কমিউনিটি স্পিরিট অব দ্যা ইয়ার এওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হলেন এমএফএ জামান

এমএফএ জামান ২০১৭ সালের দ্যা ক্যালাডরেল কমিউনিটি স্পিরিট অব দ্যা ইয়ার এ্ওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছেন। ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দ্যা কমিউনিটি ফাউন্ডেশন ফর ক্যালাডরেল, হ্যালিফেক্স ব্রিটিশ কমিউনিটিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন অর্গানাইজেশন, চ্যারিটি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের এওয়ার্ড প্রদান করবে।
লন্ডন অলিম্পিক-২০১২ এম্বেসেডর জামান ব্রিটিশ কমিউনিটিতে একজন স্বপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি হিসেবে বিভিন্ন উন্নয়ন এবং সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। ২০১৭ সালের রমজান মাসে তিনি জো কক্স এমপি ফাউন্ডেশন এন্ড ইডেন প্রজেক্টের এম্বেসেডর হিসেবে ৬১৬ মাইল হেটে ইয়র্কশায়ার থেকে লন্ডন আসেন। একমাত্র মুসলিম হিসেবে তিনি বিভিন্ন কমিউনিটি প্রজেক্ট, চ্যারিটি এবং স্থানীয় এমপি, মেয়রদের সাথে মিলিত হন। এসব এলাকার ভলান্টিয়ারদের সাথে সাক্ষাৎ এবং তাদেরকে উৎসাহ প্রদান করেন যাতে তারা এগিয়ে আসে সমাজসেবায়।
জামান বলেন, আমি রোজা রেখে ৬১৬ মাইল হাটার পাশাপাশি সবাইকে আহবান জানিয়েছি যেন আমরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজ এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারি। আর এসব উন্নয়নের পিছনে যারা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন তারা হলো ভলান্টিয়ার বা সেচ্ছাসেবক। এখানে কিছু বেতনভুক্ত কর্মচারী থাকলেও একটি কমিউনিটি প্রজেক্ট, চ্যারিটিকে এগিয়ে নিয়ে য্ওায়ার জন্য ভলান্টিয়ারদের অবদান অনস্বীকার্য। তারা বিনা পয়সায়
তাদের সময় ব্যয় এবং কাজ করে। তাই আমাদের সবার উচিত তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দেয়া এবং উৎসাহ প্রদান করা। টাকা-পয়সার মানদন্ডে জীবনে সবকিছু অর্জন করা যায়না। আমি আজ এই অবস্থানে এসেছি শুধূমাত্র আমার ভলান্টিয়ার কাজের জন্য কিন্তু আমি কখনো এই কাজের প্রতিদান আশা করিনি। শুধুমাত্র সততার সাথে আমার প্রভুকে খুশি করার জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি। আল্লাহ আমাকে সুস্থ শরীর দান করেছেন; এটি একটি বড় নিয়ামত। আল্লাহ সূরা আর-রাহমানে বলেছেন, অতএব তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে? তাই আমি মনে করি আমার এই সুস্থ শরীর দ্বারা বঞ্চিত-নিপিড়িত মানুষের সেবা করা উচিত; হোক সে কালো কিংবা সাদা অথবা মুসলিম কিংবা অমুসলিম। দৈহিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য কাজ সবোর্ত্তম উপকরণ আর ভালো কাজ মানুষকে সবসময় খারাপ কাজ-চিন্তা থেকে দূরে রাখে। একজন মানুষের সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে এই কর্মপ্রচেষ্টা।
উল্লেখ্য দ্যা গ্রেটওয়াক প্রজেক্টে অংশগ্রহণের সময় বিবিসি, আইটিভি, চ্যানেল এস সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমএফএ জামানের কাজের উপর বিশেষ সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত এমএফএ জামান ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক চ্যারিটি সংস্থা মুসলিম এইডের সেরা ভলান্টিয়ার নির্বাচিত হন। তিনি বিভিন্ন সংস্থার সাথে জড়িত। সেইফ এন্ড সেইভ এবং কমিউনিটি অব জিউস এন্ড মুসলিম এর ফাউন্ডার জামান ভলান্টিয়ার সেন্টার লুইসামের একজন ট্রাস্টি হিসেবে ৩ বছর যাবৎ দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি লন্ডন অলিম্পিক ২০১২ এ লন্ডন এম্বেসেডর এবং ২০১৫ সালের রাগবি ওয়ার্ল্ড কাপ ইংল্যান্ডের একজন ভলান্টিয়ার ছিলেন। টিম লন্ডন, নিউহাম ক্রিকেট ক্লাব, ইউনিভার্সেল পিস ফেডারেশন, নিয়ার নেইবার্স, সেন্ট জোনস এম্বুলেন্স, মেট্রোপলিটন এসেক্স ক্রিকেট এসোসিয়েশন এবং বারটস হেলথ এনএইচএস ট্রাস্টের একজন সদস্য। জামান ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ডের একজন ক্রিকেট আম্পায়ার হিসেবে বিলেতের ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে আসছেন। তিনি পঙ্গু শিশুদের সাহায্যার্থে ফান্ড রাইজিংয়ের জন্য লন্ডন ম্যারাথন ২০১৫-১৬-১৭ সহ বিভিন্ন ম্যারাথন দৌড়ে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞ তাদের নিকট যারা নিঃস্বার্থভাবে আমাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য এবং অনুপ্রাণিত করেছেন। কারণ তাদের সহযোগীতার জন্যই আজ আমি এতদূর আসতে পেরেছি। আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই আমাকে এই এওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করার জন্য। আশা করি আমি আমার ভালো কাজের মাধ্যমে এই পৃথিবীকে একটি শান্তির আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।