১০০ টাকা দেশে পাঠালে ২ টাকা প্রণোদনা পাবেন

বাজেটে প্রবাসীদের জন্য সুখবর

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত রেমিট্যান্সে এ ধরনের প্রণোদনা দেয়া হবে

বিশ্বের বিভিন্নপ্রানন্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশী। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ঘুরছে দেশের অর্থনীতির চাকা। বৈধ চ্যানেলের পাশাপাশি অবৈধ তথা হুন্ডির মাধ্যমেও বিপুল পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশে পাঠান প্রবাসীরা। তবে হুন্ডির মাধ্যমে যাতে প্রবাসীরা আর অর্থ না পাঠান সেজন্য নতুন অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়ার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের যে বাজেট তিনি উপস্থাপন করেছেন, সেখানে এ প্রস্তাব আসে। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত রেমিট্যান্সে এ ধরনের প্রণোদনা দেয়া হবে। এই বাজেট পাস হলে আগামী ১ জুলাই থেকে প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে ২ টাকা প্রণাদনা পাবেন। আর এ জন্য নতুন বাজেটে ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

বাজেট বক্তৃতায় মুস্তফা কামাল বলেন, ‘রেমিট্যান্স প্রেরণে বর্ধিত আয় লাঘব করা এবং বৈধ পথে অর্থ প্রেরণ উৎসাহিত করার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রেরিত অর্থের ওপর আগামী অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা প্রদান করা হবে।’ এর ফলে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে এবং হুন্ডি ব্যবসা নিরুৎসাহিত হবে।

এ ছাড়া প্রবাসী কর্মীদের বিমা সুবিধায় আনার কথাও বলা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য বিমা সুবিধা না থাকায় দুর্ঘটনা ও নানাবিধ কারণে প্রায়ই তাদের পরিবার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ জন্য প্রবাসী কর্মীদের বিমা সুবিধায় আনতে ২০১৯-২০২০ অর্থবছর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন অর্থমন্ত্রী।

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হল বিদেশে থাকা বাংলাদেশীদের পাঠানো অর্থ বা রেমিট্যান্স। জিডিপিতে তাদের পাঠানো অর্থের অবদান ১২ শতাংশের মত। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) মোট ১ হাজার ৫০৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে, যা গত অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।

গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ১৭ লাখ (১৪.৯৮ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা।ওই অংক ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি ছিল।

রেমিট্যান্স বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়নও (রিজার্ভ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। সর্বশেষ মে মাসে ১৭৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, তা মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button