মুসলমান ও যুক্তরাজ্যে আসন্ন সাধারণ নির্বাচন

UK Muslimসামনে ৭ মে ইউকে’তে সাধারণ নির্বাচন। যত বেশী সম্ভব ভোট কুড়ানোর লক্ষ্যে প্রচারে অবতীর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। মুসলমানদের দেশের গৃহশত্রু এবং সন্ত্রাসী তারা এখন আর আখ্যা দিচ্ছেন না। কেননা মুসলিম ভোট তাদের হাতছাড়া হবে।
ভোটাভুটি শেষ হলে পর মুসলিমদের বৈরী দৃষ্টিতে দেখার বৃটিশ মনোভাব আবার যথাপূর্ব ফিরে আসবে- পর্যবেক্ষকরা বলেন, এ ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্বের অবকাশ নেই। বৃটিশদের মুসলিম বৈরী মানসিকতা ইদানিং আরও প্রবল হচ্ছে কিছুসংখ্যক বৃটিশ মুসলিম তরুণ-তরুণীর আইএস-এ আসক্তির আলোকে।
বৃটিশ সংবাদ মাধ্যমে মুসলিম বিরোধী অপপ্রচারে বিরতি কোনো সময়েই দেখা যায়নি। অন্যদিকে বৃটিশ পররাষ্ট্র দফতর মুসলিম বিশ্বকে বরাবর বলতে চেয়েছে মুসলমানদের সম্বন্ধে কোনো বৈরী মনোভাব বৃটিশ সমাজে ও সরকারে কোনো সময়েই প্রশ্রয় পায়নি। মুসলমানদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বহাল থেকেছে বৃটেন বরাবর। ঘটনা ঘটছে কিন্তু তার বিপরীত। মুসলিমদের ওপর নজরদারি বৃটেন সব সময় চালিয়ে এসেছে। বৃটিশ সমাজ ও সরকারের মনের ভেতরের ধারণাটি হচ্ছে মুসলমানরা প্রকৃত পক্ষে হচ্ছে সন্ত্রাসী, জিহাদী ও মৌলবাদী।
যদিও প্রকাশ্যে এ কথা সরকারের তরফ থেকে বলা না হলেও বৃটিশ তথ্য মাধ্যম তা প্রচারে বরাবর তৎপর রয়েছে।
ইসলাম সন্ত্রাস ও সহিংসতার ঘোর বিরোধী- বহুদিন ধরে সর্বাধিক সংখ্যক বৃটিশ মুসলিম ঘোষণা করে এলেও বৃটিশ সংবাদ মাধ্যমে তা তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। বৃটিশ বক্সার আমীর খান একের পর এক স্কুলে গিয়ে তরুণ মুসলিম শিক্ষার্থীদের মাঝখানে প্রচার চালাচ্ছেন ইসলাম পৃথিবীতে এসেছে বিশ্বে শান্তি স্থাপনের জন্য, নৈরাজ্য ও নাশকতা সৃষ্টির জন্য নয়।
মুসলিম সমাজের সন্ত্রাসে সংযুক্ত হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। প্রসঙ্গত বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনকে খান তার জিমে আমন্ত্রিত করেন এবং তার নিজ হাতে স্বাক্ষরিত মুষ্টিযুদ্ধে ব্যবহার্য একজোড়া দস্তানা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন।
প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে বৃটিশ সমাজকে বার্তা পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে যে কবি, নাট্যকার, চিত্রশিল্পীসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত মুসলিম জনগণ সর্বাধিক সম্ভব উন্নত প্রকৃতির কর্মফলে বৃটিশ সমাজকে সমৃদ্ধি পৌঁছানোর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ সন্ত্রাস বা নাশকতা তাদের পেশা নয়। বিচ্ছিন্ন দু’চারজন মানুষ অপকর্মে জড়িত হওয়ার কারণে সামষ্টিকভাবে মুসলিম সম্প্রদায়কে অপরাধী সাব্যস্ত করা হচ্ছে বৃহত্তর সত্যের অপলাপমাত্র এবং অবশ্যই আপত্তিকর মনোভাবের পরিচায়ক। এক বৃটিশ মুসলিম কবি সম্প্রতি বলেন, উগ্র ডানপন্থী শ্বেতাঙ্গদের জীঘাংসু মুসলিম বিদ্বেষই মুসলিম তরুণদের প্ররোচিত করছে প্রতিশোধমূলক সন্ত্রাসী তৎপরতায়।
কিন্তু কে শোনে কার কথা। মুসলিম বৈরী প্রচারণায় বৃটিশ সংবাদ মাধ্যমে আজও কোনো বিরাম নেই।
মিথ্যা অভিযোগে হামলা চালিয়ে মুসলিম দেশের মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ লুটের পাশবিকতায় পোক্ত পশ্চিমা নেতৃত্ব ও তাদের পেটোয়া তথ্যমাধ্যম কোনো নীতি-ঔচিত্যের দাবি রক্ষায় নিজেদের বন্যতা-নৃশংসতা বিসর্জন দেবে- পাগলের প্রত্যাশা ছাড়া একে আর কিছু বলা যাবে না।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button