেশ, মা, মাটি ও মানুষের সন্তান, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, নির্যাতিত নন্দিত জননেতা দেশনায়ক তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন আজ। ১৯৬৫ সালের এই দিনে মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্র, ইসলামী মূল্যবোধ ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবর্তক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সফল রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ও তিনবারের সফল সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমান।
তার ৫৩তম জন্মদিন এবার এমন এক সময়ে এলো যখন দেশে গণতন্ত্রের লেবাসে একদলীয় বাকশাল চলছে। গুম, খুন, অপহরণ ও মিথ্যা মামলায় সাজানো রায় দিয়ে বিরোধী দলশূন্য রাষ্ট্র নির্মাণে ব্যস্ত বাকশালীরা। হাজার হাজার মিথ্যা মামলার বিরোধী দলের সদস্যদের কারাগারে নিক্ষেপ করে গোটা দেশটাকে জেলখানায় পরিণত করা হয়েছে। বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে অঘোষিত বাকশালী কায়দায় প্রাথমিকসহ সকল পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের লুটপাটের কারণে ধ্বংসের মুখে অর্থনীতি। নারী ও শিশু নির্যাতন বেড়ে যাওয়ায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মা-বোনেরা। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে আতংকিত যুবসমাজ।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের অধীনে নিতে জোর করে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করানোর ফলে ন্যায় বিচারের পথ প্রায় রুদ্ধ। ঠিক এমন একটি মুহূর্তে দেশনায়ক তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করছে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ড্যাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। দিবসটি উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। তার জন্মস্থান বগুড়া বিএনপির উদ্যোগেও ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
তারেক রহমান এমনই একজন নেতা যার রয়েছে বহুমুখি প্রতিভা। স্বপ্নের বাংলাদেশ বির্নিমাণে তিনি অভিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। বিএনপিসহ সাধারণ জনসাধারণের কাছে তিনি একজন জনপ্রিয় নেতা। জনগণকে আপন করে কাছে টেনে নেয়ার জাদুকরী ক্যারিশমেটিক নেতৃত্ব, সম্মোহনী মার্জিত ব্যবহার, আর এসব গুণাবলীই তাকে বিস্ময়কর জনপ্রিয়তার অধিকারী গড়ে তোলে।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে তার মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কেক কাটেন। রবিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে ৫৩ পাউন্ডের কেক কেটে ছেলের জন্মদিন উদযাপন করেন তিনি।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ছাড়াও দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনও পৃথকভাবে তারেক রহমানের জন্মদিন উদযাপন করবে বলে জানা গেছে।
তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসচির মধ্যে রয়েছে- আগামী ২০ নভেম্বর সারাদেশে মহানগর জেলা সদরে তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করে দোয়া ও আলোচনা সভা এবং ২৫ নভেম্বর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিউশনে আলোচনা সভা। এছাড়াও আগামী ২৫ নভেম্বর রমনার ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবনের উপর আলোচনা সভার আয়োজন করবে দলটি। আলোচনা সভায় দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়া জন্মদিন উপলক্ষে লন্ডনে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর রচিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হবে রবিবার। লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) থিয়েটার হলে এ উপলক্ষে এক অুনষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। লন্ডন সময় সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে। ডেমোক্রেটিক পলিসি ফোরাম, বাংলাদেশ এবং ইউসিএল-এর একটি গবেষক টিম এ অনুষ্ঠানের আয়োজক।
গবেষণাধর্মী নতুন বইটির নাম ‘তারেক রহমান ও বাংলাদেশ’। লেখক রয়টার্সের সাংবাদিক এম মাহাবুবুর রহমান। বইয়ের ভুমিকা লিখেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও জাতীয় অধ্যাপক ড. তালুকদার মনিরুজ্জামান। বইটি প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক বাংলা প্রকাশনী। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, গবেষক ও সাংবাদিকরা মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী ইউসিএল-এর পোস্ট ডক্টরেট ফেলো ড. রুহুল আমিন খন্দকার।
বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের পর ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যত: তারেক রহমানের ভিশন’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারে শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, আইনজীবী, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব এবং শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। বইয়ের প্রকাশক পারভেজ মল্লিক জানান, যেহেতু এটি তারেক রহমানের ওপর প্রথম মৌলিক গ্রন্থ, সেহেতু আমরা মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানটি ভিন্ন আঙ্গিকে সাজিয়েছি। এতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, গবেষক, রয়টার্স, গার্ডিয়ান সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক, অভিজ্ঞ চিকিৎসক, আইনজীবী এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, মৌলিক এ গবেষণা গ্রন্থে তারেক রহমানের রাজনৈতিক রূপরেখা ও গতিপথের ওপর এগারোটি অধ্যায় রয়েছে। শেষ অধ্যায়ে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের মূল্যায়নমূলক লেখা সংযোজন করে বইটিকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে।